শুভগাছায় এ বছর নির্মিত সেতুটি বন্যার পানির তোড়ে দেবে গেছে : নয়া দিগন্ত
২ জুলাই ২০২০, বৃহস্পতিবার, ১২:৪১

মধ্যাঞ্চলে বন্যার অবনতির শঙ্কা

নদ-নদীর ১০১টি পর্যবেক্ষণ পয়েন্টের ৫৩টিতে বেড়েছে পানি

গঙ্গা-পদ্মা অববাহিকায় নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। আগামী ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত এটা অব্যাহত থাকতে পারে। ইতোমধ্যে পদ্মার গোয়ালন্দ অংশে বিপদসীমার ৩১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় মুন্সীগঞ্জের ভাগ্যকূল পয়েন্টে পদ্মা নদীর পানি বিপদসীমা অতিক্রম করতে পারে। অন্য দিকে আগামী ১২ ঘণ্টার মধ্যে মানিকগঞ্জের আরিচা পয়েন্টে যমুনার পানি বিপদসীমা অতিক্রম করতে পারে। এ অবস্থায় আগামী ২৪ ঘণ্টায় টাঙ্গাইল, মানিকগঞ্জ, ফরিদপুর ও রাজবাড়ীর নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র। তবে কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, বগুড়া, জামালপুর ও সিরাজগঞ্জের পরিস্থিতি স্থিতিশীল রয়েছে। গতকাল বুধবার বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী মো: আরিফুজ্জামান ভূঁইয়া গতকাল দুপুরে জানান, সকাল ৯টার তথ্য অনুযায়ী নদীগুলোর ১০১টি পর্যবেক্ষণ পয়েন্টের মধ্যে ৫৩টিতে বেড়েছে পানি। ৪৭টি পয়েন্টে কমেছে; স্থিতিশীল রয়েছে একটি পয়েন্টে। বিপদসীমার ওপরে পানি বয়ে যাচ্ছে ১৪ পয়েন্টে। ব্রহ্মপুত্র-যমুনার পানি স্থিতিশীল থাকলেও গঙ্গা-পদ্মার পানি বেড়েছে। মেঘনা অববাহিকায় পানি কমছে।

ধরলা নদীর কুড়িগ্রাম অংশে বিপদসীমার ৪১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। সেই সাথে ঘাঘটের গাইবান্ধা অংশে ৫০ সেন্টিমিটার, ব্রহ্মপুত্রের নুনখাওয়া অংশে ৫২ সেন্টিমিটার, ব্রহ্মপুত্রের চিলমারী অংশে ৬৩ সেন্টিমিটার, যমুনার ফুলছড়ি অংশে ৭৯ সেন্টিমিটার, যমুনার বাহাদুরাবাদ অংশে ৮৪ সেন্টিমিটার, যমুনার সারিয়াকান্দি অংশে ৬৭ সেন্টিমিটার, যমুনার কাজিপুর অংশে ৭০ সেন্টিমিটার, আত্রাইয়ের বাঘাবাড়ি অংশে ৩৪ সেন্টিমিটার, ধলেশ্বরীর এলাসিন অংশে ৩২ সেন্টিমিটার, পদ্মার গোয়ালন্দ অংশে ৩১ সেন্টিমিটার, সুরমার সুনামগঞ্জ অংশে ৯ সেন্টিমিটার এবং পুরাতন সুরমার দিরাই অংশে বিপদসীমার ১৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।

আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, মৌসুমি বায়ু দেশে সক্রিয় থাকায় কোথাও কোথাও বৃষ্টি হচ্ছে। বুধবার কুমারখালীতে সর্বোচ্চ ৩৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। আগামী কয়েক দিনও এমন আবহাওয়া থাকতে পারে। পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় রংপুর, চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায়; ঢাকা, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রাজশাহী বিভাগের দুয়েক জায়গায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে। মঙ্গলবার সকাল ৯টা থেকে বুধবার সকাল ৯টা পর্যন্ত সময়ে ছাতকে ১৭৫ মিলিমিটার, সুনামগঞ্জে ১২১, লাটুতে ১২০, কানাইঘাটে ৮৬, জকিগঞ্জে ৭০ ও লালখানে ৪৮ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। একই সময়ে বাংলাদেশ সংলগ্ন ভারত অংশের সিলচরে ১১৭ ও গ্যাংটকে ৩৩ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।

