২ মার্চ ২০১৭, বৃহস্পতিবার, ৭:৪২

অন্য দৃষ্টি

পরিবহন রাজনীতির নৈতিকতা

জসিম উদ্দিন

পরিবহন সেক্টরের অরাজকতা এবার বেশ বেপরোয়াভাবে দেখা যাচ্ছে। রাজনৈতিক দলের ডাকা হরতালের চেয়ে পরিবহন শ্রমিকদের ধর্মঘটে অনেক বেশি ভোগান্তি পোহাচ্ছে মানুষ। হঠাৎ করে রাস্তার সব যানবাহন একসাথে উধাও হয়ে গেল। কিছু যানবাহন রাস্তায় নেমেছে, সেগুলোর ভাঙচুর ও হামলা-হেনস্তার শিকার হতে হয়েছে। ধর্মঘট বাস্তবায়নকারী বেপরোয়া নেতাকর্মীরা এর হোতা। অনেক যাত্রী ও আগ্রাসী শ্রমিকদের জোরজবরদস্তি ও লাঞ্ছনার শিকার হয়েছেন বিনা দোষেই।

রাস্তায় যখন শ্রমিকেরা এমন তাণ্ডব চালিয়েছে, পুলিশ অনেকটা নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করেছে। বিরোধী রাজনৈতিক দলের ডাকা কর্মসূচিতে যারা বীরের ভঙ্গিতে সাউন্ড গ্রেনেড, রাবার বুলেট, কাঁদানে গ্যাস ও অন্যান্য অস্ত্র চালিয়ে সব নাস্তানাবুদ করে দেন; তারা কেমন যেন চুপসে গেলেন পরিবহন শ্রমিক আর তাদের পাহলোয়ান নেতাদের মোকাবেলায়। একই দিন আমরা পুলিশের দুই ধরনের আচরণ দেখলাম। গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে হরতাল ডাকা রাজনৈতিক নেতারা পুলিশের হামলা ও হয়রানির শিকার হলেন। অন্য দিকে পরিবহনে নৈরাজ্য সৃষ্টিকারী পরিবহন শ্রমিকেরা থাকলেন কোনো ধরনের পুলিশি অ্যাকশনের বাইরে। রাস্তায় দাঁড়িয়ে তারা শ্রমিকদের আক্রমণ ও উৎপাত প্রত্যক্ষ করেছে শান্তিপূর্ণভাবে।

কোনো ধরনের ঘোষণা ছাড়া পরিবহন ধর্মঘট কার্যকর করায় সারা দেশে যাত্রীরা ভীষণ সমস্যায় পড়েন। তারেক মাসুদ ও মিশুক মুনীরসহ পাঁচজনের প্রাণহানির ঘটনায় বাসচালক জমির হোসেনকে আদালত যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন। মানিকগঞ্জের আদালতে দেয়া এই রায়ের বিরুদ্ধে পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন খুলনা বিভাগীয় কমিটি বাস ধর্মঘটের ডাক দেয়। স্থানীয় প্রশাসনের সাথে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে ধর্মঘট প্রত্যাহারের প্রস্তুতির মধ্যে খবর আসে, সাভারে এক নারীর ওপর ট্রাক তুলে দিয়ে তাকে হত্যার অপরাধে আরেক চালকের মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছে আদালতে। এই রায়ের খবর শোনার সাথে সাথেই পরিবহন শ্রমিকেরা বেপরোয়া হয়ে ওঠে সারা দেশে। শ্রমিক সংগঠনের ধর্মঘট আহ্বানের ঘটনা নতুন নয়। তবে এবারের ধর্মঘট ব্যতিক্রম এ জন্য যে, আদালতের রায়ের প্রতিবাদ জানানো হচ্ছে ধর্মঘট পালনের মাধ্যমে। রায়ে অসন্তুষ্ট হলে যে-কারো উচ্চ আদালতে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে। আইনমন্ত্রী এই আহ্বানের মধ্যে বলেছেন, রায়ের ব্যাপারে কোনো বক্তব্য থাকলে পরিবহন শ্রমিকেরা সেটা আদালতে দিতে পারেন। আদালত সেটা বিবেচনা করবেন। তবে এ অবস্থায় শ্রমিকদের আন্দোলন কর্মসূচি আদালত অবমাননা কি না সে প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে যান আইনমন্ত্রী। তিনি এই বিষয়টি ‘আদালতের বিবেচ্য’ বলে মন্তব্য করেন।

