৩০ মার্চ ২০২০, সোমবার, ১:০০

বহমান এই সময়ে

বর্ণবাদের এই সময়ে করোনাভাইরাস

যতই দিন যাচ্ছে বিশ্বব্যাপী বেশি থেকে আরো বেশি মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছে, সেই সাথে বাড়ছে মৃতের সংখ্যাও। জাতিসঙ্ঘ এই ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবকে বিশ্ব মহামারী ঘোষণা করেছে। এই প্রেক্ষাপটে বিভিন্ন দেশের মানুষকে পারস্পরিক সংহতি প্রকাশ এবং মহামারী দমনে একে অন্যের সহায়তায় এগিয়ে আসতে দেখা যাচ্ছে। এর পরও ইসরাইলের বর্ণবাদী সরকারকে এ ধরনের কোনো সংহতি প্রকাশের প্রক্রিয়ায় অন্তর্ভুক্ত দেখা যাচ্ছে না।

ফিলিস্তিনে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ চিহ্নিত হওয়ার পরও ইসরাইলি বা ইহুদি কর্তৃপক্ষ সেখানে বর্ণবাদী নির্যাতন বিন্দুমাত্র কমায়নি। ফলে এই মহামারীর কবলে পড়া অধিকৃত এলাকার ফিলিস্তিনিরা ইসরাইলি বর্ণবাদের বৈষম্যের শিকার হয়ে অধিকতর মানবেতর জীবনযাপনের মুখোমুখি। ফিলিস্তিনিদের ওপর দমন-পীড়ন চলছেই। ফিলিস্তিনের বিভিন্ন কমিউনিটিতে অভিযান পরিচালনার কথা বলে ইসরাইল পুলিশের উপস্থিতি বাড়িয়েই চলছে। পূর্ব জেরুসালেমের ইসাইয়া এলাকায় চলছে ফিলিস্তিনিদের বাড়িঘর ধ্বংসের তাণ্ডব। নাকাব মরুভূমিতে ধ্বংস করে দেয়া হচ্ছে বেদুইনদের জমির ফসল। কিন্তু করোনাভাইরাস মোকাবেলায় নেই তেমন উদ্যোগ।

ইসরাইলে ফিলিস্তিনি বন্দীদের মধ্যে পরিচালিত করোনাভাইরাস টেস্টে চার ফিলিস্তিনির সংক্রমণ ধরা পড়েছে। এর পরও ইসরাইল সরকার পাঁচ হাজার ফিলিস্তিনিকে কারাগার থেকে মুক্তি দিচ্ছে না। ইসরাইলি কারাগারে বন্দী এই পাঁচ হাজারের মধ্যে ১৮০ জন শিশু। অধিকন্তু গাজা উপত্যকা অবরোধ এবং ফিলিস্তিনিদের এলোপাতাড়ি আটক করে কারাগারে পাঠানোর অভিযানও চলছে আরো জোরালোভাবে। সেখানে এরই মধ্যে কমিয়ে আনা হয়েছে সরকারি সেবা কার্যক্রম। শিগগিরই যেকোনো সময় প্রত্যাহার করে নিতে পারে পুরো সেবা কার্যক্রম।

