ফরিদপুর মেডিকেল কলেজে তদন্ত দল। ছবি: যুগান্তর
১২ অক্টোবর ২০১৯, শনিবার, ২:২৪

ফরিদপুর মেডিকেল কলেজে তদন্ত দল: অতিরিক্ত দাম দেখিয়ে কেনা পর্দা নষ্ট হচ্ছে

ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ (ফমেক) হাসপাতালে অতিরিক্ত দামে কেনা আলোচিত সেই পর্দা ও অক্সিজেন প্লান্টসহ বিভিন্ন চিকিৎসা সরঞ্জাম নষ্ট হচ্ছে। এসব সরঞ্জাম কেনাকাটায় অনিয়ম তদন্ত করছে পাঁচ সদস্যের তদন্ত দল।

হাইকোর্টের নির্দেশনায় বুধ ও বৃহস্পতিবার ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ (ফমেক) হাসপাতালে তদন্ত দল পর্দা ও সরঞ্জাম পর্যবেক্ষণ করে। তদন্ত দলের সদস্যরা বলেছেন, ব্যবহার না করায় অতিরিক্ত দাম দেখিয়ে কেনা সরঞ্জাম নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

তদন্ত দলের সদস্যরা হলেন- দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপ-সহকারী পরিচালক মো. শহিদুর রহমান ও ফেরদৌস রহমান, স্বাস্থ্য অধিদফতরের উপ-পরিচালক ডা. মো. জাকির হোসেন ও সহকারী পরিচালক ডা. শফিকুর রহমান এবং সরকারি হাসপাতালের যন্ত্রপাতি মেরামতকারী একমাত্র প্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল ইলেকট্রো ইকুইপমেন্ট মেইনটেইন্যান্স ওয়ার্কশপ অ্যান্ড ট্রেনিং সেন্টারের (নিমিউ অ্যান্ড টিসি) সহকারী প্রকৌশলী নাশিদ রহমান।

ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. কামদা প্রসাদ সাহা বলেন, পাঁচ সদস্যের তদন্ত দল ২ দিন ধরে তদন্ত করেছে। দুদকের উপ-সহকারী পরিচালক মো. শহিদুর রহমান বলেন, হাইকোর্টের নির্দেশে দুদকের পক্ষ থেকে তদন্ত করেছি। তিনি বলেন, ব্যবহার না করায় এখানকার বেশিরভাগ মেশিন নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে বহুল আলোচিত পর্দাও নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এ ব্যাপারে প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।

জানা গেছে, ২০১২ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বিভিন্ন যন্ত্রপাতি কেনা হয়। এতে আর্থিক অনিয়ম হওয়ায় ২০ আগস্ট হাইকোর্ট দুদককে তদন্ত করে ৬ মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলেন। ২০১২ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত মেসার্স অনিক ট্রেডার্স ৫১ কোটি ১৩ লাখ ৭০ হাজার টাকার ১৬৬টি যন্ত্রপাতি সরবরাহ করে। ৪১ কোটি ১৩ লাখ ৭০ হাজার টাকার বিল অনিক ট্রেডার্স তুলে নেয়। তবে ১০ কোটি টাকা যন্ত্রপাতির দাম বেশি দেখানোসহ বিভিন্ন অসঙ্গতির কারণে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বিল আটকে দেয়। ২০১৭ সালের ১ জুন বকেয়া আদায়ে হাইকোর্টে একটি রিট করে অনিক ট্রেডার্স কর্তৃপক্ষ।

রিটের পর স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালকের কাছে অনিক ট্রেডার্সের সরবরাহ করা ১০ কোটি টাকার যন্ত্রপাতির তালিকা চেয়ে পাঠান। পরিচালক ডা. কামদা প্রসাদ সাহা ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর ১০ আইটেমের যন্ত্রপাতির তালিকা দেন। ২০১২ থেকে ২০১৬ পর্যন্ত পাঁচজন চিকিৎসক ফরিদপুরে প্রকল্প পরিচালক হিসেবে কাজ করেছেন। তারা হলেন- আ স ম জাহাঙ্গীর চৌধুরী, এবিএম শামসুল আলম, মো. ওমর ফারুক খান, গণপতি বিশ্বাস ও আবুল কালাম আজাদ। এর মধ্যে ওমর ফারুক খান মারা গেছেন।

https://www.jugantor.com/todays-paper/last-page/230929