১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯, সোমবার, ১:৩০

সেপ্টেম্বরের ১৫ দিনে ডেঙ্গু আক্রান্ত ১০ হাজারের বেশি

চলতি সেপ্টেম্বর মাসের ১৫ দিনে সারা দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে ১০ হাজারের বেশি। গতকাল রোববার একদিনে সারা দেশে আক্রান্ত হয়েছে ৬১৯ জন। গত শনিবারের চেয়ে ৮২ জন বেশি আক্রান্ত হয়েছে। এর মধ্যে রাজধানীতে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১৬৩ জন এবং দেশের অবশিষ্ট এলাকায় আক্রান্ত হয়েছে ৪৫৬ জন। রাজধানীর আক্রান্তদের মধ্যে সরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ১১৫ জন এবং বেসরকারি হাসপাতালে ৪৮ জন।

চিকিৎসকেরা বলছেন, মশার বংশ বৃদ্ধি হ্রাস পাচ্ছে, কমছে আক্রান্তের হার। তাই বলে আত্মতুষ্টিতে ভোগা উচিত নয়। মশক নিধন কর্মসূচি অব্যাহত রাখতে হবে। গত কয়েকদিন থেকে রাজধানীর প্রায় সর্বত্রই মশক নিধন কর্মসূচি চলছে। প্রতিটি এলাকায় সিটি করপোরেশনের লোক সপ্তাহে কমপক্ষে দুইবার ওষুধ ছিটিয়ে যাচ্ছে। পরবর্তীতেও এ কর্মসূচি অব্যাহত রাখতে হবে।

এদিকে গতকাল রোববার সারা দেশের হাসপাতালে দুই হাজার ৫৪৬ জন চিকিৎসাধীন ছিল। এর মধ্যে রাজধানীর ৪১ সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে আছে এক হাজার ৩৩ জন।

চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে গতকাল পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে ৮১ হাজার ১৮৬ জন। সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ত্যাগ করেছে ৭৮ হাজার ৪৩৭ জন।
রোববার দুপুর ১২টা পর্যন্ত পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় ঢাকা বিভাগে আক্রান্তের সংখ্যা ৮৭ জন, খুলনা বিভাগে ছিল ১৮৫ জন। এ ছাড়া চট্টগ্রামে ৫৪, রাজশাহী বিভাগে ৪০ জন, বরিশাল বিভাগে ৬৫ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ১১ জন, রংপুরে চারজন এবং সিলেট বিভাগে কোনো আক্রান্ত ছিল না।

গতকাল দুপুর ১২টা পর্যন্ত পূর্বের ২৪ ঘণ্টায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৩৬ জন। মিটফোর্ড হাসপাতালে ২০ জন, ঢাকা শিশু হাসপাতালে তিনজন, শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে ১০ জন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে আটজন, মুগদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ১৯ জন, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ১২ জন, সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চারজন।
খুলনায় ভর্তি ৯২ জন

খুলনা ব্যুরো জানায়, খুলনায় এ পর্যন্ত এক হাজার ১৬৯ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে মারা গেছেন ১১ জন। বর্তমানে সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি রয়েছেন ৯২ জন। গতকাল রোববার জেলা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির সভায় ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা: মো: আতিয়ার রহমান এ তথ্য জানিয়ে বলেন, জেলায় ডেঙ্গুজ্বরের প্রকোপ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এ রোগের বিস্তার প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি চিকিৎসা নিশ্চিত করা হয়েছে। জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) জিয়াউর রহমান।
সাতক্ষীরায় আক্রান্ত ৬২৯

সাতক্ষীরা সংবাদদাতা জানান, জেলায় ডেঙ্গুর প্রভাব এখনো কমেনি। প্রতিদিনই নতুন নতুন রোগী ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। গতকাল সকালের পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় সাতক্ষীরায় আরো ১০ ডেঙ্গু রোগীর সন্ধান মিলেছে। এ নিয়ে গতকাল পর্যন্ত জেলায় মোট ৬২৯ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন। বিভিন্ন হাসপাতালে এখনো ভর্তি রয়েছে ৪১ জন। চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন ৪৪১ জন এবং উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় রেফার করা হয়েছে আরো ১৪৭ জনকে। এদিকে জলাবদ্ধতার কারণে সাতক্ষীরার ডেঙ্গুর প্রকোপ দূর করা যাচ্ছে না বলে মনে করছে অভিজ্ঞমহল। তবে অল্প দিনের মধ্যে ডেঙ্গু মুক্ত হয়ে যাবে বলে জানান সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক।

বগুড়ার শেরপুরে বাড়ছে রোগী
শেরপুর (বগুড়া) সংবাদদাতা জানান, এখনো নিয়ন্ত্রণে আসেনি উপজেলার ডেঙ্গু পরিস্থিতি। নতুন নতুন এলাকায় ডেঙ্গু রোগী শনাক্তের খবর পাওয়া গেছে। গত এক সপ্তাহে আক্রান্ত ১১ জনকে শনাক্ত করা হয়েছে। এদের মধ্যে চারজন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। গতকাল রোববার জ্বরে আক্রান্ত হয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসা চারজনের রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে ডেঙ্গু শনাক্ত করা হয়। শেরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবারপরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: আবদুল কাদের জানান, দিন দিন ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বেড়ে চলছে।

http://www.dailynayadiganta.com/first-page/440478/