উগ্রপন্থী ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু নিজে চেষ্টা করছেন করোনাভাইরাস দমনে গঠিতব্য ইমারজেন্সি ইউনিটি গভর্নমেন্টের যৌথ তালিকা থেকে প্রধানত ফিলিস্তিনিদের বাইরে রাখতে। ফিলিস্তিনিদের ‘সন্ত্রাস-সমর্থক’ আখ্যায়িত করে তাদের বাদ দেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। একই সাথে, ইসরাইলি কর্তৃপক্ষ এরই মধ্যে ফিলিস্তিনিদের এই ভাইরাসের বাহক হিসেবে অভিহিত করে তাদের জনস্বাস্থ্যের প্রতি হুমকি বলে ঘোষণা করেছে। মার্চের প্রথম দিকে ইসরাইলের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় প্রথমবারের মতো বলেছে, তারা অধিকৃত ফিলিস্তিনি এলাকায় সাতজনকে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের শিকার বলে নিশ্চিত। প্রতিরক্ষামন্ত্রী ন্যাফতালি বেনেট দ্রুত বেথেলহাম শহর বন্ধ করে দেন, যেখানে সব ভাইরাস সংক্রমণের ঘটনা ঘটে। এই নগর নিয়ে তাদের উদ্বিগ্ন হওয়ার কারণ ফিলিস্তিনিদের স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তার ব্যাপারে নয়, বরং কারণ ছিল এরা ইসরাইলিদের মধ্যে সংক্রমণের কোনো কারণ হয়ে ওঠে কি না। কাছাকাছি ইসরাইলি বসতি এফরাতেও এ ভাইরাস সংক্রমণের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। কিন্তু এই বসতিতে তখন শাট-ডাউন ঘোষণা করা হয়নি। কিছু দিন পর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ইসরাইলিদের পরামর্শ দেয় অধিকৃত ফিলিস্তিনি এলাকায় প্রবেশ না করতে।
এর আগের সপ্তাহে নেতানিয়াহু আরবি ভাষাভাষী লোকদের বলেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনাবলি মেনে চলতে। তিনি বলেছেন, ফিলিস্তিনিরা তা মেনে না চলায় সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। এ ধরনের উদ্বেগের কথা ইহুদি জনগোষ্ঠীর ব্যাপারে উচ্চারিত হয়নি। ইহুদি জনগোষ্ঠী অস্বীকার করেছে তাদের উপাসনালয়, স্কুল ও ব্যবসায়-প্রতিষ্ঠান বন্ধ করতে।

ফিলিস্তিনিদের প্রতি এ ধরনের বর্ণবাদী প্রবণতা নতুন নয়। প্রথম দিকের ইহুদি বসতি স্থাপনকারী ইউরোপীয়দের লেখালেখি পরিপূর্ণ ছিল আরবদের জীবনযাপন ও স্বাস্থ্যসম্পর্কিত আজগুবি বানানো কাহিনীতে। বর্ণবাদীরা এসব কাহিনীকে সামনে নিয়ে এসে আরবদের এখন ভাইরাস সংক্রমণ ছড়ানোর হুমকি হিসেবে বর্ণনা করছে। দশকের পর দশক ধরে পরিচালিত দমন-পীড়ন ও বৈষম্য ছাড়াও করোনাভাইরাস নামের মহামারীর সময়ে ফিলিস্তিনে শুরু হয়েছে নতুন ধরনের বর্ণবাদী তাণ্ডব। এর ফলে ভেঙে পড়েছে স্বাস্থ্যব্যবস্থা। ফিলিস্তিনে স্বাস্থ্যব্যবস্থা অকার্যকর করে তোলার শুরু সেই ‘ম্যান্ডেট যুগে’। তখন ব্রিটিশরা নিরুৎসাহিত করেছিল ফিলিস্তিনিদের পরিচালিত বেসরকারি স্বাস্থ্য খাত সৃষ্টির ব্যাপারে। সে সময়ে ফিলিস্তিনি জনগোষ্ঠীর, বিশেষত শহুরে জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যসেবা চলত গুটি কয়েক হাসপাতালের মাধ্যমে, যেগুলো গড়ে তুলেছিল ব্রিটিশ উপনিবেশবাদীরা। এর পাশাপাশি ছিল পশ্চিমা বিভিন্ন খ্রিষ্টান মিশনারির গড়ে তোলা কিছু হাসপাতাল। তবে ফিলিস্তিনিদের বেসরকারি খাতে হাসপাতাল গড়ে তোলাকে নিরুৎসাহিত করলেও ইহদিদের নিজস্ব স্বাস্থ্যব্যবস্থা গড়ে তোলার অনুমতি দেয়া হতো। ইহুদিরা এই ব্যবস্থা গড়ে তোলে বিদেশীদের অর্থ-সহায়তায়। ওরা তা পরিচালনা করত সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় কিছু মিশনারি তাদের ক্লিনিক হয় বন্ধ ঘোষণা করেন, নয়তো পরিত্যক্ত অবস্থায় রেখে চলে যান। ১৯৪৮ সালের পর ব্রিটিশরা ফিলিস্তিন থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে নেয়। পেছনে ফেলে রেখে যায় ভঙ্গুর স্বাস্থ্য অবকাঠামো। ১৯৪৯ সালের পর মিসর গাজাকে মিসরের সাথে একীভূত করে নেয়। পরের বছর জর্দান একীভূত করে নেয় ‘পশ্চিম তীর’। পরবর্তী ১৭ বছর কায়রো ও আম্মানের আওতায় ফিলিস্তিনিরা শাসিত হয়েছে। কিন্তু তারা সেই সময়ে ফিলিস্তিনে স্বাস্থ্য অবকাঠামো গড়ে তোলেনি।

