চলমান অবরোধ কর্মসূচিতে পুলিশের বাধাদান এবং হামলা-মামলা ও গ্রেফতারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ এবং ৯ নভেম্বর বৃহস্পতিবার অবরোধ কর্মসূচি সুশৃঙ্খল ও শান্তিপূর্ণভাবে সফল করে তোলার আহ্বান জানিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মা’ছুম ৮ নভেম্বর এক বিবৃতি প্রদান করেছেন।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, “জালিম সরকারের পদত্যাগ, নির্বাচনকালীন কেয়ারটেকার সরকার গঠন, আমীরে জামায়াত ডা: শফিকুর রহমানসহ সকল রাজবন্দির মুক্তি, মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং দ্রব্যমূল্য মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে নিয়ে আসার দাবিতে সরকার বিরোধী চলমান আন্দোলন অব্যাহত রয়েছে। বিরোধীদলের শীর্ষস্থানীয় নেতাবৃন্দসহ অসংখ্য নেতাকর্মীকে সরকার গ্রেফতার করে মিথ্যা ও সাজানো মামলা দিয়ে জেলে আবদ্ধ করে রেখেছে এবং গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার চলমান আন্দোলন দমন করার লক্ষ্যে নানা ষড়যন্ত্র ও কূটকৌশল নিয়ে অগ্রসর হচ্ছে। জাতিসংঘসহ বিশ্বের সকল মানবাধিকার সংস্থা বাংলাদেশে গণগ্রেফতার নিয়ে বারবার উদ্বেগ প্রকাশ করছে। দেশের জনপ্রিয় এবং মেইনস্ট্রিম বিরোধী দলগুলোকে পাশ কাটিয়ে সরকার গৃহপালিত ও নামকাওয়াস্তে বিরোধী দল তৈরি করে নির্বাচনী বৈতরণী পার করার অশুভ চক্রান্তে মেতে উঠেছে। জনগণ সরকারকে গণতন্ত্রের নামে তামাশা করার কোনো সুযোগ দিবে না।
জামায়াতসহ বিরোধীদলের ডাকে তৃতীয় দফার চলমান অবরোধ কর্মসূচি বাধাগ্রস্ত করতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং সরকারের সন্ত্রাসীরা দেশের বিভিন্ন স্থানে হামলা চালিয়েছে। গাড়ী ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও নৈরাজ্য সৃষ্টি করে তার দায়ভার বিরোধী দলের উপর চাপাচ্ছে। সরকার পুলিশের মাধ্যমে বল প্রয়োগের অশুভ নীতি গ্রহণ করেছে, যা দেশ, জাতি ও গণতন্ত্রের জন্য হুমকি। ৮ নভেম্বর সকাল ১০টার দিকে নোয়াখালী জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মাওলানা নিজাম উদ্দিন ফারুক ও একই দিন সন্ধ্যায় সিলেট মহানগর জামায়াতের ১০ নং ওয়ার্ড সেক্রেটারি মিনার আহমাদকে পুলিশ উদ্দেশ্যমূলকভাবে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়। গত ৪৮ ঘণ্টায় সারাদেশে জামায়াতে ইসলামী এবং এর শাখা সংগঠনের ১৩১ জন নেতাকর্মীকে বেআইনিভাবে গ্রেফতার করা হয়েছে। বুধবার সকালে বগুড়ার দ্বিতীয় বাইপাস সড়কের সাবগ্রাম এবং বগুড়া-রংপুর মহাসড়কের বাঘোপাড়া এলাকায় রাবার বুলেট ও টিয়ারসেল নিক্ষেপ করে জামায়াতের ১০ জন নেতাকর্মীকে পুলিশ মারাত্মকভাবে জখম করেছে। দেশব্যাপী নৈরাজ্যজনক ও অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হয়েছে।
আমি সরকারের এইসব জুলুম-নির্যাতন ও গ্রেফতার-হয়রানির তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং গ্রেফতারকৃত নেতাকর্মীদের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করছি।
অবিলম্বে পদত্যাগ করে নির্দলীয়-নিরপেক্ষ কেয়ারটেকার সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে দেশে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পথ সুগম করার জন্য আমি সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। সেই সাথে দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থে ৯ নভেম্বর বৃহস্পতিবার দেশব্যাপী অবরোধ কর্মসূচি সুশৃঙ্খল ও শান্তিপূর্ণভাবে সফল করে তোলার জন্য আমি জামায়াতে ইসলামীসহ বিরোধীদলের সর্বস্তরের নেতাকর্মী এবং সংগ্রামী জনতার প্রতি উদাত্ত আহবান জানাচ্ছি।”
কুষ্টিয়া জেলা জামায়াত অফিস ভাঙচুর
অপর এক বিবৃতিতে মাওলানা এটিএম মা’ছুম বলেন, ৮ নভেম্বর বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টার সময় কুষ্টিয়া জেলা জামায়াত অফিসে হানা দিয়ে জেলা সহকারী সেক্রেটারি খাইরুল ইসলাম রবিন ও অফিস সহকারী আব্দুর রবকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়। এ সময় অফিসের মূল্যবান জিনিসপত্র ভাঙচুর ও তছনছ করা হয় এবং ১টি কম্পিউটার, প্রিন্টার, সাউন্ড সিস্টেম, একটি প্রজেক্টর এবং বেশ কিছু ফাইলপত্র ও কুরআন-হাদিস, ইসলামী সাহিত্য এবং কয়েকটি চেয়ার-টেবিল জব্দ করে নিয়ে গেছে। এভাবে হামলা করে জুলুম-নির্যাতন চালিয়ে ও গ্রেফতার করে কেয়ারটেকার সরকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন দমন করা যাবে না। আমি সরকারের এই জুলুম-নির্যাতন ও গ্রেফতারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং খাইরুল ইসলাম রবিন ও আবদুর রবের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করছি।