১ এপ্রিল ২০২০, বুধবার, ৯:১১

মৃতের সংখ্যা ৩৯ হাজার ছাড়াল আক্রান্ত ৮ লাখের বেশি

* কঙ্গোর সাবেক প্রেসিডেন্টের মৃত্যু
* স্পেনে ২৪ ঘণ্টায় মারা গেলেন ৮৪৯
* ইতালিতে ৬৩ চিকিৎসকের মৃত্যু
স্টাফ রিপোর্টার : বিশ্বজুড়ে করোনা ভাইরাসে মৃতের সংখ্যা ৩৯ হাজার ছাড়িয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার বাংলাদেশ সময় রাত পৌনে ৮টা পর্যন্ত আন্তর্জাতিক জরিপ পর্যালোচনাকারী সংস্থা ওয়ার্ল্ড ওমিটার এ তথ্য জানিয়েছে। সংস্থাটির ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, করোনা ভাইরাস বৈশ্বিক মহামারিতে এ পর্যন্ত বিশ্বের ২০০টি দেশ ও অঞ্চল আক্রান্ত হয়েছে। বিভিন্ন দেশের সরকারি হিসাব অনুযায়ী, এ পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৮ লাখ ৫ হাজার ৩৭৭। এর মধ্যে ৩৯ হাজার ৪ শত ৬৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। চিকিৎসা গ্রহণের পর সুস্থ হয়ে উঠেছেন এক লাখ ৭২ হাজার ৪৩৬ জন।

২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশের রাজধানী উহান থেকে ছড়িয়ে পড়ে করোনা ভাইরাস। উৎপত্তিস্থল চীনে ৮০ হাজারেরও বেশি মানুষ আক্রান্ত হলেও সেখানে ভাইরাসটির প্রাদুর্ভাব কমে গেছে। তবে বিশ্বের অন্যান্য দেশে এই ভাইরাসের প্রকোপ বাড়ছে। চীনের বাইরে করোনা ভাইরাসের প্রকোপ ১৩ গুণ বৃদ্ধি পাওয়ার প্রেক্ষাপটে গত ১১ মার্চ দুনিয়াজুড়ে মহামারি ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।

ওয়ার্ল্ড ওমিটার জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি আক্রান্তের সংখ্যা যুক্তরাষ্ট্রে। সেখানে মোট এক লাখ ৬৪ হাজার ৩৫৯ জন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। মৃত্যু হয়েছে তিন হাজার ১৭৩ জনের। তবে মৃতের হিসাবে শীর্ষে রয়েছে ইতালি। দেশটিতে মৃতের সংখ্যা ১১ হাজার ৫৯১। আর আক্রান্ত হয়েছেন এক লাখ এক হাজার ৭৩৯ জন। মৃতের হিসাবে তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে স্পেন। দেশটিতে মৃতের সংখ্যা সাত হাজার ৭১৬। মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৮৭ হাজার ৯৫৬। স্পেনের পর সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে চীনে। দেশটিতে আক্রান্ত হয়েছেন ৮১ হাজার ৫১৮ জন। এর মধ্যে তিন হাজার ৩০৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। তবে চীনের বিরুদ্ধে প্রকৃত পরিস্থিতি গোপনের অভিযোগ রয়েছে। উহানের একজন স্বেচ্ছাসেবী বলেন, ‘বুদ্ধি-বিবেচনাসম্পন্ন যেকোনও মানুষ এই সংখ্যা (সরকারি পরিসংখ্যান) সন্দেহ প্রকাশ করবে।

অভিযোগের প্রেক্ষিতে নতুন সংক্রমণ গোপন না করতে কর্মকর্তাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী লি খোয়াচিয়াম। গত ২৩ মার্চ কর্মকর্তাদের প্রতি দেয়া তার এ সংক্রান্ত ভাষণ পরদিন ২৪ মার্চ সরকারি ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়। লি খোয়াচিয়াম বলেন, স্বচ্ছতার মানে হচ্ছে নতুন কেউ আক্রান্ত হলে অবশ্যই তা রিপোর্ট করা উচিত। যা ঘটেছে তাই বলা উচিত। কোনো কিছু অবশ্যই ধামাচাপা দেয়া হবে না।

