২ এপ্রিল ২০২৪, মঙ্গলবার, ১২:২৮

১৫ মাসে ২২ লাশ উদ্ধার অর্ধেকই শনাক্ত হয়নি

চট্টগ্রামের চরপাথরঘাটা এলাকার পোর্টল্যান্ড জেটি সংলগ্ন কর্ণফুলী নদী থেকে ২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর অজ্ঞাতপরিচয় এক নারীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বয়স আনুমানিক ৩৩ বছর। দীর্ঘ পাঁচ মাস পরও লাশের পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি।

এ ঘটনায় করা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সদরঘাট নৌ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সঞ্জীব কান্তি নাথ কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমরা ৩২টি থানার নিখোঁজের ঘটনায় করা সাধারণ ডায়েরিগুলোর (জিডি) সঙ্গে মিলিয়ে দেখছি, ওই নারীর লাশের সঙ্গে কারো শারীরিক বর্ণনার মিল আছে কি না।

নৌ পুলিশের তথ্য মতে, ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত গত ১৫ মাসে কর্ণফুলী নদীর সদরঘাট নৌ থানা এলাকা থেকে বিভিন্ন সময়ে ২২টি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে ১২ জনের পরিচয় শনাক্ত করতে পারেনি পুলিশ। এর মধ্যে চারজন নারী।
নৌ পুলিশ বলছে, লাশ পচে বিকৃত হলে শনাক্ত করা কঠিন হয়ে যায়।

পচে যাওয়া লাশের আঙুলের ছাপ (ফিঙ্গারপ্রিন্ট) কাজ করে না। এতে লাশ শনাক্ত করা কঠিন।
সদরঘাট নৌ থানা পুলিশ সূত্র জানায়, ২০২৩ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ পার থেকে অজ্ঞাতপরিচয় এক পুরুষের লাশ উদ্ধার করা হয়, যার পরিচয় এখনো শনাক্ত হয়নি। ৫ মার্চ বোয়ালখালী উপজেলার চরখিজিরপুর এলাকায় কর্ণফুলী থেকে উদ্ধার করা এক নারীর লাশও এখনো শনাক্ত হয়নি।

এভাবে গত ১৫ মাসে উদ্ধার করা ২২টি লাশের মধ্যে ১২ জনের পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি।
চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত তিনজনের লাশ উদ্ধার করেছে নৌ পুলিশ। এর মধ্যে এক শিশু ও এক নারীর পরিচয় পাওয়া যায়নি। মিনু রানী দে নামে অন্য একজনের পরিচয় পাওয়া গেলেও মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সদরঘাট নৌ ানার এসআই পরিমল চন্দ্র মল্লিক কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘এ ঘটনায় অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।
ওই নারীর মৃত্যুর কারণ জানতে ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। আমরা তদন্ত করছি। এখনো হত্যার কোনো আলামত পাইনি।’

চট্টগ্রামের সদরঘাট নৌ থানার ওসি মো. একরাম উল্লাহ কালের কণ্ঠকে বলেন, যেসব লাশের পরিচয় শনাক্ত হয়নি, সেসবের ডিএনএ প্রফাইল সংরক্ষণ করে রেখেছি। সব লাশের ময়নাতদন্ত হয়েছে। রিপোর্টে খুনের আলামত পাওয়া গেলে হত্যা মামলা করা হয়। যে কেউ দাবি করলে ডিএনএ ম্যাচিং করে দেখতে পারে।

এ বিষয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিমিনোলজি অ্যান্ড পুলিশ সায়েন্স বিভাগের চেয়ারম্যান মো. সাখাওয়াত হোসেন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘প্রথমে অজ্ঞাতপরিচয় লাশের পরিচয় শনাক্ত করা দরকার। এরপর তার মৃত্যুর যথাযথ কারণ বের করতে হবে। কর্ণফুলী নদীতে অজ্ঞাতপরিচয় লাশের যে ছড়াছড়ি, সেটি আমাদের ক্রিমিনাল জাস্টিস সিস্টেমের জন্য অশনিসংকেত।’

https://www.kalerkantho.com/print-edition/last-page/2024/04/02/1376737