তবে একজন মন্ত্রী এ অবস্থায় কিভাবে শ্রমিকদের অন্যায় আচরণের পক্ষ নিয়েছেন সে ব্যাপারে দৈনিক প্রথম আলো লিখেছে, যাত্রীদের জিম্মি করে আদালতের রায় বদলানোর কৌশল নিয়েছে পরিবহন মালিক-শ্রমিক সংগঠনগুলো। এবার এই কৌশল বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত এলো সরকারের একজন মন্ত্রীর বাসভবনে বসে। আর এই সিদ্ধান্তপ্রক্রিয়ায় সরাসরি জড়িত একজন মন্ত্রী, একজন প্রতিমন্ত্রী এবং সরকারসমর্থক পরিবহন মালিক-শ্রমিক সংগঠনের নেতারা। গত সোমবার দুপুরে খুলনা সার্কিট হাউজে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের খুলনা বিভাগীয় কমিটির নেতাদের সাথে সরকারের স্থানীয় প্রশাসনের বৈঠক শেষে ধর্মঘট প্রত্যাহারের ঘোষণা দেয়া হয়। কিন্তু রাতে নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খানের সরকারি বাসভবনে বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত পাল্টে যায়। গভীর রাতে ঘোষণা আসে, মঙ্গলবার থেকে সারা দেশে লাগাতার পরিবহন ধর্মঘট।

শ্রমিকেরা এর আগেও ঘন ঘন ধর্মঘট করেছেন। একটি দৈনিক পত্রিকা জানাচ্ছে, গত আট মাসে তারা ২০ বার ধর্মঘট ডেকেছেন। তাদের দাবিদাওয়া আদায় কতটা পূরণ হচ্ছে সেটা বোঝা যাচ্ছে না। তবে ধর্মঘটে উপর্যুপরি পর্যুদস্ত হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। চিকিৎসা, পণ্য পরিবহন এবং জরুরি কাজের উদ্দেশ্যে বের হয়ে তারা চরম ভোগান্তিতে পড়ছেন। শ্রমিকেরা এমন সব দাবিদাওয়া পেশ করছেন যার অনেকগুলোকে বৈধ বলা যায় না। এগুলো মেনে নেয়ার অর্থ, অন্যায় কাজের বৈধতা দেয়ার শামিল। শ্রমিক সংগঠনগুলো প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার তারেক মাসুদ ও গণমাধ্যমব্যক্তিত্ব মিশুক মুনীরের হত্যাকারী বাসচালকের সাজা মওকুফ চায়। কিংবা তারা চায় সেই ট্রাকচালকের শাস্তি না হোক, যিনি চাকায় পিষ্ট করেছেন এক পথচারী নারীকে। বিষয়টি আদালতের এখতিয়ারভুক্ত।

