কাকরাইলের ভূঁইয়া ট্রেড সেন্টারে নিজস্ব কার্যালয়ে সম্রাটের বিলাসী ছাদবাগান। ছবি: যুগান্তর
৭ অক্টোবর ২০১৯, সোমবার, ১১:৩১

বিলাসী রাজনৈতিক কার্যালয় সম্রাটের

বিদেশি মদ থেকে শুরু করে টিভি, ফ্রিজ, বিদেশি আসবাব, মূল্যবান আলোকসজ্জার সরঞ্জামাদি সবই ছিল

ঢাকা মহানগর যুবলীগ দক্ষিণের সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট কাকরাইলের ভূঁইয়া ট্রেড সেন্টারে নিজস্ব কার্যালয় গড়ে তুলেছিলেন। সম্রাটের এ কার্যালয়টি তার নামের মতোই বিলাসী সব উপকরণে ঠাসা।

বিদেশি মদ থেকে শুরু করে টিভি, ফ্রিজ, বিদেশি আসবাব, মূল্যবান আলোকসজ্জার সরঞ্জামাদি সবই ছিল সেখানে। এমনকি তার বাথরুম ছিল শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত। সেখানে একাধিক ফ্রিজ ও ওয়াশিং মেশিনও ছিল।

এসব ফ্রিজে ছিল বিদেশি মদ। ২ বছর ধরে তিনি বাসায় পর্যন্ত যেতেন না। সারা দিন নানা কাজে ব্যস্ত থাকলেও রাত্রিযাপন করতেন এ বিলাসবহুল কার্যালয়ে।

র‌্যাবের হাতে গ্রেফতার হওয়ার পর সম্রাটকে নিয়ে রোববার দুপুরের পর ভূঁইয়া ট্রেড সেন্টারে অভিযান চালায় র‌্যাব। সেখানে তার বিলাসবহুল রাজনৈতিক কার্যালয় দেখে বিস্মিত হয়ে যান কর্মকর্তারা।

সাত তলা ভবনের সপ্তম তলায় এক বিশাল ছাদবাগান। ওই বাগানে রয়েছে বহু প্রজাতির উদ্ভিদ। মাঝখানে রয়েছে একটি ফোয়ারা। সেখানে গেলে মনে হবে এটি যেন শহর থেকে হাজার মাইল দূরে কোনো পাহাড়ি এলাকার নির্জন স্থান।

ওই ছাদবাগানের পাশেই তার রাজনৈতিক কার্যালয়। এর পাশে তার একটি বিলাসবহুল বেডরুম। সরেজমিন ওই কার্যালয়ে গিয়ে জানা যায়, পুরো ভবনটিই ছিল সম্রাটের দখলে। সাততলা ভবনের দোতলা এবং তিনতলার ফ্লোরে চেয়ার-টেবিল রয়েছে।

সেখানে বঙ্গবন্ধু, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছাসহ আওয়ামী লীগ এবং যুবলীগের শীর্ষ নেতাদের ছবি টাঙানো। এসব ফ্লোরে অনেক ফ্রিজ দেখা গেছে। এগুলোয় রয়েছে বিদেশি বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মদ, কোল্ড ড্রিংকসসহ বিভিন্ন ধরনের খাবার।

এদিকে অভিযানের সময় ভবনের পঞ্চম তলায় একটি কিচেন রুমের সন্ধান পান র‌্যাব সদস্যরা। ওই কিচেন রুমে গিয়ে দেখা যায়, সারি সারি ফ্রিজ। অনেক ফ্রিজ বড় বড় রুই, কাতল ও ইলিশে ভর্তি। কোনো কোনো ফ্রিজে রয়েছে চিংড়ি।

কোনো কোনো ফ্রিজে থরে থরে সাজানো রয়েছে বিদেশি মদ। ওই কিচেন রুম দেখলেই মনে হবে সেখানে ২৪ ঘণ্টাই রান্না চলে। সম্রাটের কার্যালয়ে যারা আসেন, তাদের খাবার সরবরাহ করা হয় এ কিচেন থেকেই।

তার ছাদবাগান সম্পর্কে একজন র‌্যাব কর্মকর্তা জানান, ঢাকায় এমন বিলাসী ছাদবাগান তিনি আর কখনোই দেখেননি। এমন ছাদবাগান হতে পারে- এটা তার ধারণার বাইরে ছিল। ওই বাগানে বিভিন্ন প্রজাতির উদ্ভিদ রয়েছে। এর মধ্যে বিভিন্ন ফলের গাছও আছে।

এদিকে সম্রাটের স্ত্রী শারমিন চৌধুরী জানান, সম্রাট ২ বছর ধরে ওই কার্যালয়েই থাকেন। সেখানেই তিনি রাত্রিযাপন করেন। পরিবারের কেউ তার সঙ্গে দেখা করতে চাইলে কাকরাইলের কার্যালয়ে গিয়ে দেখা করতেন।

https://www.jugantor.com/todays-paper/first-page/228994/