করোনায় কঙ্গোর সাবেক প্রেসিডেন্টের মৃত্যু : করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আফ্রিকার দেশ কঙ্গো প্রজাতন্ত্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জ্যাকস জোয়াকিম ইয়োম্বি-ওপাঙ্গো মারা গেছেন। ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসের একটি হাসপাতালে সোমবার মৃত্যু হয় তার। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা এ খবর জনিয়েছে। এদিকে ৮১ বছর বয়সী ইয়োম্বি-ওপাঙ্গো করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার আগে থেকেই অসুস্থ ছিলেন বলে বার্তা সংস্থা এফপিকে জানায় তার পরিবার। ওপাঙ্গো কঙ্গোর উত্তর কুভেত্তে অঞ্চলে ১৯৩৯ সালে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৭৭ সাল থেকে ১৯৭৯ সাল পর্যন্ত দেশটির প্রেসিডেন্ট হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। এর আগে সেনাবাহিনীর একজন কর্মকর্তা ছিলেন ওপাঙ্গো। প্রেসিডেন্ট মারিয়েন এনগৌয়াবির মৃত্যুর পর ক্ষমতায় বসেন তিনি। প্রেসিডেন্ট সাসৌ এনগুয়েসোর বিরুদ্ধে অভ্যুত্থানের অভিযোগে ওপাঙ্গোকে ১৯৮৭ সাল থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত কারান্দী করে রাখা হয়। ১৯৯১ সালে দেশটিতে একটি জাতীয় সম্মেলনের আগে মুক্তি পান তিনি। ওই জাতীয় সম্মলেনের মধ্যদিয়ে দেশটিতে বহুদলীয় রাজনীতির আবির্ভাব ঘটে। এর মধ্যে র‌্যালি ফর ডেমোক্রেসি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট নামের একটি পার্টি প্রতিষ্ঠা করেন ওপাঙ্গো। কিন্তু ১৯৯২ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে পরাজিত হন তিনি। পরে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট প্যাসকেল লিসোউবার সঙ্গে যোগ দিয়ে ১৯৯৪ সাল থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন ওপাঙ্গো। ১৯৯৭ সালে কঙ্গোতে গৃহযুদ্ধ শুরু হলে ফ্রান্সে পালিয়ে যান ইয়োম্বি-ওপাঙ্গো। পরে ২০০৭ সালে নিজ দেশে ফেরেন তিনি। কিন্তু অসুস্থ থাকার কারণে অনেকটা সময় তাঁকে ফ্রান্সেও কাটাতে হয়।

স্পেনে ২৪ ঘণ্টায় মারা গেলেন আরও ৮৪৯ জন : লাশের সারি দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছে ইউরোপের দেশ স্পেনে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আরও ৮৪৯ জন মারা গেছেন। মঙ্গলবার ফরাসী বার্তাসংস্থা এএফপির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এ নিয়ে দেশটিতে করোনায় প্রাণ হারিয়েছেন মোট ৮ হাজার ১৮৯ এবং আক্রান্ত হয়েছেন ৯৪ হাজার ৪১৭ জন। করোনা ভাইরাসে প্রাণহানির এই তথ্য নিশ্চিত করে স্পেনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, দেশে নতুন করে আরও ৯ হাজারের বেশি মানুষ করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন। যা আগের দিনের সংক্রমণের চেয়ে ৩ হাজার বেশি।

করোনা মহামারিতে বিপর্যস্ত স্পেনের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা প্রায় ভেঙে পড়েছে। রোগীর সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ায় চিকিৎসকরা সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন। করোনা ভাইরাসের বিস্তার ঠেকানোর লক্ষ্যে দেশটিতে তিন সপ্তাহের লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। লকডাউনের মাঝেও দেশটির বিভিন্ন প্রান্তে করোনার প্রকোপ ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি করেছে। এই মুহূর্তে ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে ইতালির পরই করোনার সর্বোচ্চ প্রকোপ স্পেনে। ইতালিতে প্রাণঘাতী এই ভাইরাসে এখন পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ১ হাজার ৭৩৯ এবং মারা গেছেন ১১ হাজার ৫৯১ জন। অন্যদিকে, স্পেনে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ৯৪ হাজার ৪১৭ জনে পৌঁছেছে।