তাদের দাবিদাওয়ার আরো যেসব ফিরিস্তি রয়েছে তার সাথে ন্যায় ও ইনসাফের সম্পর্ক দেখা যায় না। তারা চাচ্ছেন অতিরিক্ত পণ্য পরিবহনের সুযোগ। অর্থাৎ একটি যান যতটুকু ওজন বয়ে নিতে পারবে, তার চেয়ে বেশি তারা বহন করতে চান। এটা মেনে নেয়ার অর্থ, আরো বেশি অনিয়ম করে দুর্ঘটনার বৈধতাদানের ব্যবস্থা করা। দেশে দুই লাখের বেশি ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান ও বাসের আকার-আয়তন বাড়িয়ে রাস্তায় নামানো হয়েছে। অত্যধিক দুর্ঘটনার এটি একটি বড় কারণ। সরকার এটিকে সড়ক নিরাপত্তার জন্য মারাত্মক ঝুঁকি হিসেবে চিহ্নিত করেছে। সে জন্য সরকারের পক্ষ থেকে মালিকদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে, যানগুলোকে আসল কাঠামোয় ফিরিয়ে আনার জন্য। এর কতটুকু অগ্রগতি হয়েছে সে ব্যাপারে জানা যায়নি। শ্রমিকদের দাবির মধ্যে রয়েছে, তারা চান সড়কে পুলিশের তৎপরতা কমিয়ে আনা হোক। অথচ বাংলাদেশের সড়কগুলোতে বেআইনি কর্মকাণ্ড অহরহ চলে থাকে। বিশেষ করে চোরাকারবারিরা অবৈধ পণ্য বহন করে। এর সাথে রয়েছে মাদক পরিবহনের রমরমা ব্যবসা। যা হোক, দাবিদাওয়ার ফিরিস্তি দেখলে মনে হয়Ñ এ সব কিছু সড়কে বেপরোয়া গাড়ির মতোই বেপরোয়া চিন্তাভাবনা।

শ্রমিকদের উপযুক্ত মজুরিসহ ন্যায়সঙ্গত দাবি প্রতিষ্ঠার সাথে তাদের এসব দাবিদাওয়ার কোনো সম্পর্ক দেখা যায় না। শ্রমিকের চাকরির নিশ্চয়তা, প্রাণহানি কিংবা পঙ্গু হয়ে গেলে তাদের সাহায্য পাওয়ার মতো জরুরি বিষয় দাবিদাওয়ায় অন্তর্ভুক্ত নেই। বাংলাদেশের আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপটে এগুলো তাদের আন্দোলনের এক নম্বর দাবি হওয়ার কথা ছিল। বরং পরিবহন শ্রমিকের বিরুদ্ধে একটা অভিযোগ হচ্ছেÑ রাস্তায় চলাচলে তাদের তেমন জ্ঞান নেই। তারা যাত্রীদের সাথে যথার্থ আচরণ অনেক সময় করেন না। মানবিক আচরণ তাদের কাছে প্রত্যাশা করার চিন্তাও করা যায় না। হেলপাররা একসময় হয়ে যাচ্ছেন যানবাহনের চালক। তারা উপযুক্ত প্রশিক্ষণ ছাড়া যানবাহন নিয়ে রাস্তায় নামছেন। অনেকেরই নেই বৈধ লাইসেন্স। অন্য দিকে প্রতিদিন গড়ে ২৫ জন করে মানুষ বাংলাদেশের সড়কে প্রাণ হারাচ্ছেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক দুর্ঘটনার জন্য শ্রমিকের প্রশিক্ষণের অভাব ও চালকের অদক্ষতা দায়ী বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।

