১ মার্চ ২০১৭, বুধবার, ১০:৫৩

ইসলাম ও ইসলামী ব্যক্তিত্বদের অবমাননা করা হচ্ছে

সৈয়দ মাসুদ মোস্তফা : মানুষ মাত্রই কোন না কোন ধর্মের অনুসারী। মূলত সব ধর্মেই শ্রষ্ঠার অস্তিত্বকে স্বীকার করা হয়। মনে করা হয় এই বিশ্বচরাচরের একজন নিয়ন্ত্রক রয়েছেন। অবশ্য ধর্ম মানেন না এমন লোকেরও সন্ধান আছে। যদিও এদের সংখ্যাটা বেশ কম। এরা নিজেদেরকে ধর্মহীন বা নাস্তিক বলে প্রচার করেন। ধর্মাসক্তিকে মাদকাসক্তির সাথে তুলনা করতে পুলকবোধ করেন তারা। ধর্মের বিরুদ্ধে বিষোদগার এবং অসারতা-আবেদনহীনতা প্রমাণকেই নিজেদের ধ্যানজ্ঞান মনে করেন। এমনকি ধার্মিক ব্যক্তিদের চৌদ্দগোষ্ঠী উদ্ধার করতে ছাড়েন না তারা। কিন্তু এদের মধ্যে স্ববিরোধিতাটাও কম নয়। এদের মধ্যে কাউকে কাউকে ধর্ম পালন করতে দেখা যায়। হজ্জ করতে-চিল্লা দিতে বা গয়া-কাশী-বৃন্দাবনে তীর্থে যাওয়ার ঘটনাও ঘটে থাকে। ফলে ধর্মহীনতা ও নাস্তিকতার নৃত্যটা অনেকটা বেসুরো হয়ে পড়ে।

এসব কথিত নাস্তিকেরা সারা জীবন নিজেকে ধর্মবিরোধী সৈনিক হিসাবে জাহির করলেও বিয়ে-সাদী করেন ধর্মীয় বিধি-বিধান মেনেই। যদিও তারা ধর্মীয় নেতাদের গালমন্দ করতে মোটেই কসুর করেন না। কিন্তু ক্ষেত্রবিশেষে তাদেরকে ধর্মীয় নেতাদের দ্বারস্থ হতে দেখা যায়। এমনকি আত্মস্বীকৃত নাস্তিকরাও এ থেকে মোটেই আলাদা নন। মৃত্যুর পর শেষকৃত্যটাও হয় ধর্মীয় অনুশাসনেই। এ বিষয়ে ধর্মবিদরা ধর্মীয় ব্যাখ্যা দিলে তাদেরকে ধর্মান্ধ বলে গালি দেয়া হয়। ফতোয়াবাজ তকমাটাও সেঁটে দেয়া হয় তাদের গায়ে।

আঁতে ঘা লাগলে সবকিছুই হয়ে যায় কথিত ধর্মের নামে। অবশ্য এই আওতার বাইরেও কাউকে কাউকে দেখা যায়। কিন্তু তা সচরাচর নয় বরং কালেভদ্রে। ফলে একথা মনে করার যৌক্তিকতা আছে যে আসল নাস্তিক বা ধর্মবিরোধীদের চেয়ে নকলের প্রাদুর্ভাবটা বেশি আমাদের সমাজে। যেমন প্রকৃত ধার্মিকের চেয়ে পাঁড় বা বকধার্মিকের সংখ্যাটাই বেশ উল্লেখযোগ্য। বিশেষ করে আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে। যা এ জাতির জন্য দুর্ভাগ্যই বলতে হবে।

আমাদের দেশের অধিকাংশ মানুষ ধর্মবিশ্বাসে মুসলমান। এ দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ ইসলাম ধর্মের অনুসারী হওয়ার কারণেই ভারত বিভাজনের পর এই ভূখ-কে নবগঠিত পাকিস্তান রাষ্ট্রের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। কিন্তু সঙ্গত কারণেই পাকিস্তানের অখ-তা বেশি দিন স্থায়ী হয়নি। কারণ, ধর্মের নামে পাকিস্তান হলেও শাসকগোষ্ঠীর ধর্মীয় চরিত্র না থাকায় তারা মানুষের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি। মূলত ধর্মকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করা হয়েছে। আর এজন্য শাসকগোষ্ঠীর অহমিকা ও হঠকারিতা কম দায়ী নয়। ফলে পাকিস্তান ভেঙ্গেছে। বিশ্ব মানচিত্রে বাংলাদেশ নামের নতুন রাষ্ট্রের অভ্যুদয় ঘটেছে।

