১০ জুন ২০২০, বুধবার, ১০:১৭

প্রবৃদ্ধি চলতি অর্থবছরে হবে ১.৬ আর পরের বছর মাত্র ১ শতাংশ

বিশ্বব্যাংকের দুঃসংবাদ

বাংলাদেশের অর্থনীতি নিয়ে বেশ খারাপ সংবাদ দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। আন্তর্জাতিক এই সংস্থাটি বলেছে, চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি ১ দশমিক ৬ শতাংশে নেমে আসতে পারে। এ ছাড়া আগামী ২০২০-২১ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি আরো কমে ১ শতাংশে আসতে পারে বলে মনে করছে বিশ্বব্যাংক। বিশ্বব্যাংক মনে করে, দক্ষিণ এশিয়ায় করোনা পরিস্থিতি প্রকট হলে দারিদ্র্য বাড়বে। গত সোমবার মধ্য রাতে বিশ্বব্যাংকের জুনের ‘গ্লোবাল ইকোনমিক প্রসপেক্টাস ২০২০’ শিরোনামের এই প্রতিবেদন এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। তাতে বলা হচ্ছে, বিশ্বের বৃহৎ সব অর্থনীতির দেশগুলোর মাথাপিছু আয় রেকর্ড পরিমাণে কমবে, যা হবে ১৮৭০ সালের পর সর্বনিম্ন।

এর আগে গত ১১ মে বিশ্বব্যাংকের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, করোনার কারণে চলতি অর্থবছরে (২০১৯-২০২০) দেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ২ থেকে ৩ শতাংশ হতে পারে। শুধু তা-ই নয়, এর পরের অর্থবছরে (২০২০-২০২১) প্রবৃদ্ধি আরো কমে হবে ১ দশমিক ২ শতাংশ থেকে ২ দশমিক ৩ শতাংশ। তারপরের অর্থবছরে (২০২১-২০২২) এই প্রবৃদ্ধি কিছুটা বেড়ে ২ দশমিক ৮ থেকে ৩ দশমিক ৯ শতংশ হতে পারে।

ওয়াশিংটন থেকে প্রকাশিত বিশ্বব্যাংকের ‘সাউথ এশিয়া ইকোনমিক ফোকাস’ প্রতিবেদনে এই তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে চলতি বছর এই প্রবৃদ্ধি ৫ দশমিক ২ শতাংশ এবং আগামী অর্থবছরে তা বেড়ে ৮ দশমিক ২ শতাংশ হবে বলে প্রাক্কলন করা হয়েছে।

এ দিকে বিশ্বব্যাংকের রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, মহামারী কোভিড-১৯ বিশ্ব অর্থনীতিকে ভয়াবহ মন্দার মুখে ফেলে দিয়েছে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর যা আর কখনোই ঘটেনি। মারাত্মক এ সঙ্কটে চলতি বছরে বিশ্ব অর্থনীতি ৫ দশমিক ২ শতাংশ সঙ্কুচিত হবে।

বিশ্বব্যাংকের ওই প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, ‘দেশীয় চাহিদা এবং সরবরাহ, বাণিজ্য ও আর্থিক কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হওয়ায় ২০২০ সালে বিশ্বে উন্নত অর্থনীতির দেশগুলোর অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড ৭ শতাংশ হ্রাস পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।’

‘এ ছাড়া উদীয়মান বাজার এবং উন্নয়নশীল অর্থনীতির (ইএমডিই) দেশগুলোর অর্থনীতি এই বছর ২ দশমিক ৫ শতাংশ সঙ্কুচিত হওয়ারও আশঙ্কা করা হচ্ছে। একসাথে এই শ্রেণীভুক্ত দেশগুলোর হিসেবে কমপক্ষে বিগত ষাট বছরে প্রথম কোনো সঙ্কোচনের ঘটনা ঘটতে যাচ্ছে’ বলে প্রতিবেদনে পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে।

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ‘চলতি বছর মাথাপিছু আয় ৩ দশমিক ৬ শতাংশ কমে যাবে, যা এই বছর লাখ লাখ মানুষকে চরম দারিদ্র্যের দিকে ঠেলে দেবে।’ বিশ্বব্যাংকের সংজ্ঞা অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তি যদি দিনে ১ দশমিক ৯০ ডলার বা ১৬১ টাকার চেয়ে কম অর্থে জীবনযাপন করেন তবে তা চরম দারিদ্র্যসীমার নিচে।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, ‘এই মহামারী সবচেয়ে বেশি আঘাত হেনেছে সেসব দেশের অর্থনীতিতে যেখানে ভাইরাসটির সংক্রমণ সবচেয়ে মারাত্মক এবং যেসব দেশ বিশ্ববাণিজ্য, পর্যটন, পণ্য রফতানি এবং বাহ্যিক অর্থায়নের ওপর অতিরিক্ত মাত্রায় নির্ভরশীল।’

https://www.dailynayadiganta.com/first-page/507237/