এবার যেদিন শ্রমিকেরা ধর্মঘটের ডাক দিলেন, সেদিনও দায়িত্বজ্ঞানহীন ড্রাইভিংয়ের কারণে প্রাণ হারান মেডিক্যালের শেষ বর্ষের এক ছাত্রী। তিনি মায়ের সাথে ঢাকার ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে যাচ্ছিলেন। পেছন থেকে একটি বাস তাদের বহনকারী সিএনজিকে চাপা দেয়। মেডিক্যাল কলেজের ছাত্রী সাদিয়া ইসলামের জন্য তার সহপাঠীরা রাস্তায় নেমে আসেন। আর মাত্র কয়েক মাসের মাথায় তিনি ডাক্তার হয়ে বের হতেন, যে বিষয়টি অনেককে আবেগাপ্লুত করেছে। তার নামাজে জানাজায় হাজির হয়েছিলেন একজন সংসদ সদস্য। উপস্থিত ছিলেন মেডিক্যাল কলেজের প্রিন্সিপাল ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। কলেজের ছাত্রছাত্রীরা আন্দোলন করে এই দুর্ঘটনার বিচারের জন্য প্রচণ্ড চাপ সৃষ্টি করেছিলেন। তারেক মাসুদ ও মিশুক মুনীরের বিষয়টি একই ধরনের। ওই দুর্ঘটনার পর ঢাকার বুদ্ধিজীবীরা সোচ্চার হয়ে ওঠেন। পরিবহন সেক্টর নিয়ে তখন ব্যাপক সমালোচনা করা হয়। পত্রিকার পাতা ভরে যায় নিহতের আত্মীয়স্বজনের প্রতি সমবেদনায়। টিভি স্টেশনগুলো আয়োজন করে শোকজাগানিয়া টকশো। সে জন্য একটা বিহিত হওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হয়। তারই ফলস্বরূপ দোষী চালকের বিচারের কার্যক্রমটি গতি পায়।

ভিআইপিদের সড়কে মৃত্যুই বাংলাদেশে সড়ক পরিবহনের নৈরাজ্যের বিষয়টি বারবার সামনে আনছে। ‘বাংলাদেশ হেলথ ইনজুরি সার্ভে’ ২০১৬ সালে একটি জরিপ চালিয়েছে। তাদের হিসাবে, সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ যাচ্ছে প্রতি বছর ২৩ হাজার ১৬৬ জনের। তারা মূলত সারা দেশের সাধারণ মানুষ। কিন্তু মানুষের মৃত্যু সাধারণ কোনো ঘটনা নয়। একজন মানুষকে তার সঠিক গুরুত্ব যদি দেয়া হয় তাহলে সড়কে এমন বেপরোয়া নৈরাজ্য কখনো চলতে পারত না। আমাদের দৈন্য হচ্ছে, আমরা কিছু মানুষকে ‘বিশিষ্ট’ করে নিচ্ছি। কেবল তারা সড়কে প্রাণ হারালেই সোচ্চার হচ্ছি। আর বাকি অসংখ্য লোকের ক্ষেত্রে থাকছি চুপচাপ। এ দিকে মন্ত্রী পর্যন্ত অনৈতিকভাবে মালিক-শ্রমিকের অধিকারের নামে দাঁড়াচ্ছেন অন্যায়ের পক্ষে। মন্ত্রীদের একটি পক্ষ এর বিরোধিতাও করছেন। এভাবে চলতে থাকলে ‘নিরাপদ সড়ক’ ধারণার মধ্যে থেকে যাবে এবং কোনো দিন বাস্তবায়ন হবে না।

পুলিশ নিজেই হত্যার শিকার
বরিশালে পুলিশ অফিসারের স্ত্রীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তার শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। নিহত সুরভি গোয়েন্দা বিভাগের সহকারী পরিদর্শক নূরে আলমের স্ত্রী। নগর পুলিশের মুখপাত্র ও গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী কমিশনার মো: ফরহাদ সরদার বলেন, রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, পারিবারিক কলহের জেরে সুরভি ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। তিনি আরো জানান, সুরভি ও নূরে আলম উভয়েরই এটি দ্বিতীয় বিয়ে। তিনি সুরভির মায়ের বরাত দিয়ে বলেন, উভয়ের মধ্যে বাগি¦তণ্ডা হলেও নূরে আলম কখনো সুরভিকে মারধর করেননি। তবে মায়ের এমন একটি কথা সত্যি হলে বিষয়টি আরো জটিল হয়ে যায়। রহস্যের জাল আরো বিস্তৃত হয়।