ভারতীয় উপমহাদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দুদের থেকে মুসলিম সমাজের তাহজিব-তামুদ্দন আলাদা হওয়ার যুক্তিতেই মুসলিম সংখ্যগরিষ্ঠ অঞ্চল নিয়েই পাকিস্তান রাষ্ট্রে গঠিত হয়েছিল। আর এই ইস্যু সৃষ্টিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করেছিলেন মোহন দাস করম চাঁদ গান্ধী। এককথায় যাকে মহাত্মা গান্ধী বলা হয়ে থাকে। তিনি এক প্রশ্নের জবাবে বলেছিলেন, ‘ভারত স্বাধীনের পর গো-হত্যা নিবারণকে অগ্রাধিকার দেয়া হবে’। মহাত্মা গান্ধীর এই সাম্প্রদায়ীক উক্তিকে লুফে নিয়েছিলেন মুসলিম নেতৃবৃন্দ। কিন্তু যে লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে ভারত বিভাজিত হয়েছিল সে লক্ষ্যে পৌঁছা মোটেই সম্ভব নয়নি। যে ধর্মের কথা বলে ভারত বিভাগ করা হয়েছিল সে লক্ষ্যে আজও পৌঁঁছা যায়নি বরং পাকিস্তান হওয়ার পর ধর্ম ও ধর্মীয় নেতারা বেশি নিগ্রহের শিকার হয়েছেন। মূলত শাসকগোষ্ঠীর ধর্মীয় চরিত্র না থাক সত্ত্বেও বিড়াল তপস্যীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়ার এর জন্য প্রধানত দায়ী। কিন্তু পরিতাপের বিষয় যে, আমরা দ্বিতীয় দফায় স্বাধীন হওয়ার পরই অতীত ধারায় অব্যাহত আছি।

প্রতিটি ধর্মেই নিজ নিজ ধর্মগ্রন্থ ও ধর্মীয় নেতাদের অত্যন্ত সম্মানের চোখে দেখা হয়। একথা বলা সঠিক হবে না যে, সকল ধর্মের অনুসারীরা যথাযথভাবে ধর্মচর্চা করেন। ব্যক্তির মধ্যে ধর্মচর্চার ঘাটতি থাকলেও এটা তার নিজের ব্যর্থতা হিসাবেই মনে করেন। কিন্তু ব্যক্তির নিজের ব্যর্থতা কোন দিন ব্যক্তির ধর্ম, ধর্মগ্রন্থ ও ধর্মীয় নেতাদের প্রতি বিদ্রোহী করে তোলে না। এক কথায় বলা যায় ধর্ম, ধর্মীয় নেতা ও ধর্মগ্রন্থ স্ব স্ব ধর্মানুসারীদের অধিকতর সম্মানের বস্তু। কিন্তু আমরা মুসলমানরা এমন কপাল পোড়া জাতি যে, আমরা নিজ ধর্ম, ধর্মগ্রন্থ ও ধর্মীয় নেতাদের সবসময় বিষোদগার করি। কোথাও কোন কিছু ঘটলেই এজন্য ধর্ম ও ধর্মীয় ব্যক্তিদের দায়ী করা হয়। গণমাধ্যমে ধর্ম ও ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব কদর্যভাবে উপস্থাপন করতে দেখা যায়। এমনকি নাটক-সিনেমাতে ইসলামী আখলাক-সুরতের মানুষগুলোকে সমাজের নিকৃষ্ট প্রকৃতির মানুষ হিসাবে চিত্রিত করা হয়। মনে হয় সকল অনিষ্টের মূলই হচ্ছে ধর্ম ও ধর্মীয় নেতারা। আর সাম্প্রতিক সময়ে এই প্রবণতাটা আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে। সে ধারাবাহিকতায় দু’জন বরেণ্য আলেমে দ্বীন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের তোপের মুখে পড়েছেন বলে জানা গেছে।

