প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারী জেনারেল ডাঃ শফিকুর রহমান
৩ নভেম্বর ২০১৮, শনিবার, ৭:০৪

স্বাস্থ্য কর্মীদের দরদী মন ও আন্তরিকতা নিয়ে গণমানুষের সেবায় আত্মনিয়োগ করতে হবে- ডাঃ শফিকুর রহমান

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, আর্ত-মানবতার সেবা মূলত হক্কুল ইবাদ। তাই স্বাস্থ্য কর্মীদের দরদী মন ও আন্তরিকতা নিয়ে গণমানুষের সেবায় আত্মনিয়োগ করতে হবে। এজন্য সেবাদানকারীকে বিনয়ী ও হাস্যজ্জল হতে হবে। মানুষের সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে আন্তরিকতা, প্রজ্ঞা ও নিষ্ঠার সাথে সমাধান দিতে হবে। তিনি আত্মমানবতার কল্যাণে কাজ করতে স্বাস্থ্যকর্মী সহ সমাজের সকল শ্রেণি ও পেশার মানুষের প্রতি আহবান জানান।

তিনি আজ রাজধানীতে ‘স্বাস্থ্যসেবা সংস্থা’ মিরপুর ও কাফরুল শাখার যৌথ উদ্যোগে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত স্বাস্থ্যকর্মীদের মাঝে মেডিক্যাল ইন্সট্রুমেন্ট বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের নায়েবে আমীর আব্দুর রহমান মুসার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন। উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরীর সহকারি সেক্রেটারি মাহফুজুর রহমান ও ছাত্রনেতা সালাহউদ্দীন আইয়ুবী প্রমূখ। 

সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, আমরা এই জন্যই সৌভাগ্যবান যে, আমরা একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশের নাগরিক। আমরা নিজেদের আরও সৌভাগ্যবান মনে করি যে আমাদের মধ্যে মহামূল্যবান ঈমানী দৌলত রয়েছে। কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য যে, ঔপনিবেশিক শাসনের অবসানের পর আমরা পরপর দু’বার স্বাধীনতা অর্জন করলেও নেতৃত্বের ব্যর্থতার কারণেই আমরা স্বাধীনতার সুফলগুলো ঘরে তুলতে পারিনি। পাকিস্তানের ২৩ বছর ও বাংলাদেশের প্রায় ৫ দশকেও আমাদের স্বপ্নগুলো অধরায় থেকে গেছে। দেশে আইনের শাসন নেই। বিচার বিভাগের স্বাধীনতাও আজ প্রশ্নবিদ্ধ। সরকার জনগণের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে। তারা ফরমায়েসী বাদী, সাজানো সাক্ষী ও দলীয় প্রসিকিউশনের মাধ্যমে জামায়াতের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ একের পর এক হত্যা করে দেশকে রক্তাক্ত ও কলঙ্কিত করেছে। যা আলোচিত-সমালোচিত সাবেক প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহার লেখা বই থেকে সুষ্পষ্ট। কিন্তু হত্যা করে কোন আদর্শকে অতীতে নির্মূল করা যায় নি আর কখনো যাবেও বরং শাহাদাতের পথ ধরেই আমাদের বিজয় একদিন অবধারিত হয়ে উঠবে-ইনশা আল্লাহ।

তিনি বলেন, সরকার নিজেদের অবৈধ ক্ষমতাকে দীর্ঘায়িত করতেই বিরোধী দলগুলোর ওপর জুূলুম-নির্যাতন অব্যাহত রেখেছে। তারা পুরো দেশকেই একটা কারাগারে পরিণত করেছে। কারাগারেও বাইরে মানুষ স্বস্তিতে নেই। কারণ, ‘ঘরে থাকলে খুন আর বাইরে থাকলে গুম’ এই অবস্থায় এখন সাধারণ মানুষকে তাড়া করে ফিরছে। তাই দেশ ও জাতিতে এই শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা থেকে বাঁচাতে হলে সকল পেশা ও শ্রেণির মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।

তিনি আরও বলেন, আমাদের দেশ সাংবিধানিকভাবে বহুদলীয় গণন্ত্রের দেশ হলেও সরকার জনগণের জন্য রাজপথ বন্ধ করে দিয়েছে। বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে গায়েবী মামলা দিয়ে হয়রানী করা হচ্ছে। বাদ যাচ্ছেন না মৃত, বৃদ্ধ ও প্রবাসীরাও। সরকার আমাদের সকল পথ রুদ্ধ করে দিয়েছে। কিন্তু তারা আমাদের এক পথ বন্ধ করে দিলেও আল্লাহ আমাদের জন্য ১০ পথ খুলে দিয়েছেন। মূলত সরকার আমাদের কোন ক্ষতি করতে পারেনি আর পারবেও না বরং বিজয় আমাদের জন্য অবধারিত।  

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন বলেন, দেশ ও জাতি এক কঠিন সময় অতিক্রম করছে। বর্তমান ক্রান্তিকাল থেকে উত্তরণের জন্য মানুষ বিকল্প শক্তিকে খুঁজছে। আমরা যদি উন্নতর আদর্শ নিয়ে গণমানুষে পাশে দাঁড়াতে পারি তাহলেই জনগণ আমাদেরকে বিকল্প শক্তি হিসেবে গ্রহণ করবে। তিনি দেশ ও জনগণের সেবায় সকলকে ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস চালানোর আহবান জানান।