ইতালিতে একদিনে মৃত ৮১২ : প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসে ইতালিতে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৮১২ জন মৃত্যুর মিছিলে যোগ দিয়েছেন। এ নিয়ে দেশটিতে করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১১ হাজার ৫৯১ জন। একইসঙ্গে দেশটিতে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা এক লাখ ছাড়িয়ে গেছে। দেশটির সরকারি কর্তৃপক্ষের বরাতে এ সংবাদ দিয়ে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা। এদিকে গত একদিনে ইতালিতে নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন চার হাজার ৫০ জন। এ নিয়ে দেশটিতে করোনা পজিটিভ হলেন এক লাখ এক হাজার ৭৩৯ জন। আক্রান্তদের মধ্যে অবশ্য ১৪ হাজার ৬২০ জন সুস্থ হয়েছেন। তবে প্রায় তিন হাজার ৯৮১ জন হাজার করোনা আক্রান্ত রোগীর অবস্থা আশঙ্কাজনক।

মহামারি করোনা ভাইরাসে বিশ্বে সবচেয়ে বেশি মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে ইতালিতে। তবে প্রায় দেড় লাখ কোভিড-১৯ রোগী নিয়ে আক্রান্তের দিক থেকে সবার উপরে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটিতে প্রতিদিন কয়েক হাজার করে মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন। এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় আরেক মৃত্যুপুরী স্পেনেও ৮১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। সেখানে এখন পর্যন্ত মোট সাত হাজার ৩৪০ জন মারা গেছেন।

৬৩ চিকিৎসকের মৃত্যু: ইতালিতে শুধু সাধারণ মানুষ নয়, আক্রান্তদের সেবা দিতে গিয়ে দেশটির ৬৩ জন চিকিৎসকও প্রাণ হারিয়েছেন। সিএনএন এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইতালির চিকিৎসকদের সর্ববৃহৎ সংগঠন ইতালিয়ান অ্যাসোসিয়েশন অব ডক্টরস’ এর পক্ষ থেকে সোমবার বিকেলে এক আনুষ্ঠানিক ঘোষণায় এ তথ্য দেওয়া হয়। সংগঠনটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, যে ৬৩ জন চিকিৎসক করোনা ভাইরাস সংক্রমিত কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত রোগীদের সেবা দিতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন এরমধ্যে ৪১ জনই দেশটির উত্তরের লোম্বার্ডি অঞ্চলে। ওই অঞ্চলটিতেই সবচেয়ে বেশি মানুষের মৃত্যু হচ্ছে প্রতিদিন।

দিল্লিতে তাবলিগ জমায়েতে যোগ দেওয়া ২৪ জনের করোনা, মৃত্যু ৭: ভারতের দিল্লির নিজামুদ্দিন এলাকায় একটি মসজিদে তবলিগের জমায়েতের পর ২৪ জনের করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। মৃত মানুষের সংখ্যা বেড়ে সাতে পৌঁছেছে। ১৩ থেকে ১৫ মার্চ পর্যন্ত দিল্লিতে দেশটির তাবলিগ-ই-জামাতের কেন্দ্রীয় কার্যালয় মারকাজ নিজামুদ্দিনে প্রায় দুই হাজার মানুষ একসঙ্গে অবস্থান করেন। এরপর এ ঘটনা ঘটে। এনডিটিভি অনলাইনের খবরে জানানো হয়, করোনার উপসর্গ রয়েছে বলে আশঙ্কায় গতকাল সোমবার তিন শতাধিক মানুষকে হাসপাতালে পাঠানো হয়। আজ সকালে মারকাজ নিজামুদ্দিন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সেখানে থাকা ৭০০ জনকে বাসে করে নিয়ে শহরের বিভিন্ন এলাকায় কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে।

দিল্লির স্বাস্থ্যমন্ত্রী সত্যেন্দ্র জৈন এনডিটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘ওই জায়গায় থাকা ২৪ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। আয়োজকেরা গুরুতর অপরাধ করেছেন। লেফটেন্যান্ট গবর্নরকে আমরা কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছি।’ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জমায়েতের এই এলাকাকে করোনা ভাইরাসের ‘হটস্পট’ বলে চিহ্নিত করেছে। বিভিন্ন সূত্র বলছে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই এলাকাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ পরিস্থিতি নিয়ে ব্রিফিং করছেন।

দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল আজ মসজিদের ঘটনা নিয়ে জ্যেষ্ঠ মন্ত্রী ও কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলবেন। তিনি মসজিদ প্রশাসনের বিরুদ্ধে মামলা করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। প্রশাসনের অবহেলার কারণে শতাধিক জীবন ঝুঁকিতে রয়েছে। করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার সব নিয়ম উপেক্ষা করে ১০০ বছরের পুরোনো ওই মসজিদ চত্বরে শত শত মানুষ অবস্থান করছিলেন। ১৩ থেকে ১৫ মার্চ পর্যন্ত ছয়তলা ওই ডরমেটরিতে দুই দিন ধরে তাবলিগ-ই-জামাতের সদস্যরা অবস্থান করছিলেন। তাঁদের মধ্যে প্রায় ২৮০ জন ছিলেন বিদেশি। জমায়েতে অংশ নিয়েছিলেন তেলেঙ্গানা রাজ্যের এমন ছয়জন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। একজন মারা গেছেন শ্রীনগরে। জমায়েতে অংশ নেওয়ার পরে দিল্লি থেকে আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে যাওয়ার পরে ১০ জন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত বলে শনাক্ত হয়েছেন। কাশ্মীর থেকে শতাধিক মানুষ ওই জমায়েতে অংশ নিয়েছিলেন। তাঁদের খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে।

তাবলিগ-ই-জামাতের ওই জমায়েতে মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড, নেপাল, মিয়ানমার, কিরগিজস্তান এবং সৌদি আরব থেকে মানুষ এসে যোগ দেন। আফগানিস্তান, আলজেরিয়া, শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ, ইংল্যান্ড, ফিজি, ফ্রান্স এবং কুয়েত থেকেও সদস্যরা আসেন। জমায়েতে যোগ দেওয়ার পরে অনেকে দেশের বিভিন্ন জায়গায় ভ্রমণের জন্য চলে যান। শ্রীনগরে যে ইমাম করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন, তিনি কাশ্মীরে যাওয়ার পথে উত্তর প্রদেশের দেওবন্দে বেশ কয়েকটি জমায়েতে যোগ দিয়েছিলেন।

এনডিটিভির খবরে বলা হয় তাবলিগের সদস্যরা পুলিশকে জানিয়েছিলেন, ২৪ মার্চ ওই জমায়েত অনুষ্ঠিত হবে। সে সময়ে মসজিদ চত্বরে ১ হাজার ২০০ জনের মতো অবস্থান করছিলেন। এক দিন পরে পুলিশ তাঁদের বিমানবন্দরে নিয়ে যায়। ২৬ মার্চ লকডাউনের মধ্যে মসজিদ চত্বরে মানুষ জড়ো হতে থাকে। পুলিশ যখন ঘটনাস্থলে যায়, তখন সেখানে প্রায় ২ হাজার মানুষ ছিলেন। মারকাজ নিজামুদ্দিন এক বিবৃতিতে বলছে, ২২ মার্চ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির জনতা কারফিউ ঘোষণার পর জমায়েত বাতিল করা হয়েছিল। হঠাৎ ট্রেন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তাবলিগের সদস্যরা এলাকা ছাড়তে পারেননি। সরকারি কর্মকর্তারা বলছেন, লকডাউনের অনেক আগে থেকেই ধর্মীয়, সামাজিক, সাংস্কৃতিক জমায়েত বাতিল করতে বলেছিল সরকার।

মিয়ানমারে প্রথম করোনা আক্রান্ত একজনের মৃত্যু : প্রথমবারের মতো মিয়ানমারে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে একজনের মৃত্যু হয়েছে। তার বয়স ৬৯ বছর। করোনায় আক্রান্ত হওয়ার আগে থেকে তিনি ক্যানসারে ভুগছিলেন। গতকাল মঙ্গলবার ইয়াঙ্গুনের একটি হাসপাতালে মৃত্যু হয় তার। মিয়ানমারের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে উদ্ধৃত করে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এসব তথ্য জানিয়েছে।

২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশের রাজধানী উহান থেকে ছড়িয়ে পড়ে করোনা ভাইরাস। উৎপত্তিস্থল চীনে ৮০ হাজারেরও বেশি মানুষ আক্রান্ত হলেও সেখানে ভাইরাসটির প্রাদুর্ভাব কমে গেছে। তবে বিশ্বের অন্যান্য দেশে এই ভাইরাসের প্রকোপ বাড়ছে। চীনের বাইরে করোনা ১৩ গুণ বৃদ্ধি পাওয়ার প্রেক্ষাপটে ১১ মার্চ পৃথিবীব্যাপী মহামারি ঘোষণা করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। মিয়ানমারে এ পর্যন্ত ১৪ জন করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে। সেদেশের কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আক্রান্তদের বেশিরভাগই বিদেশফেরত। মঙ্গলবার, মারা যাওয়া ব্যক্তিও সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়া থেকে ফিরেছেন।

http://dailysangram.info/post/411978