বগুড়ায় ৮০ হাজার মানুষ পানিবন্দী

বগুড়া অফিস ও সারিয়াকান্দি সংবাদদাতা জানান, জেলার সারিয়াকান্দি, সোনাতলা ও ধুনট উপজেলায় প্রায় ৮০ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। যমুনায় পানি বেড়ে সারিয়াকান্দিতে বুধবার বিপদসীমার ৬৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। এতে উপজেলার যমুনা চরের ৬টি ইউনিয়নের প্রায় ৬০ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়ে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাসেল মিয়া চন্দনবাইমা ওকাজলা ইউনিয়নের বাঁধে আশ্রয় নেয়া দুই শতাধিক পরিবারের মধ্যে পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট ও পানির জার বিতরণ করেন।

এ ছাড়া সোনাতলায় যমুনা ও বাঙালি নদীতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, তিন ইউনিয়নের ২২ গ্রামের সাড়ে ১৭ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। তারা ঘরের মূল্যবান আসবাবপত্র নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। গত কয়েক দিনে সোনাতলার যমুনা ও বাঙালি নদীতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। জানা যায়, সোনাতলা উপজেলার তেকানীচুকাইনগর ইউনিয়নের ১৪টি গ্রামের প্রায় ১০ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। এ ছাড়াও পাকুল্লা ইউনিয়নের ৬ গ্রামের ৫ হাজার এবং মধুপুর ইউনিয়নের দুই গ্রামের আড়াই হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। সোনাতলা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা জিয়াউর রহমান জানান, এই পরিস্থিতিতে ২০ টন চাল বরাদ্দ পাওয়া গেছে। এ ছাড়াও নগদ ১ লাখ ৬৩ হাজার ৫০০ টাকা বুধবার থেকে বিতরণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এ ছাড়া ধুনট উপজেলার ভাণ্ডারবাড়ী ইউনিয়নের বৈশাখীর চরসহ কয়েকটি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। এ দিকে গতকাল জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান জানান, বুধবার দুপুরে যমুনা নদীর পানি বেড়ে ৬৬ সেন্টিমিটার বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। বর্তমানে যমুনার পানি স্থিতিশীল। আগামী এক সপ্তাহ নদীর পানি না বা
ড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

ইসলামপুরে নিখোঁজ শিশু ভাইবোন

জামালপুর সংবাদদাতা জানান, জামালপুরে সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। ব্রহ্মপুত্র, ঝিনাইসহ শাখা নদীর পানি বেড়েছে। কিন্তু যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি না পেলেও গতকাল বুধবার বেলা ৩টায় জেলার দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার বাহাদুরাবাদ পয়েন্টে যমুনার পানি বিপদসীমার ৮২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। এ দিকে গতকাল দুপুরে ইসলামপুর উপজেলার পাথর্শী ইউনিয়নের হারিয়াবাড়ি গ্রামের আনোয়ার হোসেনের ছেলে আল আমিন (৭) ও মেয়ে আলফিন (৬) বন্যার পানিতে ডুবে নিখোঁজ হয়েছে।

জানা গেছে, এ পর্যন্ত দুর্গত এলাকায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৬০ মেট্রিক টন চাল ও নগদ পাঁচ লাখ টাকা বিতরণ করা হয়েছে। তবে তা প্রয়োজনের তুলনায় একেবারেই অপ্রতুল বলে অভিযোগ করেছেন বন্যার্ত মানুষ।