নিকট-প্রাচ্যের ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের জন্য গঠিত, ‘ইউনাইটেড ন্যাশনস রিলিফ অ্যান্ড ওয়ার্কস অ্যাজেন্সি’কে (ইউএনআরডব্লিউএ) উদ্যোগ নিতে হয় ফিলিস্তিনিদের স্বাস্থ্যসেবা জোগানোর ব্যাপারে। এ সংস্থা প্রাথমিক সেবা নিশ্চিত করতে একটি দাতব্য নেটওয়ার্ক গড়ে তোলে। ১৯৬৭ সালের যুদ্ধের পর ইসরাইল দখল করে নেয় গাজা উপত্যকা ও পশ্চিম তীর। আন্তর্জাতিক রীতিনীতি ও আইনের আওতায় দখলদার শক্তি হিসেবে ইসরাইল আইনিভাবে ফিলিস্তিনে স্বাস্থ্যসেবা জোগাতে বাধ্য। কিন্তু ইসরাইল সেখানকার স্বাস্থ্যব্যবস্থা গড়ে তোলার ব্যাপারে কিছুই করেনি। এর ‘ব্যাখ্যা’ পাওয়া যায় বাজেট বরাদ্দের দিকে নজর দিলে। ১৯৭৫ সালের বাজেটে পশ্চিম তীরের স্বাস্থ্য বাজেটের জন্য যা বরাদ্দ দেয়া হয়, তা একটি ইসরাইলি হাসপাতালের এক বছরের বাজেট বরাদ্দের চেয়েও কম।

১৯৯৪ সালে গঠিত হয় ‘ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ’ (পিএ)। তখন এই কর্তৃপক্ষ ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্যসেবার দায়িত্ব নেয়। বলা বাহুল্য, অব্যাহতভাবে দখল অভিযান পরিচালনা এবং ফিলিস্তিনি বাজেটের জন্য ইসরাইল সরকার ও বিদেশী সহায়তার ওপর নির্ভরশীল থাকার কারণে স্বাস্থ্য খাতের কোনো উন্নতি ঘটাতে পারেনি ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ। এর ফলে, আজ ফিলিস্তিনি হাসপাতালে ঢুকলে দেখা যাবে অসংখ্য রোগীর ভীষণ ভিড়। সেই সাথে হাসপাতালগুলোতে দুঃসহ অসুস্থ পরিবেশ। নেই প্রয়োজনীয় সরবরাহ। অপর্যাপ্ত চিকিৎসা সরঞ্জাম ও অনুন্নত অবকাঠামো। ডাক্তার ও নার্সের স্বল্পতা। সেখানে প্রতি এক হাজার মানুষের জন্য রয়েছে মাত্র ১.২৩টি হাসপাতাল বেড, সব সরকারি হাসপাতালে ভেন্টিলেটরের সংখ্যা মোট ১২০। কিন্তু এই পরিবেশ থেকে মুক্তি পাওয়ার কোনো উপায় নেই। পশ্চিম তীরের পরিস্থিতি আরো খারাপ। সেখানে কর্তৃপক্ষ করোনাভাইরাস রোধে ব্যর্থ হলে ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে। জাতিসঙ্ঘ আগেই ঘোষণা দিয়েছিল ২০২০ সালের মধ্যে গাজা উপত্যকা বসবাসের উপযোগিতা হারিয়ে ফেলবে। এখন ২০২০ সাল। এমনিতেই গাজার অধিবাসীরা মানবেতর জীবনযাপন করছে। এর ওপর করোনাভাইরাসের আঘাত। সেখানে ভাইরাস সংক্রমণের প্রথম ব্যক্তিটিকে চিহ্নিত করা হয়
গত ২১ মার্চ। এমনি অবস্থায় ইসরাইলি, মিসরীয় ও ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ আরোপিত অবরোধ সেখানকার স্বাস্থ্য-ব্যবস্থাকে ভেঙে পড়ার অবস্থায় এনে দাঁড় করিয়েছে। এই স্বাস্থ্য-ব্যবস্থা নতুন করে গড়ে তোলায় বড় ধরনের বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে ইসরাইলি বাহিনীর চলমান সামরিক অভিযান।

