রাজশাহী : পদ্মার জেগে উঠা চরে চলছে হালচাষ। গতকাল পবা উপজেলার এই দৃশ্য ধারণ করেন সোহরাব হোসেন সৌরভ
১৮ জানুয়ারি ২০২১, সোমবার, ১২:০০

রাজশাহীতে শুষ্ক মওসুমের শুরুতেই পদ্মার বুকজুড়ে চর আর চর

শুষ্ক মওসুমের শুরুতেই রাজশাহীতে পদ্মার বুকজুড়ে চরের বিপুল বিস্তার ঘটে চলেছে। নদী তার স্বাভাবিক গতি ও চরিত্র হারিয়ে এখন মাছের বদলে চলছে ফসলের আবাদ।

রাজশাহীতে পদ্মা নদী ও সাধারণ মানুষের জীবন-জীবিকা যেন একই সুতোয় গাঁথা। তবে ফারাক্কার প্রভাবে পদ্মা তার যৌবন হারিয়েছে বহু আগেই। বছরের সর্বোচ্চ তিন মাস পানিতে টইটম্বুর থাকে পদ্মা। বাকি সময় কেবলই ধূ-ধূ বালুচর। নদীর এপার-ওপার ঘিরে কেবল ছোট নালার মতো পানি দেখা যায়। এবারও তাই হয়েছে। শুষ্ক মওসুমের শুরুতেই পদ্মা এখন পানিশূন্য। বালুর স্তরে স্তরে আটকে আছে মাঝিদের ডিঙি নৌকা। ওপারের চরের মানুষ দুর্গম পথ মাড়িয়ে হেঁটে আসছেন এপারে। আর বিশাল বালুরাশির ওপর দিয়ে চলছে গরু-মহিষের গাড়ি। অথচ বছর দশেক আগেও এই সময়ে পদ্মায় জোয়ার থাকতো। পানিরাশির অপার সৌন্দর্য হারিয়ে পদ্মা এখন শুধুই মরুভূমি। তবে পদ্মার জেগে ওঠা সেই চরও এরইমধ্যে শস্য শ্যামলা হয়ে উঠতে শুরু করেছে। সরেজমিন দেখা যায়, রাজশাহীর পদ্মা গার্ডেনের নিচ থেকে শুরু করে পশ্চিমে একেবারে শ্রীরামপুর এলাকা পর্যন্ত শত শত হেক্টর জমিতে এবার বিভিন্ন ধরনের ফসল ফলানো হচ্ছে। সেখানে বিভিন্ন ফসল ফলিয়ে আবারও ঘুরে দাঁড়াতে চান নদীভাঙা মানুষেরা। চরে জন্মানো আগাছা কেটে তৈরি করা হচ্ছে আবাদি জমি। সেখানে রীতিমতো চাষ করা হবে ধান, গম, ভুট্টা, মসুর, মটর, পেঁয়াজ, রসুন, বাঁধাকপি, ফুলকপি, লাউ, টমেটো, শিমসহ নানা ধরনের শাকসবজি। পবার মধ্যচরের একজন চাষি জানান, গত বর্ষা মওসুমে নদী ভাঙনের কবলে পড়ে বাপ-দাদার বসত-ভিটা হারান চরাঞ্চলের অনেক মানুষ। জীবন ও জীবিকার লড়াইয়ে বিভিন্ন স্থানে চলে যায় অনেক পরিবার। তবে নদীতে চর পড়ায় তারা আবারও ফিরে এসেছেন। দিন-রাত এক করে চরের বুকে ফসলের আবাদ শুরু করেছেন। পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় শ্যালো মেশিন বসিয়ে নদীবক্ষ থেকে পানি তুলে সেচ দিয়েছেন। পরিত্যক্ত চরে ফলিয়েছেন সবুজ ফসল। রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর বলছে, রাজশাহী জেলার পদ্মার চরে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার হেক্টর জমিতে এবার বিভিন্ন ফসল চাষাবাদ হচ্ছে। এ বছর রাজশাহী জেলার পবা, গোদাগাড়ী, বাঘা ও চারঘাট উপজেলার বিভিন্ন চরের কৃষি কাজ চলছে।

https://dailysangram.com/post/440902