গোয়াইনঘাটে পরিস্থিতির অবনতি

গোয়াইনঘাট (সিলেট) সংবাদদাতা জানান, গোয়াইনঘাটে বন্যা পরিস্থিতির আবারো অবনতি হয়েছে। বরাক আর সুরমা নদীর প্রভাব পড়ছে উপজেলার দক্ষিণ এলাকায়। এতে কৃষকরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। গত কয়েক দিনের পাহাড়ি ঢল আর ভারী বৃষ্টিতে উপজেলা সদরের সাথে যোগাযোগ সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। এতে লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েন। গত সোমবার থেকে পানি কমতে থাকলে মোটামুটি স্বাভাবিক হয় যাতায়াত। কিন্তু গতকাল বুধবার সকাল থেকে বরাক ও সুরমা নদীর পানি বৃদ্ধির প্রভাব পড়ে উপজেলার দক্ষিণাঞ্চলে। বিশেষ করে পূর্ব আলীরগাঁও, পশ্চিম আলীরগাঁও, ডৌবাড়ী, ফতেপুর, নন্দীরগাঁও ও তোয়াকুল ইউনিয়নে। এ দিকে পিয়াইন ও সারী নদীতে কিছুটা পানি বাড়ায় পূর্ব আলীরগাঁও ও পশ্চিম আলীরগাঁও ইউনিয়নের একাংশ, পূর্ব জাফলং, পশ্চিম জাফলং এবং রস্তমপুর ইউনিয়নে পানি বাড়ছে। সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, রোপা আউশ, বোনা আমন এবং আমনের বীজতলার শতভাগ ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। এ ছাড়া শাকসবজির বাগান পুরোটাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। উপজেলার কয়েক হাজার ছোট-বড় ফিশারির মাছ বন্যার পানিতে ভেসে গেছে। সব মিলিয়ে কয়েক শত কোটি টাকার ক্ষতিসাধিত হয়েছে। জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: নাজমুস সাকিব জানান, বুধবার আবার কিছু
পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে বিপদসীমার ওপরে যায়নি। তিনি বলেন, এ পর্যন্ত ৩৫ টন চাল বিতরণ করা হয়েছে।

কাজীপুরে যমুনার পানি বিপদসীমার ওপরে

কাজীপুর (সিরাজগঞ্জ) সংবাদদাতা জানান, কাজীপুরে পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় যমুনার কাজীপুর পয়েন্টে পানি বেড়ে বিপদসীমার ৬৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। নতুন করে আরো বাড়িঘর পানিতে তলিয়ে গেছে। শুভগাছা ইউনিয়নের বীরশুভগাছায় এ বছর নির্মিত সেতুটি বন্যার পানির তোড়ে দেবে গেছে। সোমবার থেকে সেখানে পাউবো এবং স্থানীয় লোকজন সেতুটি রক্ষায় কাজ করলেও শেষ রক্ষা হয়নি। সেতুটির পাশের পুরনো ওয়াপদা বাঁধেও ধস নেমেছে। এ দিকে চরগিরিশ ইউনিয়নের যোগাযোগের একমাত্র পাকা রাস্তার জোড়া সেতুটি পানিতে তলিয়ে গেছে। পাশাপাশি দু’টি সেতু একসাথে হওয়ায় স্থানীয়রা এটিকে জোড়া ব্রিজ বলে। চরগিরিশ ইউনিয়ন আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক জানান, বন্যার পানি নেমে গেলে ব্রিজটির সংস্কার জরুরি। এ দিকে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে নিশ্চিন্তপুর ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে।

সরাইলে অটো রাইস মিল নদীতে বিলীন

সরাইল (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) সংবাদদাতা জানান, সরাইলে মেঘনা নদীভাঙনে সহস্রাধিক বস্তা ধানসহ একটি অটোরাইস মিল নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। গতকাল বুধবার সকালে উপজেলার পানিশ্বর ইউনিয়নের শাখায়তি উত্তরপাড়ার ৩ নম্বর ওয়ার্ডে শাহ পরান অটো রাইস মিলের একটি বৃহৎ অংশ নদীতে বিলীন হয়ে যায়। জানা যায়, মেঘনার তীরে অবস্থিত ওই রাইস মিলের মালিক মৃত হাজী দুলাল মিয়ার ছেলে নাসির উদ্দিনের কাছ থেকে আলী হোসেন নামে এক ব্যক্তি মিলটি ভাড়া নিয়ে পরিচালনা করে আসছেন। প্রক্রিয়াজাত করার উদ্দেশ্যে মজুদ করে রাখা সহস্রাধিক বস্তা ধানসহ মিলটির বৃহৎ অংশ হঠাৎ নদীতে হঠাৎ তলিয়ে যায়। এ সময় ওই মিলের শ্রমিক ও স্থানীয় এলাকাবাসী প্রাণপণ চেষ্টা করে কয়েক শ’ বস্তা ধান পানির নিচ থেকে উদ্ধার করতে পারলেও বাকি ধান উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।

