সকল মামলায় জামিন প্রাপ্ত বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ারকে মুক্তি দেয়ার জন্য ১৫ জুন বৃহস্পতিবার আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবীদের পক্ষ থেকে এ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ বক্তব্য রাখেন। দেশবাসীর উদ্দেশে তাঁর বক্তব্য নিচে তুলে ধরা হলো।
“প্রিয় সাংবাদিক বন্ধুগণ, আস্সালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ।
আপনারা জানেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার ২০২১ সালের ৬ সেপ্টেম্বর সংগঠনের একটি ঘরোয়া বৈঠক থেকে গ্রেফতার হন। পরদিন ৭ সেপ্টেম্বর তাঁকে আদালতে হাজির করে প্রথমে ৪ দিন ও পরে আরো ২ দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়। তিনি ৮ নভেম্বর উচ্চ আদালত থেকে জামিন প্রাপ্ত হন। সরকার তাঁর জামিনের বিরুদ্ধে আপিল করলে আপিল বিভাগ তাঁর জামিন বহাল রাখেন। ২০২২ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি তিনি জেল থেকে বের হওয়ার পূর্ব মুহূর্তে আরেকটি মিথ্যা মামলা দিয়ে তাঁকে ৩ দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়। ২০২২ সালের ২৪ এপ্রিল তিনি উচ্চ আদালত থেকে ফের জামিন লাভ করেন। সরকার পুনরায় তাঁর জামিন বাতিলের জন্য আপিল করলে দেশের সর্বোচ্চ আদালত সরকারের আবেদন খারিজ করে দেন। তিনি জেলখানা থেকে বের হওয়ার পূর্বে আবারো তাঁর বিরুদ্ধে দুদকের কথিত অভিযোগের ভিত্তিতে ২০২২ সালের ৩০ মে একটি মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়। উক্ত মামলায়ও তিনি এ বছরের ৩০ মার্চ হাইকোর্ট থেকে জামিন প্রাপ্ত হন। এবারো সরকার পক্ষ আপিল করলে চেম্বার জজ তা খারিজ করে দেন। তিনি পরপর তিনবার দেশের সর্বোচ্চ আদালত থেকে জামিন লাভ করে সর্বশেষ পবিত্র মাহে রমাদানে কারাগার থেকে বের হওয়ার প্রাক্কালে ১৬ এপ্রিল ২০২৩ পবিত্র ঈদুল ফিতরের পূর্ব মুহূর্তে আবারো তাঁকে একটি মিথ্যা মামলায় যুক্ত করে গ্রেফতার দেখানোর আবেদন করা হয়। ২৭ এপ্রিল তাঁকে আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়। আদালত পরবর্তীতে শুনানী শেষে ১ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
প্রিয় সাংবাদিক বন্ধুগণ,
২৯ মে তিনি উচ্চ আদালত থেকে আবারো জামিনপ্রাপ্ত হন। এর মাধ্যমে অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার দেশের সর্বোচ্চ আদালত থেকে সকল মামলায় জামিন প্রাপ্ত হলেন। ১৩ জুন তাঁর জামিন নামা দাখিল করা হয়। ঠিক এই মুহূর্তে তাঁর বিরুদ্ধে আর কোনো মামলা নেই। সুতরাং কারা কর্তৃপক্ষ কোনো অবস্থাতেই তাঁকে আটক রাখতে পারেন না। জামিন নামা দাখিল হওয়া মাত্র কারাকর্তৃপক্ষ তাঁকে মুক্ত করে দিবেন, এটাই স্বাভাবিক। অধিকন্তু দেশের সর্বোচ্চ আদালত ১৭/৫/২০২২ তারিখে তাঁকে গ্রেফতার ও হয়রানি না করার নির্দেশ দিয়েছেন। আদালতের এই নির্দেশনা থাকার পর তাঁকে মুক্তি না দেয়া কিংবা গ্রেফতার বা হয়রানি করা সম্পূর্ণ আদালত অবমাননার শামিল।
আমরা জানতে পারলাম ১৩ জুন ডিএমপির পল্টন মডেল থানা ২৫/৪/২০২১ তারিখের ২৮ নং মামলায় তাঁকে গ্রেফতার দেখানোর জন্য বিজ্ঞ আদালত বরাবর আবেদন করেছে। এই মামলাটিতে তাঁকে এখন পর্যন্ত গ্রেফতার দেখানো হয়নি। গ্রেফতার দেখানো হবে কি না তা ১৯ জুন শুনানী হবে মর্মে বলা হয়েছে। যেহেতু অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ারের বিরুদ্ধে এখন কোনো মামলা নেই, সেহেতু তাঁকে আটক রাখা সম্পূর্ণ বেআইনী ও উচ্চ আদালতের নির্দেশের পরিপন্থী। আমরা এই পরিস্থিতিতে অবিলম্বে অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়াকে মুক্তি দিয়ে দেশের আইন, সংবিধান ও উচ্চ আদালতের নির্দেশনার প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শনের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।
পরিশেষে আপনাদের সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি ।”