সম্প্রতি জাতীয় গণমাধ্যমে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন একটি বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, মোহাম্মদ আমিমুল এহসান ও মোহাম্মদ উল্লাহ হাফেজ্জী হুজুর নামে দু’টি রাস্তার নামকরণ ইতোমধ্যেই ঢাকা সিটি কর্পোরেশন কর্তৃক বাতিল করা হয়েছে। কোন স্থাপনায় এসব নাম থাকলে তা মুছে ফেলার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। এ বিজ্ঞপ্তিটি একটি রিট পিটিশনের আদেশ তামিলের অনুকূলে প্রচার করা হয়েছে। রিটটি কারা কী মর্মে করেছেন, তাদের দাবির সপক্ষে কী কী যুক্তি তারা দিয়েছেন তা বিজ্ঞপ্তি পাঠকের সামনে স্পষ্ট না হলেও রাজধানীর দু’টি রাস্তার নাম থেকে যে দু’জন বড় আলেম ও বুজুর্গের নাম মুছে দেয়া হয়েছে সেটি আমরা স্পষ্টতই উপলব্ধি করতে পেরেছি।

উল্লেখ্য, নানা ধর্মের নানা পরিচয়ের অসংখ্য মানুষের নামে রাজধানীতে রাস্তাঘাটের নাম থাকলেও বেছে বেছে কেন দু’জন শ্রদ্ধেয় আলেম ও অবিসংবাদিত বুজুুর্গের নামই মুছে দিতে হল তা শতকরা ৯২ ভাগ মুসলমানের সামনে মোটেই বোধগম্য নয়। আমরা জানি না তাদের নিয়ে কী বিতর্ক বা কার কি অভিযোগ। তাছাড়া বিতর্ক ছাড়া কোন মানুষ আছে বলে মনে করার কোন কারণ নেই। মূলত ইতিহাস ও সময়কে কেউ অস্বীকার করতে পারে না। কেবল উগ্রপন্থায়ই দেখা যায় সবকিছুইকে অস্বীকার করতে। সভ্য জগতে সব সময়ের শ্রদ্ধেয় মানুষকেই পরবর্তীতে স্মরণ করার নিয়ম রয়েছে। ভিন্নমত পোষণকারী মাত্রই উল্টে পাল্টে ফেলে দেয়া, নিজেদের সুসময়ে অতীতের প্রতিটি ব্যক্তিত্বকে সুযোগমত আঘাত, অপদস্থ ও অপমান করা নিঃসন্দেহে হীন মন-মানসিকতারই পরিচয় বহন করে। আসলে যে জাতি গুণীজনের কদর করে না সে জাতিতে গুণীজনের জন্মও হয় না।

রাজধানীতে বিভিন্ন স্থাপনার নামকরণের ইতিহাস অতি পুরনো। ১৯০ বছর ব্রিটিশ বিরোধী সংগ্রামের পর দেশ স্বাধীন হলে নানা সময় ঢাকায় ইংরেজ লর্ডদের নামে রাখা রাস্তার নাম কেউ বদলে ফেলেনি। এখনো মিন্টো রোড, হেয়ার রোড, জনসন রোড, টয়েনবি সার্কুলার রোড, কার্জন হল, জুবিলি রোড, হার্ডিঞ্জ ব্রিজ এদেশে রয়ে গেছে। পাকিস্তানে এত তিক্ততার পরও সোহরাওয়ার্দী আর শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক এভিনিউ রয়ে গেছে। উগ্র সাম্প্রদায়িক দল বিজেপি ভারতে ক্ষমতায় আসার পর কিছু পরিবর্তন ছাড়া অতীতে ভারতেও এ ধরনের সহনশীলতার পরিবেশ বজায় ছিল।

