বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের এক সভা ভারপ্রাপ্ত আমীর ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় দেশে বিরাজমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, বিরোধী দলের সভা-সমাবেশ ও কর্মসূচিতে বাধা প্রদান এবং হামলার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে নিম্নোক্ত প্রস্তাব গৃহীত হয়।
“আর মাত্র ৫ মাস পর জাতীয় সংসদ নির্বাচন। সরকার জনগণের দাবী কেয়ারটেকার সরকার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে দেশে সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের পরিবেশ তৈরীর পরিবর্তে দেশের রাজনীতিকে সংঘাত ও সংঘর্ষের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। সরকার বিরোধী দলকে কথা বলতে দিচ্ছে না। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সিলেট মহানগরী শাখা ও চট্টগ্রাম মহানগরী শাখা শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশের জন্য সহযোগিতা কামনা করে প্রশাসনের নিকট আবেদন করে। কিন্তু সরকার রাজনৈতিক দলের সাংবিধানিক অধিকারের প্রতি অবজ্ঞা প্রদর্শন করে সিলেট মহানগরীর ১৫ জুলাই এর সমাবেশ করতে দেওয়া হবেনা মর্মে ঘোষণা দেয় এবং ৭ জন নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করে মিথ্যা মামলা দিয়ে কারাগারে প্রেরণ করে। চট্টগ্রাম মহানগরীর পুলিশ প্রশাসন জামায়াতকে ২২ জুলাইয়ের সমাবেশ করতে না দেওয়ার কথা গণমাধ্যমে প্রচার করে। পুলিশ চট্টগ্রাম মহানগরীতে জামায়াতের নেতা কর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে হানা দিয়ে হয়রানি করছে এবং গ্রেফতার অভিযান পরিচালনা করছে।
কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ লক্ষ্য করছে যে, ১৭ জুলাই গুলশান আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা প্রতিদ্ব›দ্বী একজন প্রার্থীর ওপর হামলা চালিয়ে তাঁকে মারাত্মকভাবে আহত করেছে। জাতীয় নির্বাচনের পূর্ব মুহূর্তে উপনির্বাচনে বিরোধী প্রার্থীর উপর হামলা, সমাবেশে বাধা দান ও বিরোধী দলকে কথা বলতে না দেওয়ায় প্রমাণিত হয় এ সরকারের অধীনে নির্বাচন কিছুতেই শান্তিপূর্ণ হতে পারে না। ১৭ জুলাইয়ের উপনির্বাচনে মাত্র ১১ শতাংশ ভোট কাস্ট হয়েছে। এ থেকে বুঝা যায় জনগণ আওয়ামী সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করতে রাজী নয়। ১৮ জুলাই মঙ্গলবার বিএনপির পূর্ব ঘোষিত পদযাত্রা কর্মসূচি চলাকালে আওয়ামীলীগ ও ছাত্রলীগ ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে হামলা চালায়। কেন্দ্রীয় নির্বাহ পরিষদ এসব ন্যক্কারজনক ঘটনার তীব্র নিন্দা এ প্রতিবাদ জানাচ্ছে। সরকারে ভূমিকায় প্রতীয়মান হয়েছে যে, সরকার বিরোধী রাজনৈতিক দলের ওপর হামলা ও জুলুম-নির্যাতন চালিয়ে দেশকে সংঘর্ষের দিকে নিয়ে যেতে চায় এবং ২০১৪ এ ২০১৮ সালের স্টাইলে নির্বাচনের নামে প্রহসনের আয়োজন করে আবারো ক্ষমতায় আসতে চায়।
জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের অভিমত হচ্ছে, কেয়ারটেকার সরকার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে জনগণের ভোটাধিকার পুনর্বহাল ব্যতীত জনগণ দলীয় সরকারের অধীনে কোনো প্রহসনের নির্বাচন মেনে নিবে না।
কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ অবিলম্বে সংঘাত-সংঘর্ষ ও ষড়যন্ত্রের পথ পরিহার করে কেয়ারটেকার সরকার প্রতিষ্ঠা করে সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা ও জামায়াতে ইসলামীসহ বিরোধীদলকে শান্তিপূর্ণ সভা-সমাবেশ করার অধিকার নিশ্চিত করার জন্য সরকারের প্রতি আহবান জানাচ্ছে।”