৯ আগস্ট ২০১৬, মঙ্গলবার, ১০:৪৩

গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির প্রস্তাবনায় ক্ষোভ প্রকাশ তরে তা প্রত্যাহারের আহ্বান

দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতিতে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির লোকেরা যখন দিশেহারা ঠিক সেই মুহূর্তে সরকার কর্তৃক আবারও গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির প্রস্তাবে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে তা প্রত্যাহারের আহবান জানিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারী জেনারেল ডা: শফিকুর রহমান আজ ৯ আগস্ট প্রদত্ত এক বিবৃতিতে বলেন, “সরকার কর্তৃক দফায় দফায় গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধিতে মানুষের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গিয়েছে। বিশেষ করে নিম্ন-আয়ের এবং মধ্যবিত্ত শ্রেণির লোকেরা সরকারের গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির এই প্রস্তাবনায় হতাশ হয়ে পড়েছে।

বিশ্ব বাজারে যখন সকল প্রকার জ্বালানীর মূল্য কমেছে ঠিক সেই মুহূর্তে গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির প্রস্তাবনা সরকারের পক্ষ থেকে জনগণের প্রতি তামাশার শামিল। নতুন প্রস্তাবনায় গৃহস্থালী কাজে ব্যবহৃত প্রতি এক চুলার মাসিক বিল ৬শ টাকা থেকে বৃদ্ধি করে ১ হাজার ১০০ টাকা, দুই চুলার মাসিক বিল ৬৫০ টাকা থেকে বৃদ্ধি করে ১ হাজার ২০০ টাকা, মিটারযুক্ত গ্যাসের দাম প্রতি ঘণমিটার ৭ টাকা থেকে বৃদ্ধি করে ১৬.৮০ টাকা, শিল্পে ব্যবহৃত গ্যাসের দাম ৬.৭৪ টাকা থেকে বৃদ্ধি করে ১০.৯৫ টাকা করার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। অথচ বর্তমানে গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির কোন যৌক্তিকতা নেই। এ প্রস্তবানায় আবারও প্রমাণিত হলো যে, জনগণের প্রতি এ সরকারের কোন দায়বদ্ধতা নেই। সরকারের এ প্রস্তাবনা মরার উপর খাঁড়ার ঘায়ের শামিল। বারবার গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির ফলে মানুষ কী পরিমাণ ক্ষিপ্ত হয়ে পড়েছে গত ৭ আগস্ট শুনানি চলাকালে উপস্থিত বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার লোকদের হইচই ও তীব্র ক্ষোভের ঘটনায় তা বুঝা যায়। গত ৭ আগস্ট শুনানীতে অংশগ্রহণ করে দেশের বর্তমান পরিস্থিতে ব্যবসায়ীদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গিয়েছে বলে মন্তব্য করেন এফবিসিসিআই-এর সভাপতি আবদুল মাতলুব আহমাদ। বর্তমান সরকারের আমলে ইতোপূর্বে ৩ বার গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি করা হয়েছে। এখন চতুর্থবারের মত গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির প্রস্তাব করা হল। গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির ফলে শিল্প ও কলকারাখানার উৎপাদন খরচ বাড়বে এবং গ্যাসচালিত যানবাহনের ভাড়াও বাড়বে। ফলে জনদুর্ভোগ আরও বৃদ্ধি পাবে।

গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির প্রভাব সর্বক্ষেত্রে পড়বে। ফলে সাধারণ মানুষ দারুণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। বেসরকারী খাতে বিনিয়োগ না থাকায় কর্মসংস্থান যেমন বাড়ছে না তেমনি বেসরকারী খাতে কর্মচারীদের বেতনও তেমন বাড়ছে না। বরং ছোট-বড় বিভিন্ন কারখানা থেকে কর্মচারী ছাঁটাই করা হচ্ছে। ফলে সাধারণ মানুষ দুর্বিষহ জীবন-যাপন করছে। জনগণের এই ভোগান্তির প্রতি গণবিচ্ছিন্ন সরকারের কোন খেয়াল নেই।

সরকারের গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির প্রস্তাবে আমি তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করছি এবং এ প্রস্তাব অনতিবিলম্বে প্রত্যাহার করার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি।”