বিজেপিই প্রথম বোম্বেকে মুম্বাই, মাদ্রাজকে চেন্নাই ইত্যাদি করে। তারা দিল্লির আওরঙ্গজেব রোডটির নামও পরিবর্তন করে ফেলেছে। নয়ত স্বাধীনতার পর ধর্মনিরপেক্ষতার দোহাই দিয়ে ৯২ ভাগ মুসলমানের প্রতিষ্ঠান থেকে আল্লাহর নাম, কুরআনের আয়াত ও ইসলামের নাম-নিশানা মুছে দেয়ার সিদ্ধান্ত তো বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ও তার সরকার নেননি। সাম্প্রদায়িক ভেদবুদ্ধির কারিগর চিহ্নিত কুচক্রী মহলটিই এসব গণবিরোধী কাজ করেছিল। যার দায়ভার গ্রহণ করতে হয়েছে আওয়ামী লীগ সরকারকে। এমনকি এজন্য প্রায়াশ্চিত্তও করতে হয়েছে তাদেরকে।

বর্তমানেও সরকারের মধ্যে ঘাপটি মেরে থাকা একটি অশুভচক্র এসব নেতিবাচক কাজে ইন্ধন দিয়ে যাচ্ছে বলেই মনে হচ্ছে। অতীতে ধর্মনিরপেক্ষতার কথা বলে এরাই স্বাধীনতার পর বাংলাদেশ বেতার থেকে পবিত্র কুরআন তিলাওয়াত তুলে দিয়েছিল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মনোগ্রাম থেকে কুরআনের আয়াত ‘রাব্বি জিদনী ইলমা’ ও ঢাকা শিক্ষাবোর্ড থেকে ‘ইকরা বিসমে রাব্বিকাল লাজি খালাক’, সলিমুল্লাহ মুসলিম হল থেকে ‘মুসলিম’ এবং কাজী নজরুল ইসলাম হল থেকে ‘ইসলাম’ শব্দ প্রত্যাহার করে নেয়া হয়েছিল। নিষিদ্ধ করা হয়েছিল ইসলামের নামে প্রতিষ্ঠিত সকল প্রতিষ্ঠান ও সংগঠন। কিন্তু হিন্দু ধর্মের নামে প্রতিষ্ঠিত ‘শ্রীকৃষ্ণ মিশন’ ও ‘রামকৃষ্ণ মিশন’ ছিল বহাল তবিয়তে। যা এদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের আবেগ-অনুভূতি, বোধ-বিশ্বাসের পরিপন্থী ছিল। কিন্তু ক্ষমতাসীনরা সেদিকে খেয়াল করার কোন সুযোগ পেয়েছেন বলে মনে হয় না।

ঢাকায় বৃটিশ আমলে যখন একটি সম্প্রদায়ের সংখ্যাধিক্য ও প্রাধান্য ছিল তখন ঢাকা পৌরসভার বড় কর্মকর্তা হওয়ার সুবাদে জনৈক ভদ্রলোক অসংখ্য স্বজাতীয় লোকের নামে রাস্তা-ঘাটের নামাকরণ করে নেন। প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, মাত্র ১০/২০ টাকা চাঁদা দিয়ে এরা নিজের নামে লেন, স্ট্রিট ও সড়কের নামকরণ করিয়েছেন তখন। রূপচান লেন, হরিচরণ রায় রোড, সতীশ সরকার রোড, ভজহরি সাহা স্ট্রিট, ভগবতী ব্যানার্জি রোড, হৃষিকেশ দাস রোড, কে এম দাস লেন ইত্যাদি সে যুগের রাখা নাম। কিন্তু ধর্মীয় বা সাম্প্রদায়িক চিন্তায় গত ১০০ বছরে তো কোন মুসলমান এসব নাম পরিবর্তনের কথা চিন্তা করেনি। কিন্তু মুসলমান নামধারী মেয়র ও কর্তাব্যক্তিদের সময়ে প্র্যাক্টিসিং মুসলমান পরিচয় থাকার অপরাধে বিশিষ্ট ব্যক্তি হয়েও সড়কের শিরোনাম হতে পারেনি এমন নজির এদেশে রয়েছে। ঢাকায় ভাষা সৈনিকদের নামে সড়কের নামকরণ হলো, কিন্তু শীর্ষ ভাষা সৈনিক হয়েও তালিকায় উঠলেন না অধ্যাপক আবদুল গফুর ও অধ্যাপিকা চেমন আরা আরও অনেকের। ডাকসুর জিএস হিসাবে যিনি রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে মানপত্র পাঠ করেছিলেন তিনিও রইলেন উপেক্ষিত। কারণ, তারা ইসলাম ও মুসলমানের পক্ষে।

