৩০ মার্চ ২০১৭, বৃহস্পতিবার, ৯:০৪

এফবিআই কর্মকর্তা ল্যামন্ট সিলার

রিজার্ভ চুরি হয়েছে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায়

যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকে থাকা বাংলাদেশ ব্যাংকের ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার হাতিয়ে নেয়ার ঘটনা ঘটেছে কোনো একটি ‘রাষ্ট্রের পৃষ্ঠপোষকতায়’। মার্কিন কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থার (এফবিআই) কর্মকর্তা ল্যামন্ট সিলার গতকাল বুধবার ফিলিপাইনের রাজধানী ম্যানিলায় এ কথা বলেছেন। গত বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে রিজার্ভ চুরির এ ঘটনা ঘটে। এফবিআই রিজার্ভ চুরির ওই ঘটনা তদন্ত করছে। ল্যামন্ট সিলারও এই তদন্তের সাথে সংশ্লিষ্ট। তিনি ম্যানিলায় মার্কিন দূতাবাসে লিগ্যাল অ্যাটাশে।
সিলার তার বক্তব্যে কোনো দেশের নাম উল্লেখ করেননি। তবে বিশ্বের সবচেয়ে বড় এই সাইবার অপরাধের ঘটনার নেপথ্যে কোন দেশ জড়িত ছিল সে বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্র ধরতে পেরেছে বলে জানিয়েছেন সিলার। ওয়াশিংটনে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মার্কিন কর্মকর্তা গত সপ্তাহে বলেন, রিজার্ভ চুরির পেছনে ছিল উত্তর কোরিয়া। এফবিআই মনে করে, উত্তর কোরিয়াই ঘটনাটি ঘটিয়েছে। তবে তিনি এ ব্যাপারে বিস্তারিত কিছু জানাননি। ম্যানিলা থেকে বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর দিয়েছে।
বুধবার ম্যানিলায় সাইবার নিরাপত্তাবিষয়ক এক ফোরামে ল্যামন্ট সিলার বলেছেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির কথা আমরা সবাই জানি। এটা হলো ব্যাংকিং খাতে রাষ্ট্রীয় মদদপুষ্ট সাইবার হামলার মাত্র একটি উদাহরণ।
এর আগে ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের আইন বিভাগের লোকজন এই রিজার্ভ চুরির ঘটনায় উত্তর কোরিয়াকে দায়ী করে মামলার নথি তৈরি করছেন। এ ঘটনায় মধ্যস্থতাকারী হিসেবে তারা একজন চীনা নাগরিকের বিরুদ্ধেও অভিযোগ গঠন করছেন।
রিজার্ভ চুরিতে আর্থিক লেনদেনের বার্তা আদান-প্রদান করার আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্ক সুইফটকে ব্যবহার করা হয়। এর মাধ্যমে তারা নিউ ইয়র্কের ফেডারেল রিজার্ভকে রিজার্ভ প্রায় ১০০ কোটি ডলার অন্য অ্যাকাউন্টে স্থানান্তরের অনুরোধ জানায়। কিন্তু ফেডারেল রিজার্ভ এসব অনুরোধের বেশির ভাগ নাকচ করে দিলেও এর মধ্যে ফিলিপাইনের একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে চলে যায় ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার। পরে দ্রুততার সাথে ওই অর্থ তুলে নেয়া হয়। এ ঘটনায় এখনো কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি।
ফিলিপাইনের চীনা এক ক্যাসিনো ব্যবসায়ী দেশটির সিনেট কমিটির কাছে বলেছেন, গত বছর ফেব্রুয়ারি মাসে দুই চীনা নাগরিকের কাছ থেকে তিনি কয়েক মিলিয়ন ডলার পান। বাংলাদেশের অর্থ আত্মসাৎ করার পেছনে এই দুই ব্যক্তিই ছিলেন।
ফিলিপাইনের সরকারি তদন্তকারীরা এ ঘটনার পর কয়েক ব্যক্তি ও একটি রেমিট্যান্স প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ফৌজদারি অভিযোগ এনেছেন। তবে এসব অভিযোগ আদালতে মামলা হিসেবে রুজু করা হয়নি। মার্কিন কর্মকর্তা সিলার গতকালের সভায় বলেন, এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিরা যাতে ছাড় না পায়, তা নিশ্চিত করতে তারা ফিলিপাইনের সাথে কাজ করছেন।


 

http://www.dailynayadiganta.com/detail/news/207917