২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, মঙ্গলবার, ১২:৪৩

রাবি ভিসির বাসভবন ঘেরাও করে নিয়োগ পরীক্ষা ভুণ্ডল করল আ’লীগ

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ভিসির বাসভবন ঘেরাও করে নিয়োগ পরীক্ষা ভুণ্ডল করে দিয়েছেন ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের স্থানীয় নেতাকর্মীরা। গতকাল বিকেল সাড়ে ৩টা থেকে সাড়ে ৬টা পর্যন্ত বাসভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন তারা। ফলে বিকেল ৪টা থেকে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও তা হয়নি।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বিকেল ৪টায় ভিসির বাসভবনে নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবেÑ এমন খবর পেয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল বের করে। পরিবহন মার্কেটের সামনে থেকে মতিহার থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো: আলাউদ্দিনের নেতৃত্বে মিছিলটি ভিসির বাসভবনের সামনে গিয়ে অবস্থান নেয়। তারা দলীয় নেতাকর্মীদের চাকরির দাবিতে সেখানে বিক্ষোভ করতে থাকে। এ সময় ভিসি অধ্যাপক মুহম্মদ মিজানউদ্দিন ভেতরে অবস্থান করছিলেন। পরে সেখানে প্রার্থীরা এলে পরীক্ষা হবে না জানিয়ে তাদের চলে যাওয়ার নির্দেশ দেন সরকারদলীয় নেতাকর্মীরা।

মতিহার থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো: আলাউদ্দিন বলেন, ‘প্রশাসন নিজেদের সুবিধামতো চাকরিতে ঢোকার বয়সসীমা বাড়াচ্ছে, আবার কমাচ্ছে। বিএনপি-জামায়াতের প্রার্থীদের নিয়োগ দিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। তারা দুই দিন আগে মোবাইলে মেসেজ দিয়ে আজকের নিয়োগ পরীক্ষা নিচ্ছেন, যা কোনোভাবে গ্রহণযোগ্য নয়।’ তিনি আরো বলেন, ‘অসৎ উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য লুকোচুরি করে নিয়োগপ্রক্রিয়া চালানোর চেষ্টা করেছিল তারা। এ জন্য আমরা ভিসির বাসভবনের সামনে অবস্থান নিয়েছি। প্রশাসনের মেয়াদ আর মাত্র ২১ দিন আছে, শেষ সময়ে অনিয়ম করে কোনো নিয়োগপ্রক্রিয়া চালাতে দেয়া হবে না।’

সূত্র জানায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দফতরের একজন কর্মকর্তা পদে গত বছরের ১৫ ডিসেম্বর নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হয়। আবেদনের শেষ তারিখ ছিল ৫ জানুয়ারি। আবেদন যাচাই-বাছাই শেষে ছয়জনকে যোগ্য প্রার্থী হিসেবে বিবেচনা করা হয়। গতকাল সোমবার বিকেলে তাদের মৌখিক পরীক্ষার তারিখ নির্ধারণ করা হয়। তবে পরীক্ষার তারিখ জানিয়ে গত ২২ ফেব্রুয়ারি ইস্যুকৃত চিঠির বেশির ভাগ প্রার্থীর কাছে পৌঁছেনি। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দফতর থেকে তাদের মোবাইলে এসএমএস ও কল করে ক্যাম্পাসে এসে পরীক্ষার আগে ডুপ্লিকেট প্রবেশপত্রের কপি নিতে বলা হয়েছিল।

জানতে চাইলে রাবি ভিসি অধ্যাপক ড. মুহম্মদ মিজানউদ্দিন বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩৫ হাজার শিক্ষার্থী, দেড় হাজার শিক্ষক, সাড়ে ৩-৪ হাজার কর্মকর্তা। অথচ বহিরাগতরা এসে এখানে নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ করে দিয়ে যাচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কমিউনিটির সদস্যদের মদদ ছাড়া এটি কোনোভাবে সম্ভব ছিল না। বিশ্ববিদ্যালয়ের কারা তাদের মদদ দিচ্ছে, তা এখন দেখার বিষয়।’

স্থগিত নিয়োগ পরীক্ষার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘পরবর্তীতে পরিবেশ-পরিস্থিতি বুঝে পুনরায় নিয়োগ পরীক্ষার তারিখ নির্ধারণ করা হবে।’

http://www.dailynayadiganta.com/detail/news/199537