বাংলাদেশের রাজধানীতে কত ধর্মের কত নেতা, মনীষী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে রাস্তা আছে, আছে কত অখ্যাত-কুখ্যাত লোকের নামে স্থাপনা, কিন্তু এক দু’জন আলেম ও বুজুর্গের নামের রাস্তাগুলো রাখা যাবে না- এ ধরনের হীন সিদ্ধান্ত কোন অশুভ শক্তি গ্রহণ করল তা সরকারকেই দেখতে হবে। মূলত গোলাপ শাহ এর পাশের সড়ক, যা চকবাজার পর্যন্ত পেঁৗঁছেছে সেই সড়কের নাম থেকে বিশ্ববরেণ্য বুজুর্গ ও আল্লাহর ওলি হযরত হাফেজ্জী হুজুরের নাম বাতিলের সিদ্ধান্ত দুরভিসন্ধিমূলক বলেই মনে করছেন সচেতন মহল। সড়কটির নাম হযরত হাফেজ্জী হুজুর সড়ক থাকলে কারো কি কোন ক্ষতি হবে? না হলে তা বাতিলে এত মরিয়া কেন, জাতি জানতে চায়। তৎকালীন সময়ে যারা হুজুরের নামে সড়কটির নামকরণ করেছিলেন তারা অত্যন্ত যৌক্তিক কারণেই নামকরণ করেছিলেন।

আমাদের ভাবতে কষ্ট হয়, বাংলার সর্বজন শ্রদ্ধেয় মুফতি মুহাদ্দিস, বহু ধর্মীয় গ্রন্থ প্রণেতা, জাতীয় মসজিদের প্রথম খতিব, এদেশের প্রবীণ আলেমদের অনেকের শিক্ষক আল্লামা মুফতি আমিমুল এহসান আর বাংলার শতায়ু কিংবদন্তি ওলীয়ে কামেল তিনবারের প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী মোহাম্মদ উল্লাহ হাফেজ্জী হুজুর তাদের নামে দু’টি রাস্তার নাম একটি মহলের গাত্রদাহের কারণ হয়ে গেল? তারা তো মসজিদ নগরীকে মূর্তির নগরী বানানোর পক্ষের লোক ছিলেন না। ৯২ ভাগ মুসলমানের উচ্চ বিচারালয় ও জাতীয় ঈদগাহ ৬৫ বছর ধরে যখন ইনসাফের প্রতীক, দাড়িপাল্লা, জাতীয় ফুল শাপলা ও বাংলাদেশের মানচিত্র নিয়ে সগৌরবে দাঁড়িয়ে আছে, তখন এখানে গ্রিক দেবী ও টাইটান থেমিসের বিকৃত মূর্তি স্থাপনে যারা কোমরে গামছা বেঁধে নেমেছে, তাদের একটি অংশই কি চক্রান্ত করে দেশে অশান্তি বীজ বপন করছে কিনা তা সরকারকেই বিবেচনায় আনতে হবে।

ধর্ম, ধর্মীয় নেতা ও ধর্মগ্রন্থকে অপমান করে কোন জাতি বড় হয়নি, কখনো হবেও না। আর মুসলমানরা ছাড়া অন্য কোন ধর্মের লোক একাজটা করেও না। আমাদেরকেকে অবশ্যই হীনম্মন্যতা থেকে বেরিয়ে এসে যার যা প্রাপ্তি তা তাদেরকে দিতে হবে। আলেম ও বুজুর্গদের অপমান কারো কাম্য নয়। যা দেশের ধর্মপ্রাণ মানুষকে বিক্ষুব্ধ করে তুলবে। তাই সময় থাকতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনকে মাওলানা আমিমুল ইহসান ও মাওলানা হাফেজ্জী হুজুরের নাম প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।