বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার এক বৈঠক সংগঠনের আমীর ডা. শফিকুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় দেশে দ্রব্যমূল্যের অব্যাহত ঊর্ধ্বগতির ফলে সৃষ্ট জনদুর্ভোগে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করে জনগণের ক্রয়ক্ষমতার আওতায় আনার লক্ষ্যে নিম্নোক্ত প্রস্তাব গৃহীত হয়।
“বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা গভীর উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছে যে, বর্তমান সরকারের গত ১৪ বছরের শাসনামলে দ্রব্যমূল্যের অব্যাহত ঊর্ধ্বগতিতে তা এক ভয়াবহ রূপ লাভ করেছে। কোনো কোনো দ্রব্যের মূল্য ৪ থেকে ৫ গুণ পর্যন্ত বেড়েছে। সরকার ওয়াদা করেছিল ১০ টাকা কেজি দরে চাল ও বিনা মূল্যে সার সরবরাহ করবে। সেই চালের মূল্য আজ ৭০/৮০ টাকা কেজি। বিনা মূল্যে সার তো দূরের কথা, সারের মূল্য বৃদ্ধির কারণে কৃষকরা জমিতে সার প্রদান করতে পারছে না। ফলে ফসল উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে।
সরকার বলে আসছিল, তারা দেশে ব্যাপক বিদ্যুৎ উৎপাদন করেছে। কিন্তু বাস্তববতা হল আজ দেশে বিদ্যুতের ভয়াবহ সংকট বিরাজ করছে। বিদ্যুৎ সংকটের কারণে কৃষি, শিল্প ও গার্মেন্টস খাতে ব্যাপক অরাজকতা সৃষ্টি হয়েছে। লোডশেডিং এর ফলে একদিকে যেমন জনদুর্ভোগ বেড়েছে, অপরদিকে তেমনি উৎপাদনও ব্যাহত হচ্ছে। সরকার বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ানোর জন্য কার্যকরী কোনো পদক্ষেপ নিতে পারেনি। কুইক রেন্টাল পদ্ধতিতে বিদ্যুৎ উৎপাদনের নামে জনগণের হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট করা হয়েছে।
করোনা ভাইরাস উত্তর অর্থনীতি মোকাবেলায় সরকার কার্যকরী কোনো পদক্ষেপ নিতে পারেনি। বিভিন্ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের প্রদত্ত তথ্যানুযায়ী দেশে প্রায় অতিরিক্ত প্রায় ৩ কোটি মানুষ দারিদ্রসীমার নিচে চলে গিয়েছে। সরকার দেশে কর্মোপযোগী জনশক্তির জন্য কর্মসংস্থানের কোনো পদক্ষেপই নিতে পারেনি সরকার। দুর্নীতি, অর্থপাচার ও নিজেরা আখের গোছানোর কাজে ব্যস্ত থাকা ও বাজার সিন্ডিকেটের কারণে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য লাগামহীনভাবে বৃদ্ধি পেয়ে তা জনগণের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গিয়েছে। বিশেষ করে চাল, ডাল, তেল, লবণ, মরিচ, চিনি, দুধ, পেঁয়াজ, রসূন, শাকসবজি, মাছ-গোশত থেকে শুরু করে নিত্যপ্রয়োজনীয় ও অপরিহার্য পণ্যের মূল্য অস্বাভাবিক গতিতে বেড়েছে। সরকার পানি, গ্যাস, বিদ্যুৎ, জ্বালানি তেল, কৃষি উপকরণ ও ভোজ্য তেলের মুল্য দফায় দফায় বৃদ্ধি করে জনগণকে আরো ভোগান্তির মাঝে ফেলেছে।
কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা মনে করে, এই সরকার জনগণের নির্বাচিত সরকার নয়। তাই জনগণের নিকট তাদের কোনো জবাবদিহিতা ও দায়বদ্ধতা নেই। সরকার ব্যস্ত বিরোধী দলকে দমন-পীড়নের কাজে। কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা জনদুর্ভোগ লাঘবে অবিলম্বে দ্রব্যমূল্য জনগণের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে নিয়ে আসার আহŸান জানাচ্ছে।”