২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, শনিবার, ১০:২৫

জলাবদ্ধ ভবদহ অঞ্চল

সাত হাজার হেক্টর জমিতে বোরোর আবাদ হচ্ছে না

যশোরের ভবদহ অঞ্চলের বিলগুলো থেকে পানি নিষ্কাশিত হচ্ছে না। এ কারণে এ অঞ্চলের প্রায় ৭ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হচ্ছে না।

অভয়নগর, মনিরামপুর ও কেশবপুর উপজেলার কৃষি সম্প্রসারণ দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা তিনটির ভবদহ অঞ্চলে প্রায় ২৫ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধানের চাষ হয়। এর মধ্যে অভয়নগর উপজেলার ভবদহ অংশে প্রায় সাড়ে ৭ হাজার হেক্টর, মনিরামপুর উপজেলার ভবদহ অংশে প্রায় সাড়ে ১০ হাজার হেক্টর এবং কেশবপুর উপজেলার ভবদহ অংশে প্রায় ৭ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধানের চাষ হয়।

সূত্রটি আরও জানায়, এবার মনিরামপুর উপজেলায় ৩২ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। চাষ হয়েছে ২৯ হাজার ১৫০ হেক্টর জমি। অভয়নগর উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১৬ হাজার ৮৭৪ হেক্টর জমি। চাষ হয়েছে ১৩ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে। কেশবপুর উপজেলায় ১৫ হাজার ৯১৪ হেক্টর জমি বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে চাষ হয়েছে ১৫ হাজার ৯৩০ হেক্টর জমি। উপজেলা তিনটির ভবদহ অংশে এখনো জলাবদ্ধতা রয়েছে। এ জন্য এবার ৬ হাজার ৯২৪ হেক্টর জমিতে বোরোর আবাদ হচ্ছে না। এর মধ্যে মনিরামপুর উপজেলায় ২ হাজার ৯৫০ হেক্টর, অভয়নগর উপজেলায় ৩ হাজার ৬৭৪ হেক্টর এবং কেশবপুর উপজেলায় ৩০০ হেক্টর জমি রয়েছে।

যশোরের অভয়নগর, মনিরামপুর ও কেশবপুর উপজেলা এবং খুলনার ডুমুরিয়া ও ফুলতলা উপজেলার অংশবিশেষ নিয়ে ভবদহ অঞ্চল। পলি পড়ে এই অঞ্চলের পানি নিষ্কাশনের পথ মুক্তেশ্বরী, টেকা, শ্রী ও হরি নদী নাব্যতা হারিয়েছে। এ কারণে পানি নিষ্কাশিত হচ্ছে না।

অভয়নগর উপজেলার ডুমুরতলা গ্রামের কৃষক সমীর কান্তি বিশ্বাস বলেন, ‘বিলে আমার সাত বিঘা জমি আছে। এর মধ্যে পাঁচ বিঘা জমিতে কোমর পরিমাণ জল। বাকি দুই বিঘা জমির জল সেচে বোরো ধান লাগিয়েছি।’

মনিরামপুর উপজেলার আঠারোপাকিয়া গ্রামের কৃষক আতিয়ার রহমান বলেন, ‘বিলডুমুরে আমার ১৮ বিঘা জমি আছে। সবই পানির নিচে ছিল। বিল সেচে এই পর্যন্ত আমি ১৫ বিঘা জমিতে বোরোর চারা রোপণ করেছি।’

অভয়নগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা গোলাম ছামদানী বলেন, উপজেলায় এবার বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা বেশি ধরা হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণের ক্ষেত্রে জলাবদ্ধ ভবদহ অঞ্চলকে বিবেচনায় রাখা হয়নি। উপজেলার ভবদহ অংশে এবার ৩ হাজার ৬৭৪ হেক্টর জমিতে বোরো চাষ হচ্ছে না।

মনিরামপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুশান্ত কুমার তরফদার বলেন, উপজেলায় এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২ হাজার ৯৫০ হেক্টর কম জমিতে বোরোর চাষ হয়েছে। উপজেলার প্রায় সব অংশে এবার বোরোর চাষ বেড়েছে। তবে ভবদহ অঞ্চলের পাঁচটি ইউনিয়নে বোরোর চাষ কমেছে।

কেশবপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মহাদেব চন্দ্র সানা বলেন, এ উপজেলার প্রায় সব এলাকাতে এবার বোরোর চাষ বেশি হয়েছে। এতে করে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৬ হেক্টর বেশি জমিতে চাষ হয়েছে। তবে জলাবদ্ধতার কারণে ভবদহ এলাকায় প্রায় ৩০০ হেক্টর জমিতে বোরো চাষ হচ্ছে না।

http://www.prothom-alo.com/bangladesh/article/1089463