আমীরে জামায়াত

2022-05-04

ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ জামায়াতের ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে আমীরে জামায়াত

সত্যের দাওয়াত সবখানে পৌঁছানো আমাদের নৈতিক দায়িত্ব

-ডা. শফিকুর রহমান

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ জামায়াতকে ইসলামী আন্দোলনের মদিনা হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। জামায়াতের একজন কর্মী হিসেবে আমাদের আল্লাহর কাছে দোয়া করতে হবে, তিনি যেন সবার প্রতি আমার অন্তরকে প্রশস্ত করে দেন, আমার কথা ও আহবান গুলো যেন সকল কঠিন হৃদয়ের মানুষের কর্ণকুহরেও পৌঁছিয়ে দেন। দ্বীন ইসলাম বিরোধী একজন মানুষের দুঃখ ও কষ্টে আনন্দিত হওয়ার কিছু নেই। আল্লাহ তায়ালা মুমিন হিসেবে আমাকে যে মানবিক চরিত্র দিয়েছেন তা দিয়ে মানুষকে মূল্যায়ন করতে হবে। মানবতার প্রতি আমাদের মনের দুয়ার খোলা রাখতে হবে। মনের প্রসারতার জন্য হযরত মুসাকে আ. আল্লাহ রাব্বুল আলামিন যে দোয়া শিখিয়ে দিয়েছেন আমাদেরও সে দোয়াটা করতে হবে। ফেরাউনের মত চরম স্বৈরাচারের জন্যও ভালো দোয়া করতে হবে। তারাও আমাদের সহজাত ভাই, আমরা তাদেরকে জাহান্নামে ছেড়ে যেতে পারি না। হযরত মুসা আ. ও হারুন আ. মাত্র দুইজন গিয়ে ফেরাউনের রাজপ্রাসাদে, তার দুর্দান্ত ক্ষমতা ও প্রতাপের সামনে মহান আল্লাহর বাণীকে তুলে ধরেছিলেন। আমরা সংখ্যায় কত সেটা বিবেচনার বিষয় নয়, মূলত একজন ঈমানদার হিসেবে সত্যের দাওয়াত সবখানে পৌঁছানো আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। শাসক তার সকল শক্তিমত্তাকে প্রয়োগ করে আমাদের থামিয়ে দিতে চাইলেও মুমিন কখনো পিছপা হবে না। আর সর্বশেষ দ্বীনের বিজয়ের ক্ষেত্রে তো মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের ওয়াদা রয়েছেই।

আজ ৪ মে’ ২০২২ বুধবার বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের উদ্যোগে আয়োজিত ঈদ পুনর্মিলনী ও মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর জননেতা নূরুল ইসলাম বুলবুলের সভাপতিত্বে এবং কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের সঞ্চালনায় ভার্চুয়াল প্লাটফর্মে অনুষ্ঠিত এই ঈদ পুনর্মিলনীতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর সাবেক সংসদ সদস্য ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের, ভারপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মাসুম, কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এ এইচ এম হামিদুর রহমান আযাদ ও মাওলানা আব্দুল হালিম আরও বক্তব্য রাখেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর সেলিম উদ্দিন, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মোবারক হোসাইন, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি হাফেজ রাশেদুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমীর মঞ্জুরুল ইসলাম ভূঁইয়া, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি যথাক্রমে এডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন, দেলাওয়ার হোসেন, কামাল হোসাইন, অধ্যাপক ড. আব্দুল মান্নান, বিএফইউজের সাবেক সভাপতি ও সদ্য কারামুক্ত সাংবাদিক নেতা রুহুল আমিন গাজী। শহীদ ও নির্যাতিত মজলুম পরিবারের সন্তানদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সাবেক আমীরে জামায়াত অধ্যাপক গোলাম আযম (রহিঃ) এর সন্তান মামুন আল আযমি, শহীদ আমীরে জামায়াত মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীর সন্তান ব্যারিস্টার নাজিব মোমেন, সেক্রেটারি জেনারেল শহীদ আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের সন্তান আলী আহমাদ মাবরুর। অনুষ্ঠানে স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে শহীদ পরিবারের সদস্যদের বক্তব্যের সময় এক আবেগঘন পরিবেশ সৃষ্টি হয়। সাইমুম শিল্পীগোষ্ঠী এবং মহানগর শিল্পীগোষ্ঠী ও নাট্যদলের মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক পরিবেশনা সবাইকে আনন্দিত ও উজ্জীবিত করে।

ডা. শফিকুর রহমান তাঁর বক্তব্যে বলেন, যারা আল্লাহর ফিতরাতের বিরোধীতা করবে তাদের শিক্ষা নেওয়া উচিৎ ফেরাউনের শেষ পরিণতি দেখে। ফেরাউন বলেছিল আমি তোমাদের রব বা প্রভু। রাষ্ট্রের গোলামেরা তাকে শিকার করে নিয়েছিল। মহান আল্লাহর কথা তারা ভুলে গিয়েছিল। তাই আল্লাহ রাব্বুল আলামীন ফেরাউনকে পানিতে ডুবিয়ে স্বমূলে নিশ্চিহ্ন করে পৃথিবী থেকে বিদায় করেছেন। শুধু তাই নয় তার লাশকে আজও নির্দশন হিসেবে বিশ্ববাসীর সামনে রেখে দিয়েছেন। একমাত্র আল্লাহ তায়া’লায় মুমিনের জন্য আশ্রয়স্থল, তিনি চাইলে নিমিষেই সকল জুলুম অত্যাচারের অবসান ঘটিয়ে এখানে দ্বীনের বিজয় দান করতে পারেন। আল্লাহ তায়ালা পরবর্তী যুগের সকল জুলুমবাজ, অত্যাচারী শাসকদের জন্য দৃষ্টান্ত রেখে দিয়েছেন। মানুষের উপরে অন্যায় ভাবে জুলম করা কালে আল্লাহ তাদের ছাড় দেন কিন্তু ছেড়ে দেন না। নির্যাতিতরা চিরকাল নির্যাতন ভোগ করবে এটা আল্লাহর সুন্নাত নয়। আল্লাহ বলেছেন আমি একটা সভ্যতাকে আরেকটা সভ্যতার উপরে নিয়ে প্রতিষ্ঠিত করি। একটা সভ্যতাকে ধ্বংস করে দেয় তাদের পাপের ফসল হিসেবে। আমাদের মাঝ থেকে তাকওয়া অর্জনের মাস মাহে রমাদান বিদায় নিয়েছে। আমরা জানি না কে কতটুকু তাকওয়াবান হতে পেরেছি।