বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত আমীর অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেছেন, ঐতিহাসিক বদর যুদ্ধ ইসলামী আন্দোলনের গতিপথই ঘুরে দিয়েছিলো। এই যুদ্ধে মুসলিম বাহিনী স্বল্পশক্তি নিয়ে বিশাল কাফির বাহিনীকে মোকাবেলা করে বিজয় অর্জন করেছিল এবং সে বিজয়ের সূত্র ধরেই ইসলাম এক অপ্রতিরোধ্য শক্তিতে পরিণত হয়েছিল। তাই আমাদেরকে বদরের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে দ্বীন প্রতিষ্ঠার প্রত্যয়ে অবিচল থাকতে হবে। তিনি সরকারের জুলুম-নির্যাতন উপেক্ষা করে নির্বাচনকালীন কেয়ারটেকার গণদাবি আদায়ে ময়দানে সকলকে ইস্পাৎ কঠিন ঐক্য গড়ে তোলার আহবান জানান।
তিনি আজ রাজধানীতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তর আয়োজিত ঐতিহাসিক বদর দিবসের ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের ভারপ্রাপ্ত আমীর আব্দুর রহমান মূসার সভাপতিত্বে এবং কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিমের পরিচালনায় আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের নায়েবে আমীর ইঞ্জিনিয়ার গোলাম মোস্তফা, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারি সেক্রেটারি মাহফুজুর রহমান, নাজিম উদ্দীন মোল্লা ও ডা. ফখরুদ্দীন মানিক প্রমূখ।
অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন, পবিত্র রমজান মাসেই সত্যমিথ্যার পার্থক্যকারী ফোরকান তথা কালামে হাকীম নাযিল করা হয়েছে বিশ্বমানবতার মুক্তির সনদ হিসাবে। আর এই মাসেই ঐতিহাসিক বদর যুদ্ধে মুসলমানদের বিজয় দানের মাধ্যমে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন ইসলাম ও মুসলমানদের মর্যাদা সমুন্নত করেছিলেন। মূলত, বদর যুদ্ধই ছিলো ইসলামের জয়-পরাজয়ের নীতিনির্ধারিত যুদ্ধ ও টার্নিং পয়েন্ট। আর এ মাসেই রয়েছে মহামহিমান্বিত রাত পবিত্র লাইলাতুল ক্বদর। আর এ রাত হচ্ছে হাজার রাত অপেক্ষা উত্তম। কিন্তু এই মোবারক মাসেও জালিম সরকার আমাদের ওপর জুলুম-নির্যাতন অব্যাহত রেখেছে। ইফতাররত অবস্থায় মহানগরী উত্তর আমীর সেলিম উদ্দিনকে গ্রেফতার করে নির্যাতন চালানো হচ্ছে। আমীর জামায়াত ডা. শফিকুর রহমানসহ শীর্ষনেতৃবৃন্দ এখনো জালিমের কারাগারে আটক রয়েছেন। তিনি সরকারকে জুলুম-নির্যাতনের পথ পরিহার করে আসন্ন ঈদের আগে ডা. শফিকুর রহমান ও সেলিম উদ্দিন সহ সকল রাজবন্দীর মুক্তি দেওয়ার জন্য আহবান জানান।
তিনি বলেন, যুগে যুগে কুফরী শক্তি আল্লাহর নূরকে নিভিয়ে দেয়ার ষড়যন্ত্র করে এসেছে। কিন্তু সে ষড়যন্ত্রে তারা কখনোই সফল হয়নি। আর আল্লাহ তা’য়ালা তার দ্বীন বিজয়ী করার তথা সমুন্নত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তাই দ্বীনের বিজয় একটি একটি অনিবার্য পরিণতি। আর তা রোধ করার শক্তি কারো নেই। মূলত, দ্বীনে হক্ব এসেছে বাতিল বিজয়ী হওয়ার জন্য, আর বাতিল এসেছে পরাজিত হওয়ার জন্য। তাই চলমান রাষ্ট্রীয় জুলুম-জুলুম, নিপীড়ন-নির্যাতনে হতোদ্যম হলে চলবে না বরং সকল বাধা-প্রতিবন্ধকতা উপেক্ষা করেই ইসলামী আন্দোলনে ইপ্সিত লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য প্রাণান্তকর প্রচেষ্টা চালাতে হবে। এক্ষেত্রে সংখ্যা ও শক্তি মূখ্য নয় বরং গুণগত যোগ্যতা বৃদ্ধির মাধ্যমে সার্বিক পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে হবে। কায়েম করতে হবে আল্লাহর সার্বভৌমত্ব। তিনি বদরের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে বাংলাদেশকে ইসলামী রাষ্ট্রে পরিণত সর্বাত্মক সংগ্রামে অবতীর্ণ হওয়ার জন্য সকলের প্রতি আহবান জানান।
ইঞ্জিনিয়ার গোলাম মোস্তফা বলেন, বদর যুদ্ধ সত্য-মিথ্যার পার্থক্যকারী যুদ্ধ। এই ঐতিহাসিক যুদ্ধে মুসলমানদের বিজয়ের মাধ্যমে ইসলামের বিজয়ের শুভ সূচনা হয়েছিল। তাই আমাদেরকে বদরের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে দ্বীন প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে আব্দুর রহমান মূসা বলেন, পবিত্র রমজান মাসের ১৭ তারিখ বদর যুদ্ধ অনুষ্ঠিত হয়েছিল। আর এই মাসেরই রয়েছে মহিমান্বিত ক্বদরের রাত। তাই বদরের শিক্ষায় উদ্বুদ্ধ হয়ে দ্বীন বিজয়ের প্রত্যয়ে সকলকে ময়দানে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। তিনি ঈদের আগেই মহানগরী আমীর মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিনের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেন।