বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে নীলফামারী জেলার ডিমলা ও জলঢাকা উপজেলা, লালমনিরহাট জেলার আদিতমারী উপজেলা, কুড়িগ্রাম জেলার ফুলবাড়ি ও রাজারহাটে এবং রংপুর জেলার কাওনিয়াসহ ৪টি পৃথক পৃথক স্থানে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের বাড়ি-ঘর সংস্কার বা মেরামতে সহায়তা প্রদান কার্যক্রম উদ্বোধন করেন আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমান। বন্যা ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় পুনর্বাসন কার্যক্রমের আওতায় জামায়াতের চলমান কর্মসূচীর অংশ হিসেবে এই গৃহনির্মাণ সামগ্রী বিতরণ করা হয়।
১৮ জুলাই সোমবার উল্লিখিত ৪টি জেলার পৃথক পৃথক ৪টি স্থানে গৃহনির্মাণ সামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমান বেশ কয়েকটি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মাঝে বাড়ি সংস্কার বাবদ ঢেউটিনসহ প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র প্রদান করেন।
এসব স্থানে ডা. শফিকুর রহমান তাঁর বক্তব্যে বলেন, “আমীরে জামায়াত হিসেবে নয় বরং আমি আপনাদের একজন ভাই হিসেবে এসেছি। আন্তরিক প্রচেষ্টা থাকা সত্তে¡ও একই সময়ে সব স্থানে যাওয়া আমার পক্ষে সম্ভব হয়নি। এ জন্য আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত। তবে আপনাদের খোঁজ-খবর আমি সবসময় স্থানীয় নেতৃবৃন্দের মাধ্যমে নিয়েছি। আমাদের চেষ্টার কোনো ত্রুটি ছিল না, কিন্তু আমাদের উপকরণের সীমাবদ্ধতা ছিল। এজন্য আমরা সবার কাছে যথাসময়ে পৌঁছাতে পারিনি। আশা করি মহান আল্লাহ আমাদেরকে ক্ষমা করবেন। আমাদের যতটুকু সাধ্য ছিল, সর্বোচ্চ সামর্থ্য নিয়ে আমরা মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছি।
তিনি আরো বলেন, মহান আল্লাহ যাকে পছন্দ করেন, তাকে দিয়েই মানবতার কাজে সহযোগিতা করেন। আমরা বিশ্বাস করি প্রতি মুহূর্তে আল্লাহ তা’য়ালার সাহায্য আমরা পাচ্ছি। এ জন্য মহান রবের দরবারে বিগলিত চিত্তে শুকরিয়া আদায় করি।
তিনি বলেন, মানুষের মাঝে খাদ্য সরবরাহ করা যত সহজ, পুনর্বাসন করা তত সহজ নয়। আমাদের মাঝে কোনো হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান- সাঁওতাল, রাজনৈতিক দলের কোনো ব্যবধান নেই; সবার আগে মানবতা। এই মানবিক পরিস্থিতিতে যিনি সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত, তিনি সবার আগে আমাদের সহযোগিতা পাবেন। মানুষকে সম্মান ও ইজ্জত দেয়া প্রত্যেক মুমিনের উপর অবধারিত। এটি তাঁর জন্য ফরজ। তাই আমরা আহবান জানাব- আসুন, মানবতার এই কঠিন ক্রান্তিকালে জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে অসহায় মানুষগুলোর পাশে দাঁড়াই।
আমীরে জামায়াত আরো বলেন, ভাই হিসেবে আপনাদের জন্য আমি সামান্য উপহার নিয়ে এসেছি। আজ কিছু ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে এই উপহার সামগ্রী দেয়া হচ্ছে। আগামীতে ক্ষতিগ্রস্ত সকল পরিবারকে পর্যায়ক্রমে আরো পুনর্বাসন সহযোগিতা দেয়া হবে ইনশাআল্লাহ।”
এসব অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ও রংপুর-দিনাজপুর অঞ্চল পরিচালক মাওলানা আবদুল হালিম, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও রংপুর-দিনাজপুর অঞ্চল টীম সদস্য অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বেলাল, নীলফামারী জেলা আমীর জনাব আবদুর রশিদ, নায়েবে আমীর ড. জসিম উদ্দিন ও সেক্রেটারি অধ্যক্ষ আবদুস সাত্তার, লালমনিরহাট জেলা আমীর প্রভাষক আতাউর রহমান, নায়েবে আমীর মাওলানা হাবিবুর রহমান ও সেক্রেটারি এ্যাডভোকেট আবু তাহের, আদিতমারী উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান এ্যাড. ফিরোজ হায়দার লাভলু, কুড়িগ্রাম জেলা আমীর মাওলানা আবদুল মতিন ফারুকী ও সেক্রেটারি মাওলানা নিজাম উদ্দিন, সহকারী সেক্রেটারি যথাক্রমে মাওলাানা আবদুল হামিদ ও শাহজালাল সবুজ এবং রংপুর মহানগর আমীর মাওলানা এটিএম আজম খান ও রংপুর জেলা সেক্রেটারি মাওলানা এনামুল হকসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও জামায়াত নেতৃবৃন্দ।