একই দিন পত্রিকার খবর, নরসিংদীর মনোহরদীতে কাজী আয়েশা আক্তার নামে এক পুলিশ কনস্টেবলকে শ্বাস রোধ করে হত্যা করেছে শ্বশুরবাড়ির লোকজন। গত রোববার উপজেলার তারাকান্দী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। আয়েশার শ্বশুরসহ তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সাতজনকে আসামি করে মনোহরদী থানায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে। দুটো ঘটনা পুলিশ ঘনিষ্ঠ হলেও মোটাদাগে পার্থক্য রয়েছে। তবে উভয় ঘটনা পুলিশের ভাবমর্যাদার সাথে সম্পৃক্ত। পরের ঘটনায় কনস্টেবলকে হত্যা করা হয়েছে। আয়েশার বিয়েটি ছিল প্রেমের। পুলিশের চাকরি নেয়ার পর শ্বশুরবাড়ির পক্ষ থেকে এ চাকরি ছেড়ে দেয়ার জন্য তারা চাপ প্রয়োগ করছিল। সন্দেহভাজন কেউ পুলিশের সদস্য নয়। তাদের গ্রেফতার করতে পুলিশের দেরি হয়নি।

বরিশালে ‘আত্মহত্যা’ করেছেন গোয়েন্দা কর্মকর্তার স্ত্রী। তার শরীরে আঘাতের চিহ্ন ছিল বলে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। তবে এই সূত্রে কেউ গ্রেফতার হয়নি। পুলিশ বরং ‘মায়ের সূত্রে’ জানাচ্ছে, স্বামীর সাথে বাগি¦তণ্ডা হলেও তিনি স্ত্রীকে কখনো মারধর করেননি। এ ঘটনায় সন্দেহভাজন কাউকে দেখা যাচ্ছে না। কেউ গ্রেফতারও হয়নি। আয়েশা পুলিশি প্রশিক্ষণ ব্যবহার করে হত্যাকারীদের কাছ থেকে নিজেকে বাঁচাতে পারেননি। সাম্প্রতিক সময়ে উপর্যুপরি পুলিশে নিয়োগ হয়েছে। ওই সব নিয়োগে শারীরিক সক্ষমতা ও যোগ্যতার চেয়ে লবিং ও লেনদেন মুখ্য ভূমিকা রেখেছে বলে অভিযোগ ওঠে। এই অভিযোগও আছে যে, পুলিশকে উপযুক্ত প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে না। ফলে কার্যক্ষেত্রে দক্ষতা দেখাতে ব্যর্থ হচ্ছে তাদের অনেকে।

পুলিশ নিজেই যখন এভাবে পর্যুদস্ত হচ্ছে, তখন মানুষের নিরাপত্তার বিষয়টি বেশি করে শঙ্কার মধ্যে পড়ে। এর আগে গোয়েন্দা পুলিশের এক কর্মকর্তা ও তার স্ত্রীকে নিজের মাদকাসক্ত মেয়ে নির্মম কায়দায় হত্যা করেছে। বাংলাদেশের পুলিশি-ব্যবস্থা প্রশ্নের মুখোমুখি হচ্ছে। বিরোধী রাজনৈতিক গোষ্ঠীর ওপর চরম দমন-নিপীড়ন করছে তারা, এইসব দমন-পীড়নের কোনো আইনের ভিত্তি নেই। স¤পূর্ণ নিরপরাধ মানুষ কেবল রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে অবর্ণনীয় নিপীড়নের শিকার হচ্ছে। এ ধরনের কাজে দেশের পুলিশকে ‘সর্বোচ্চ সফলতা’ প্রদর্শন করতেও দেখা গেছে। এতে দেশের জনগণের বৃহত্তর অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। লাভবান হয়েছে শুধু ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী। পুলিশের কাজ মতাদর্শের কারণে এক গোষ্ঠীকে দমানো এবং অন্য গোষ্ঠীকে আশকারা দেয়া নয়। এটা কোনোভাবেই পেশাদারিত্ব হতে পারে না।
jjshim146@yahoo.com

http://www.dailynayadiganta.com/detail/news/200026