আমীরে জামায়াত

2022-06-26

সুনামগঞ্জ জেলায় বন্যার্তদের মাঝে আমীরে জামায়াতের খাদ্য ও উপহার সামগ্রী বিতরণ

আমরা আল্লাহর ভয় ও মানুষের মহব্বতে আর্ত-মানবতার সেবায় কাজ করে যাচ্ছি

-ডা. শফিকুর রহমান

স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত সুনামগঞ্জের বন্যার্ত মানুষের মাঝে খাদ্য ও উপহার সামগ্রী বিতরণ করেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান। তিনি ২৬ জুন সুনামগঞ্জ জেলার ছাতক উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়ন, দোয়ারা বাজার উপজেলার সদর ইউনিয়ন ও মান্নারগাঁও ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেন এবং বন্যা কবলিত মানুষের মাঝে খাদ্য ও উপহার সামগ্রী বিতরণকালে উপরোক্ত কথা বলেন।

আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমান আরো বলেন, “আজ আমরা আপনাদের ত্রাণ দিতে আসিনি। আমরা এসেছি সহমর্মিতা ও ভালবাসা নিয়ে। আমাদের উচিত ছিল আপনাদের সকলের ঘরে ঘরে গিয়ে খোঁজ-খবর নেয়া। কিন্তু সময় স্বল্পতার কারণে তা সম্ভব হচ্ছে না। এ জন্য আমরা দুঃখিত। আপনাদের প্রতি জামায়াতে ইসলামীর কিছু দায়িত্ব আছে। সেই দায়িত্ববোধ থেকেই আমরা আপনাদের কাছে এসেছি।

তিনি বলেন, কোনো ব্যক্তি বা সংগঠনের পক্ষে ব্যাপকভাবে মানুষের পাশে দাঁড়ানো সম্ভব নয়। কিন্তু সরকারের পক্ষে সম্ভব। তাই সরকারের উচিত ছিল এই ভয়াবহ বন্যায় ব্যাপকভাবে মানুষের পাশে দাঁড়ানো। কিন্তু সরকার সেই দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছে। সরকারের ভাব দেখে মনে হচ্ছে দেশের মানুষের প্রতি তাদের কোনো দায়বদ্ধতা নেই। তারা ব্যস্ত রয়েছে নিজেদের পকেট ভারী করার কাজে। মানুষের প্রতি যে সরকারের দায়িত্ব রয়েছে তা বুঝার তাওফীক আল্লাহ তাদেরকে দান করুন।

তিনি বলেন, আমরা আপনাদের জন্য যা নিয়ে এসেছি, এগুলো ত্রাণ নয়। এগুলো হলো এক ভাইয়ের দুঃখ-কষ্টে আরেক ভাইয়ের উপহার। এগুলোকে ত্রাণ বলে আমরা মানুষকে অসম্মান করতে চাই না। এই সামান্য উপহার দিয়ে আপনাদের সকল সমস্যার সমাধান হবে না। কিন্তু আমাদের আত্মা কিছুটা হলেও শান্তি পাবে। বন্যার পানি কিছু কমার পর থেকে আমরা অনেক লাশ দেখতে পাচ্ছি। এ দৃশ্য দেখে যার যা আছে তাই নিয়েই মানুষের পাশে দাঁড়ানো উচিত। কিন্তু এ লাশগুলো দেখেও যাদের মন গলে না তারা মানুষ নয়।

তিনি আরো বলেন, আমরা এখানে রাজনীতি করার জন্য আসিনি। আমরা এসেছি মানবতার প্রতি আমাদের ভালবাসার দায়বদ্ধতা থেকে। তিনি বলেন, হে আল্লাহ! আমরা তোমার গুনাহগার বান্দা। আমাদের মাফ করে দাও। আমাদের ভুলের কারণেই তুমি আমাদের এই বিপদ দিয়েছ। আমাদেরকে মাফ করে দিয়ে এই বালা-মুসিবত আমাদের মাথার উপর থেকে সরিয়ে দাও। আসমানী বালা আসমানে তুলে নাও, জমিনের বালা জমিনে ডুবিয়ে দাও। মানুষের জীবন-যাত্রা স্বাভাবিক করে দাও। তিনি উপস্থিত বৃদ্ধ, অসহায় দুর্বল মানুষদের উদ্দেশ্যে কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, আপনাদের এখানে ডেকে এনে আমরা আপনাদের কষ্ট দিয়েছি। আল্লাহর ওয়াস্তে আমাদের ক্ষমা করে দিবেন।”

এ সময় আমীরে জামায়াতের সাথে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় ত্রাণ কমিটির রংপুর অঞ্চলের সমন্বয়ক ও জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারী জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর জনাব নূরুল ইসলাম বুলবুল, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর জনাব মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন, কেন্দ্রীয় ত্রাণ কমিটির সিলেট অঞ্চলের সমন্বয়ক ও জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারী জেনারেল এডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও সুনামগঞ্জ জেলা আমীর মাওলানা তোফায়েল আহমেদ খান, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারী সেক্রেটারি যথাক্রমে জনাব লস্কর মোঃ তাসলিম, জনাব মাহফুজুর রহমান ও ডা. ফখরুদ্দিন মানিকসহ ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ ও ঢাকা মহানগরী উত্তর এবং সুনামগঞ্জ জেলার বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।