কুড়িগ্রামে পরিস্থিতির উন্নতি

কুড়িগ্রাম সংবাদদাতা জানান, কুড়িগ্রামে ধরলা, ব্রহ্মপুত্র, নুনখাওয়াসহ ১৬টি ছোট-বড় নদনদীর পানি কমতে শুরু করেছে। তবে এখনো বিপদসীমার অনেক ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে ধরলা, নুনখাওয়া ও ব্রহ্মপুত্র নদে। নদনদীগুলোর অববাহিকায় চর এবং আশপাশে গ্রামগুলো জলাবদ্ধ হয়ে পড়েছে। পানিতে তলিয়ে গেছে কাঁচা-পাকা অনেক সড়ক। জেলার ৭৩টি ইউনিয়নের মধ্যে ৫৫টি ইউনিয়ন এখন প্লাবিত। ৩৫৭টি গ্রামে পানিবন্দী হয়েছে প্রায় দেড় লাখ মানুষ। বন্যাকবলিত মানুষজন অনেকে স্কুল, বাঁধ, সড়ক ও উঁচু স্থানে আশ্রয় নিয়েছে। দুর্গতরা সঙ্কটে ভুগছে বিশুদ্ধ পানি, খাবার ও গোখাদ্যের। পয়ঃনিষ্কাশনের স্থান তলিয়ে যাওয়া বিশেষ করে সঙ্কটে পড়েছে নারীরা।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের এসডি মাহমুদ হাসান জানান, গতকাল থেকে সব ক’টি নদনদীর পানি হ্রাস পেয়েছে। ব্রহ্মপুত্র নুনখাওয়া পয়েন্টে ৫৩ সেন্টিমিটার, ব্রহ্মপুত্র চিলমারী পয়েন্টে ৬৪ সেন্টিমিটার, ধরলা সদর পয়েন্টে ৪৩ সেন্টিমিটার বিপদসীমার ওপর দিয়ে এবং তিস্তা নদী কাউনিয়া পয়েন্টে ৪২ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। বন্যায় বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ২৯.৫ কিলোমিটার।

পাটুরিয়ায় ফেরি চলাচল বিঘিœত

শিবালয় (মানিকগঞ্জ) সংবাদদাতা জানান, মানিকগঞ্জের পদ্মা-যমুনায় অস্বাভাবিক পানি বৃদ্ধিতে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া ও কাজিরহাট নৌরুটে ফেরি, লঞ্চ, কার্গো চলাচল মারাত্মক বিঘিœত হচ্ছে। যমুনার পানি আরিচা পয়েন্টে গত ২৪ ঘণ্টায় ১৯ ও বাঘাবাড়ি পয়েন্টে ১৩ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বুধবার দুপুরে বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। এর প্রভাবে যমুনার শাখা ইছামতি, কালীগঙ্গা, ধলেশ্বরী নদীতে অনুরূপ পানি বৃদ্ধিতে জেলার নিম্নাঞ্চলে আবাদকৃত বোরোধান তলিয়ে গেছে। আরিচা-জাফরগঞ্জ বাঁধ ও দাশকান্দী সড়কের কয়েক স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে।

বিআইডব্লিউটিসি আরিচা অঞ্চলের ডিজিএম জিল্লুর রহমান জানান, পাটুরিয়ায় তিনটি ঘাটে ফেরিতে যানবাহন ওঠানামা ব্যাহত হচ্ছে। ৫ নম্বর ঘাটের পন্টুনের ওপর দিয়ে পানি গড়াচ্ছে। ঘাট কর্তৃপক্ষ তা উঁচু করার কাজ করছে। এ দিকে পদ্মায় প্রবল স্রোত ও ঘূর্ণাবর্তের কারণে ফেরির ট্রিপ টাইম বেড়ে গেছে। মাওয়া রুটে ফেরি সার্ভিস বন্ধ থাকায় পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া ঘাটে যানবাহন চাপ অনেকাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানিয়েছে, যমুনার আরিচা, বাঘাবাড়ি এবং পদ্মার গোয়ালন্দ ও ভাগ্যকূল পয়েন্টে আরো কয়েক দিন পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে।

https://www.dailynayadiganta.com/first-page/512397