ইসরাইলের নানামুখী বর্ণবাদী আচরণ গাজার জনগোষ্ঠীর অবস্থা সবদিক থেকে করুণ করে তুলেছে। সেখানকার জনগোষ্ঠীর ৬১ শতাংশ যুবশ্রেণীর, যার ৪৪ শতাংশই বেকার। গাজার ৮০ শতাংশই কোনো না কোনো ধরনের বিদেশী সাহায্যের ওপর নির্ভরশীল। সেখানকার ৯৭ শতাংশ পানি সুপেয় নয়। পুষ্টির অভাবে ১০ শতাংশ শিশু ঠিকমতো বেড়ে উঠতে পারছে না। স্বাস্থ্য-সম্পর্কিত বিধানাবলি দিন দিন আরো খারাপের দিকে যাচ্ছে। ‘এনজিও মেডিক্যাল এইড ফর প্যালেস্টাইন’ জানিয়েছেÑ ২০০০ সালের পর থেকে হাসপাতালের বেড সংখ্যা সেখানে কমিয়ে আনা হচ্ছে। প্রতি হাজার মানুষের জন্য আগে ছিল বেড সংখ্যা ১.৮, তা কমে এখন দাঁড়িয়েছে ১.৫৮-এ। প্রতি হাজার জনের জন্য আগে ডাক্তারের সংখ্যা ছিল ১.৬৮, তা নেমে এসেছে ১.৪২-এ। একইভাবে নার্সের সংখ্যাও ২.০৯ থেকে কমে হয়েছে ১.৯৮। এর ফলে হাসপাতালগুলোতে রোগীর ভিড় বাড়ছে। ইসরাইল সম্ভাব্য ডুয়েল ইউজের উপযোগী প্রযুক্তি আমদানি নিষিদ্ধ করায় এক্স-রে স্ক্যানার ও মেডিক্যাল রেডিওস্কোপের মতো যন্ত্রপাতি আমদানি করা যাচ্ছে না। নিয়মিত বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হওয়ার ফলে চিকিৎসা-যন্ত্রপাতির ওপর নির্ভরশীল হাজার হাজার রোগীর চিকিৎসা হুমকির মুখে পড়েছে। ইনকিউবেটরে চিকিৎসাধীন শিশুরাও এই হুমকির মধ্যে। হাসপাতালে রয়েছে অতি প্রয়োজনীয় ৪০ শতাংশ ওষুধপত্রের অভাব। সিরিঞ্জ ও গজের মতো মৌলিক চিকিৎসাসামগ্রী সরবরাহও অপর্যাপ্ত। ২০১৮ সালে ট্রাম্প প্রশাসন সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র ইউএনআরডব্লিউএ-কে আর কোনো তহবিল দেবে না। ফলে এই সংস্থার চিকিৎসা-সেবা দেয়ার সক্ষমতাও কমে গেছে। এই সংস্থা আগের মতো গাজায় জটিল সার্জারির জন্য অভিজ্ঞ ডাক্তারদের কাজে লাগাতে পারছে না।

