মহান বিজয়ের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশে গণতন্ত্র, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ, মানবাধিকার ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় সকলকে ময়দানে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলমীর ভারপ্রাপ্ত আমীর ও সাবেক এমপি আধ্যাপক মুজিবুর রহমান।
তিনি রাজধানীর একটি মিলনায়তনে কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসাবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তর আয়োজিত মহান বিজয় দিবসের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের ভারপ্রাপ্ত আমীর আব্দুর রহমান মূসার সভাপতিত্বে এবং কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিমের পরিচালনায় আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের নায়েবে আমীর ইঞ্জিনিয়ার গোলাম মোস্তফা এবং কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারি সেক্রেটারি মাহফুজুর রহমান প্রমূখ।
অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন, আমাদের স্বাধীনতার ৫২ বছর অতিক্রান্ত হয়েছে। কিন্তু বিভেদ ও প্রতিহিংসার রাজনীতির কারণে আজও আমরা ঐক্যবদ্ধ হতে পারিনি। জাতীয় বিভক্তি এখন চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। স্বাধীনতার ৫২ বছরের পরেও আমরা একে অন্যকে দালাল হিসাবে আখ্যায়িত করি, যা দু:খজনক।অবস্থা এমন প্রান্তিক পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, দেশে আর দালাল ছাড়া কিছুই দেখতে পাওয়া যায় না। অথচ ঐক্যবদ্ধ হতে পারলে আমরা এতোদিনে সমৃদ্ধ জাতি হিসাবে বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারতাম। মূলত, দেশে অবাধ গণতন্ত্র, শোষণমুক্ত সমাজ ও সুবিচার প্রতিষ্ঠার জন্যই আমরা যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছিলাম। কিন্তু স্বাধীনাত্তোর সময়ে গণতন্ত্রের ধ্বজাধারীরাই দেশে গণতন্ত্র হত্যা করে বাকশাল কায়েম করেছিল। তারা আবারো নতুন করে দেশে ফ্যাসীবাদী শাসন প্রতিষ্ঠায় গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। তিনি মুক্তিযুদ্ধে শাহাদাত বরণকারী সকল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন এবং তাদের মাগফিরাতের জন্য দোওয়া করেন।
তিনি বলেন, বিজয় কখনো বিজয়ী শক্তিকে প্রতিহিংসা পরায়ন করে তোলে না বরং জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে দেশকে পুনঃর্গঠন করা তাদের দায়িত্ব হয়ে যায়। মক্কা বিজয়ে পর মহানবী (সা.) কোন প্রতিশোধ গ্রহণ করেন নি বরং সকলকে ক্ষমা করে দিয়ে দিয়ে মক্কাকে একটি উন্নয়নের মডেলে পরিণত করেছিলেন। আর কোন বিজয়ে বাড়ীবাড়ী করার কোন সুযোগ নেই বরং বিজয়ে অধিক উল্লসিত না হয়ে আল্লাহ তায়ালার তসবীহ পাঠ, পবিত্রতা বর্ণনা, সকলকে ক্ষমা এবং তাওবা ইস্তিগফার পরায় বিজয়ীদের কাজ।
তিনি ফিলিস্তিন ও গাজার যুদ্ধের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, বর্বর জায়নবাদীরা ফিলিস্তিনের গাজায় নির্মম হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছে। কিন্তু এ যুদ্ধে তাদের পরাজয় অনিবার্য। মুসলমানরাই এই যুদ্ধে বিজয়ী হবেন-ইনশাআল্লাহ। সুরা বনী ইসরাইলী আল্লাহ মুসলমানদের এমন সুসংবাদই দিয়েছেন। তিনি মজলুম ফিলিস্তিনীদের পক্ষে সব ধরনের জনমত গঠনে কার্যকর ভূমিকা রাখতে সকলের প্রতি আবহান জানান।
সভাপতির বক্তব্যে আব্দুর রহমান মূসা বলেন, দেশে গণতন্ত্রের নামে তামাশাতন্ত্র চলছে। অবাধ গণতন্ত্র, সাম্য ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম চেতনা হলেও সরকার এসব পরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করে দিয়ে দেশকে মাফিয়া রাষ্ট্রে পরিণত করেছে। তাই এই মাফিয়া সরকারের হাত থেকে দেশ ও জাতিকে বাঁচাতে সকলকে রাজপথে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার কোন বিকল্প নেই।