২৩ মার্চ ২০১৭, বৃহস্পতিবার, ৯:৪২

রাজশাহীতে প্রকৌশলীকে থাপ্পড় মারলেন আ’লীগ নেতা

রাজশাহীর বাগমারা উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাকিরুল ইসলাম সান্টুর বিরুদ্ধে প্রকৌশল কর্মকর্তাকে চড়-থাপ্পড় মারার অভিযোগ পাওয়া গেছে। চরম হেনস্থার শিকার বিএমডিএর বাগমারা উপজেলা অফিসের সহকারী প্রকৌশলী রেজাউল করিম মঙ্গলবার রাতে সান্টুর বিরুদ্ধে থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন।
এদিকে ঘটনার পর থেকে উপজেলা পরিষদের সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীরা কয়েক দফা নিজেদের মধ্যে সভা করে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তারা ঘটনার প্রতিকার দাবিতে কর্মবিরতিতে যাওয়ার কথা ভাবছেন বলেও জানা গেছে।


বিএমডিএর সহকারী প্রকৌশলী রেজাউল করিম বাগমারা থানায় দেয়া তার অভিযোগে জানান, মঙ্গলবার দুপুরে বাগমারার ভবানীগঞ্জ পৌর যুবলীগের সভাপতি ফেরদৌস রহমান কয়েকজন ক্যাডারসহ তার দফতরে আসেন। যুবলীগ ক্যাডাররা একটি গভীর নলকূপের পাওয়ার বাড়িয়ে দেয়ার জন্য তার কাছে তদবির করেন। এ সময় রেজাউল করিম তাদের জানান, গভীর নলকূপের পাওয়ার বাড়াতে হলে উপজেলা সেচ কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত নিতে হবে। যুবলীগ ক্যাডাররা অফিস ত্যাগের কিছুক্ষণ পর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সান্টু লোক দিয়ে বিএমডিএ’র প্রকৌশলীকে তার অফিসে তলব করেন। সেখানে গেলে সান্টু জানতে চান কেন গভীর নলকূপের পাওয়ার বাড়িয়ে দেয়া হয়নি। প্রকৌশলী রেজাউল তাকেও অনুমোদনের কথা বলেন। এ সময় সান্টু ক্ষিপ্ত হয়ে রেজাউলকে প্রথমে চড়-থাপ্পড় ও পরে লাথি মারতে মারতে অফিসের দরজার সামনে নিয়ে আসেন। এ সময় সান্টুর ক্যাডাররাও রেজাউলকে কিল ঘুষি ও লাথি মারে। পরে বাগমারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাছরিন আক্তার ও উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রাজিবুর রহমান ছুটে গিয়ে সান্টু ও তার ক্যাডারদের কবল থেকে উদ্ধার করেন। সংশ্লিষ্টরা জানান, ঘটনার পরপরই বিএমডিএর প্রকৌশলী ও উপজেলা পরিষদের অন্য কর্মকর্তারা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের দফতরে গিয়ে মৌখিকভাবে অভিযোগ দিয়ে ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি করেন। তারা নিজেদের নিরাপত্তাহীনতার কথা জানিয়ে সরকারি কর্মকর্তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবি করেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিষয়টি দেখার কথা বলে তাদের বিদায় করেন। জানা গেছে, ঘটনার দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কোনো পদক্ষেপ না নেয়ায় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের মতামত নিয়ে রেজাউল করিম রাতে বাগমারা থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। এদিকে হেনস্থার শিকার কর্মকর্তা বুধবার বাগমারা উপজেলা পরিষদে তার দায়িত্ব পালনে নিরাপত্তাহীন অবস্থার কথা উল্লেখ করে বিএমডিএ’র চেয়ারম্যান, রাজশাহী জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের পৃথক চিঠি দিয়েছেন। বাগমারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাছরিন আক্তার যুগান্তরকে বলেন, ঘটনার কথা মৌখিকভাবে শুনেছি। আমাকে কেউ কাছে এখন পর্যন্ত লিখিতভাবে অভিযোগ করেননি।


এদিকে ঘটনার ব্যাপারে জানতে চাইলে বাগমারা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাকিরুল ইসলাম সান্টু বলেন, বিএমডিএ’র সহকারী প্রকৌশলী রেজাউল করিমকে কথা না শোনার জন্য হালকা শাসন করা হয়েছে। তার গায়ে হাত দেয়া হয়নি। চড়-থাপ্পড়ের কথা কেউ বলে থাকলে বাড়িয়ে বলেছে।

http://www.jugantor.com/last-page/2017/03/23/111336