গাজায় স্বাস্থ্য-ব্যবস্থার সীমাবদ্ধতা স্পষ্টভাবে ধরা পড়ে ২০১৮ সালে, যখন ফিলিস্তিনি জনগণের ‘গ্রেট রিটার্ন মার্চ’ চলছিল। ফিলিস্তিনিরা তখন কয়েক মাস ধরে গাজা ও ইসরাইলি সীমান্তে লাগাতার বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। সে সময়ে ইসরাইলি বাহিনী নির্বিচারে গুলি চালিয়ে ফিলিস্তিনিদের হতাহত করে। তখন আহতদের চিকিৎসাসেবা দিতে গাজার হাসপাতালগুলো হিমশিম খাচ্ছিল। সুচিকিৎসা না পেয়ে অনেকেই স্থায়ীভাবে পঙ্গু হয়ে যান।

পৃথিবীতে যে কয়টি অতি ঘন মানববসতি এলাকা রয়েছে এবং যেখানে রয়েছে খাবার পানি ও স্বাস্থ্য অবকাঠামোর অভাব, গাজা উপত্যকা সেগুলোরই একটি। এটি স্পষ্ট, গাজায় করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়লে তা মোকাবেলা করা অসম্ভব হয়ে পড়বে। এই জনগোষ্ঠী এরই মধ্যে পুষ্টিহীনতার শিকারে পরিণত। ইসরাইলের নির্যাতন-নিপীড়নের শিকার হয়ে বাড়ছে পঙ্গুত্ব বরণের হারও এবং যুদ্ধ-পরিস্থিতির মাঝে কঠিনতর জীবনযাপনের কারণে গাজাবাসীর বাড়ছে মানসিক বিপর্যস্ততা। সেখানকার চিকিৎসা-ব্যবস্থার জরুরি উন্নতি না ঘটলে অনেকেই মারা যাবে বিনা চিকিৎসায়।

তাই করোনা মহামারী পরিস্থিতিতে পশ্চিম তীরে ও গাজা উপত্যকায় ভয়াবহ স্বাস্থ্য বিপর্যয় ঘটার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, এই পরিস্থিতিতে ইসরাইল কী করবে? ইসরাইল কি এর স্বাস্থ্য-ব্যবস্থা জবরদখল ফিলিস্তিনে নিয়ে যাবে? দেশটি কি অন্তত বিদেশী চিকিৎসা-সহায়তা বন্ধ করা থেকে বিরত থাকবে? না কি, আগের মতোই ফিলিস্তিনিদের প্রতি বর্ণবাদী আচরণ এই মহামারী পরিস্থিতিতেও অব্যাহত রাখবে? এরা কি এই মহামারীকে ফিলিস্তিনি জাতির অস্তিত্ব বিলুপ্তির উদ্দেশ্যে মোক্ষম সুযোগ হিসেবে কাজে লাগাবে?

সম্প্রতি ফিলিস্তিন-সম্পর্কিত একটি ভিডিও সামাজিক গণমাধ্যমে ভাইরাল হতে দেখা গেছে। ভিডিওটিতে দেখা যায়, একজন ফিলিস্তিনি শ্রমিক একটি ইসরাইলি চেকপোস্টের কাছে সড়কের পাশে শ্বাসকষ্টে কাতরাচ্ছে। তার ইসরাইলি চাকরিদাতা মালিক ইসরাইলি পুলিশকে তার কাছে ডেকে আনে মারাত্মক শ্বাসকষ্ট দেখে। তার আশঙ্কা, এই ফিলিস্তিনি করোনাভাইরাসের শিকার। তাকে সেখান থেকে নিয়ে অন্যত্র ফেলে রাখা হয়। কিন্তু চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়নি।

দশকের পর দশক ধরে ঔপনিবেশিক শাসন, সামরিক দখলদারিত্ব ও মারাত্মক নির্যাতন-নিপীড়ন ফিলিস্তিনিদের শিখিয়েছে, ফিলিস্তিনিরা ইসরাইলি বর্ণবাদী সরকারের কাছে কোনো ‘সততা’ প্রত্যাশা করতে পারে না। আর বিশ্ব মোড়লরা তো ইসরাইলকে এ ব্যাপারে ইন্ধন জুগিয়েই চলেছে দশকের পর দশক ধরে।

https://www.dailynayadiganta.com/post-editorial/491999