১৮ জানুয়ারি ২০২১, সোমবার, ১২:১৫

বৈদেশিক কর্মসংস্থানে বেহাল অবস্থা : ৬ মাসে গেছেন ৩৬৮ নারী

নতুনদের রেজিস্ট্রেশন ও ফিঙ্গারপ্রিন্টে জটিলতা

করোনা পরবর্তী ৬ মাসে বাংলাদেশ থেকে সৌদি আরব, কাতার কুয়েতসহ বিভিন্ন দেশে ৩৬৮ জন নারী কর্মী বিদেশে কর্মসংস্থানের উদ্দেশ্যে পাড়ি জমিয়েছেন। এরমধ্যে ডিসেম্বর মাসে একজন কর্মীও কোনো দেশে যেতে পারেননি। অথচ ২০১৯ সালের একই সময়ে দেশ থেকে অর্ধলক্ষাধিক নারী কর্মীর কর্মসংস্থান হয়েছিল। এ দিকে নতুন করে নারী শ্রমিকের বিদেশ যাওয়ার সংখ্যা বাড়লেও সার্ভার জটিলতায় অনেক নারী কর্মীকে ফেরত পাঠানো হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর পরিসংখ্যান ঘেটে দেখা গেছে, ২০২০ সালে বাংলাদেশ থেকে নারী শ্রমিক প্রেরণ করা হয় ১৯ হাজার ১৮১ জন। এরমধ্যে প্রথম ৩ মাসে (জানুয়ারি থেকে মার্চ) গেছে ১৮ হাজার ৮১৩ জন। এরপরই করোনার কারণে এপ্রিল, মে ও জুন মাসে কর্মী প্রেরণ সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে যায়। পরিস্থিতি কিছুটা অনুকূলে আসার পর জুলাই থেকে আবারো জনশক্তি প্রেরণের কার্যক্রম শুরু হয়।

পরিসংখ্যানে দেখা যায়, জুলাই মাসে হংকংয়ে ৪ জন, আগস্ট মাসে ওমানে একজন, লেবাননে ২ জন, হংকংয়ে ৫ জন, সাইপ্রাসে ১ ও অন্য একটি দেশে একজন মিলিয়ে ১০ জন নারী শ্রমিক কর্মসংস্থানের উদ্দেশ্যে পাড়ি জমান। একইভাবে সেপ্টেম্বর মাসে ওমান, লেবানন, হংকং, ইউকে ও মরিশাসে ৯ জন পাড়ি জমান। অক্টোবর মাসে এই সংখ্যা কিছুটা বেড়ে দাঁড়ায় ৩৫ জনে। নভেম্বর মাসে এই সংখ্যা আরো বেড়ে দাঁড়ায় ৩১০ জনে। এরমধ্যে সৌদি আরবে ১৯৭ জন, সংযুক্ত আরব আমিরাতে ১৬ জন, ওমানে ৭৬ জন। সবমিলিয়ে করোনা পরবর্তী সময়ে বিদেশে পাড়ি জমান ৩৬৮ জন নারী শ্রমিক। অথচ ২০১৯ সালের একই সময়ে গিয়েছিলেন ৪৫ হাজারের বেশি নারী শ্রমিক। তবে ২০১৯ সালে মোট শ্রমিক গিয়েছে ১ লাখ ৪ হাজার ৭৮৬ জন।

এ দিকে গতবছর নারী শ্রমিক প্রেরণের হার অনেক কম থাকলেও চলতি বছরের শুরু থেকেই নারী কর্মী যাওয়ার হার বাড়ছে বলে জানিয়েছে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থাণ মন্ত্রণালয়ের রেজিস্ট্রেশন বিভাগ (ঢাকা ডিভিশন)।

গতকাল রোববার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা নয়া দিগন্তকে জানান, প্রায় ১৫-২০ দিন থেকে নারী শ্রমিকের বিদেশ যাওয়ার হার বাড়ছে। প্রতিদিন তারা রেজিস্ট্রেশন এবং ফিঙ্গার করানোর জন্য আমাদের এখানে এসে লম্বা লাইন ধরছেন। এরমধ্যে বোয়েসেলের মাধ্যমে জর্ডানগামী নারী কর্মীর সংখ্যা বেশি। এ ছাড়া বেসরকারিভাবে সৌদি আরব, ওমান, কাতার, হংকং এবং দুবাইগামী কর্মীরা ফিঙ্গার করাতে আসছেন। তবে বুয়েটের তৈরি সার্ভারের জটিলতায় একটি রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করতে কমপক্ষে ২০ মিনিটের মতো সময় লেগে যাচ্ছে। এরপরও অনেকের বিস্তারিত তথ্য গরমিল থাকায় তাদের আমরা ঠিকমতো সার্ভিস দিতে পারছি না। বাধ্য হয়ে তারা ফিরে যান। পরে ৩-৪ দিন পর তারা সব তথ্য নিয়ে এলে আবার রেজিস্ট্রেশন করানো হচ্ছে। তারপরও গড়ে প্রতিদিন এক শ’র মতো নারী কর্মীর রেজিস্ট্রেশন এবং ফিঙ্গারিং হচ্ছে বলে জানান তিনি।

https://www.dailynayadiganta.com/first-page/556538