বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঘোষিত সারাদেশে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ কর্মসূচি পালনে বাধা, হামলা ও গ্রেফতারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে এবং শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ কর্মসূচি সফল করায় দেশবাসী ও সংগঠনের সকল স্তরের নেতাকর্মীদেরকে অভিনন্দন জানিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত আমীর ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান ২৩ আগস্ট নিম্নোক্ত বিবৃতি প্রদান করেছেন।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, “বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঘোষিত ২৩ আগস্ট দেশব্যাপী শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ কর্মসূচিতে বাধা, হামলা ও নেতাকর্মীদের বাড়ি-ঘরে তল্লাশি চালিয়ে প্রায় শতাধিক নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সরকারের নানা বাধা সত্ত্বেও দেশব্যাপী শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ মিছিলের কর্মসূচি সফল করায় দেশবাসী ও জামায়াতে ইসলামীর সকল স্তরের নেতাকর্মীদেরকে আন্তরিক অভিনন্দন জানাচ্ছি।
তিনি আরও বলেন, জামায়াতের শান্তিপূর্ণ মিছিল কর্মসূচি বানচাল করার হীনউদ্দেশ্যে পুলিশ কয়েকটি জেলায় নেতাকর্মীদের বাড়ি-ঘরে, ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে ও কর্মস্থলে রাত-দিন গ্রেফতার অভিযান চালিয়েছে। এ সময় বাড়ি-ঘর ও ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের মূল্যবান জিনিসপত্রের ব্যাপক ক্ষতিসাধন করা হয়েছে এবং কাক্সিক্ষত ব্যক্তিকে না পেয়ে পরিবারের সদস্যদেরকে গালিগালাজ ও দুর্ব্যবহার করা হয়েছে। কোথাও কোথাও বৃদ্ধ পিতা-মাতা, মহিলা ও শিশুদের ভয়ভীতি দেখিয়ে মানসিক নির্যাতন করা হয়েছে। বিক্ষোভ মিছিলকে কেন্দ্র করে ২২ আগস্ট দিবাগত রাতে ঝিনাইদহ জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য, মহেশপুর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মাওলানা আব্দুল হাই ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান জনাব ফকির আহমাদসহ ৬ জন, বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা তৈয়বুর রহমান, যশোরের বাঘারপাড়া থেকে ৮ জন, চুয়াডাঙ্গা জেলা থেকে রাতে ৪ জন এবং মিছিলে অংশগ্রহণ করতে যাওয়া গাড়িসহ ৩০ জন, নরসিংদী থেকে ৩ জন, লালমনিরহাট জেলা থেকে ৬ জন, সিরাজগঞ্জ থেকে ২ জন, দিনাজপুরের ৪টি উপজেলায় পুলিশ পিক-আপ ভ্যান ও মোটর সাইকেলে টহল দিয়ে এক ভীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে এবং বিরামপুর থেকে ১ জনসহ সারা দেশ থেকে প্রায় শতাধিক নেতাকর্মীকে অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করা হয়েছে। ভোলা সদরের দিঘলদি ইউনিয়ন জামায়াতের আমীর মৌলভি সেকান্দার আলী ঢাকায় কারারুদ্ধ ছেলেকে দেখতে আসলে তাঁকে ছোট ২ সন্তানসহ গ্রেফতার করা হয়েছে। ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন পয়েন্টে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করে জনমনে এক ভীতিকর পরিবেশ তৈরি করা হয়েছে এবং কয়েক জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আমি সরকারের এইসব জুলুম-নির্যাতন, গ্রেফতার, হয়রানি এবং সরকার দলীয় সন্ত্রাসীদের পৈশাচিক আচরণের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
তিনি বলেন, বর্তমান জালেম সরকারের প্রতি জনগণের মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। সরকার ক্ষমতা হারানোর ভয়ে জামায়াতে ইসলামীসহ বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের নামে মিথ্যা ও সাজানো মামলা দিয়ে গ্রেফতার ও হয়রানি করছে। জুলুম-নির্যাতনের পরিণতি কখনও শুভ হয় না। অতীতে কোনো সরকারই মানুষ হত্যা করে, জুলুম-নির্যাতন চালিয়ে ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারেনি, বর্তমান সরকারও পারবে না, ইনশাআল্লাহ।
অবিলম্বে এসব অন্যায় গ্রেফতার ও হয়রানি বন্ধ করে শহীদ ফোরকান উদ্দীনের খুনিদের দ্রুত গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান এবং জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের গ্রেফতারকৃত সকল নেতাকর্মীকে নিঃশর্তভাবে মুক্তি দেয়ার জন্য আমি সরকারে প্রতি আহবান জানাচ্ছি।”