২০ মে ২০২০, বুধবার, ৩:২৮

না’গঞ্জে গার্মেন্ট শ্রমিকদের হামলার শিকার সিভিল সার্জন ও স্বাস্থ্য কর্মকর্তা

গাড়ি ভাঙচুর, দুই চালক রক্তাক্ত

নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় একটি গার্মেন্টে করোনা পরিস্থিতি পরিদর্শনে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছেন নারায়ণগঞ্জ সিভিল সার্জন ও করোনা ফোকাল পার্সন উপজেলা পরিবার পরিবকল্পনা কর্মকর্তা। এ সময় বিক্ষুদ্ধ শ্রমিকরা তাদের গাড়ি ভাঙচুর করে। শ্রমিকদের ইট-পাটকেলের আঘাতে মাথা ফেটে রক্তাক্ত হয়েছে দু’জনের ব্যক্তিগত গাড়িরচালক। সিভিল সার্জন কোনো মতে রক্ষা পেলেও স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে ঘণ্টাব্যাপী অবরুদ্ধ করে রাখে শ্রমিকরা। পরে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে। তবে স্থানীয় সূত্র জানায়, সিভিল সার্জন যখন পরির্দশনে যান, সেসময় বোনাস নিয়ে অসন্তোষ চলছিল ওই পোশাক কারখানায়। ফলে শ্রমিক অসন্তোষের মধ্যে পড়ে বিক্ষুব্ধদের হাতে আক্রান্ত হয়েছেন তারা। গতকাল মঙ্গলবার বেলা সোয়া ১১টার দিকে ফতুল্লা কাইউমপুর ফকির নিটওয়্যারে ওই ঘটনা ঘটে।

জানা যায়, ফকির নিটওয়্যারে ১০ জন শ্রমিক করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। কেন শ্রমিকরা করোনায় আক্রান্ত হচ্ছে এবং পরিস্থিতি কী তা পরিদর্শনে যান সিভিল সার্জন ও স্বাস্থ্য কর্মকর্তা। ওই সময় বোনাসের দাবিতে আন্দোলন করছিল শ্রমিকরা। এই অসন্তোষের সময় বিক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা সামনে পেয়ে সিভিল সার্জন ও সদর উপজেলার স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার গাড়ি ভাঙচুর চালিয়েছে। ওই সময়ে দু’কর্মকর্তার গাড়িচালক মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে রক্তাক্ত জখম হয়েছেন। বিক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা তাদের মালিকপক্ষের লোক ভেবে বেতন বোনাস নিয়ে আন্দোলন করা শ্রমিকেরা সিভিল সার্জন ও জাহিদুলের গাড়ি লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। কারখানায় নির্মাণকাজে ব্যবহৃত রড ও লাঠিসোটা নিয়ে হামলা চালায়। হামলায় সিভিল সার্জনের গাড়িরচালক সুরজ্জামানের মাথা ফেটে যায় এবং স্বাস্থ্য কর্মকর্তার গাড়িরচালক জালাল মিয়া আহত হন। শ্রমিকেরা জাহিদুল ইসলামকে অবরুদ্ধ করে রাখেন। সিভিল সার্জন তার গাড়ি নিয়ে কারখানা থেকে বেরিয়ে আসতে সক্ষম হন।

শ্রমিক ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সদর উপজেলার ফতুল্লার কায়েমপুরে ফকির নিটওয়্যারে গত কয়েক দিন ধরেই শ্রমিক অসন্তোষ দেখা দেয়। শ্রমিকদের দাবি, বোনাস প্রদান নিয়ে গার্মেন্ট কারখানা টালবাহনা করছে। গত দুই মাস ধরে লকডাউনের মধ্যে কাজ করার পরেও আমাদের হাফ বোনাস দিতে চায়। শ্রমিকেরা এটা প্রত্যাখান করেছে। তারা বলছেন, শ্রমিকেরা তো হাফ কাজ করেনি। শ্রমিকেরা পুরো সময় ধরেই কাজ করেছে। জিএম ও এডমিন মূলত টালবাহনা করছে।

নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার জায়েদুল ইসলাম বলেন, কারখানায় মূলত বেতন ও বোনাসের দাবিতে শ্রমিক অসন্তোষ চলছিল। সিভিল সার্জন ও স্বাস্থ্য কর্মকর্তা সেখানে গেলে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের সামনে পড়ে গেলে তারা হামলার শিকার হন।

https://www.dailynayadiganta.com/last-page/503114