২০ সেপ্টেম্বর ২০১৮, বৃহস্পতিবার, ৭:৪২

তথাকথিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পাশ করার ঘটনার তীব্র নিন্দা

বর্তমান সরকারের তথাকথিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন জাতি ঘৃণার সাথে প্রত্যাখ্যান করছে

সম্পাদক পরিষদ, সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ, সকল বিরোধী দল ও বুদ্ধিজীবীসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষের মতামতকে উপেক্ষা করে বহুল সমালোচিত তথাকথিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পাশ করার ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারী জেনারেল ডা. শফিকুর রহমান আজ ২০ সেপ্টেম্বর প্রদত্ত এক বিবৃতিতে বলেন, “যখন থেকে সরকার বহুল সমালোচিত তথাকথিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পাশের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে তখন থেকেই সম্পাদক পরিষদ, সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ, সকল বিরোধী দল ও বুদ্ধিজীবীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ এই আইন পাশ না করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে আসছে। কিন্তু সরকার সকলের মতামত উপেক্ষা করে গতকাল ১৯ সেপ্টেম্বর তথাকথিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনটি পাশ করেছে। আমি এই আইনের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।
তথাকথিত এই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে বহু সমালোচিত ও বিতর্কিত ৩২ ধারা বহাল রাখা হয়েছে। এই ধারায় বলা হয়েছে ‘যদি কোন ব্যক্তি অফিসিয়াল সিক্রেসি এ্যাক্ট-এর আওতাভূক্ত অপরাধ কম্পিউটার, ডিজিটাল ডিভাইস, কম্পিউটার নেটওয়ার্ক, ডিজিটাল নেটওয়ার্ক বা অন্য কোন ইলেক্ট্রনিক মাধ্যমে সংঘটন করেন বা করতে সহায়তা করেন তাহলে তিনি অনধিক ১৪ বছরের কারাদণ্ড বা অনধিক ২৫ লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।’ ৩২ (২) ধারায় বলা হয়েছে ‘যদি কোন ব্যক্তি উপধারা-১ এ উল্লেখিত অপরাধ দ্বিতীয়বার বা পুনঃপুন সংঘটন করেন তাহলে যাবজ্জীবন বা অনধিক ১ কোটি টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।’ এ থেকে স্পষ্টভাবে বুঝা যাচ্ছে যে, তথাকথিত ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন’ একটি কুখ্যাত কালো আইন।

সরকার এই কুখ্যাত কালো আইন পাশ করে জাতিকে ১৯৭৫ সালে তৎকালীন সরকারের সংবাদ মাধ্যমের কণ্ঠরোধ করতে ৪টি সংবাদ পত্র সরকারের নিয়ন্ত্রণে রেখে বাকী সব সংবাদপত্র বন্ধ করে দেয়ার কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। বাকশালের সেই কালো আইন জাতি ঘৃণার সাথে প্রত্যাখ্যান করেছিল। বর্তমান সরকারের তথাকথিত এই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনও জাতি ঘৃণার সাথে প্রত্যাখ্যান করছে। এই আইন দেশের মানুষের মত প্রকাশের স্বাধীনতা এবং সংবাদপত্র ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতার সম্পূর্ণ পরিপন্থী। শুধু তাই নয়, এ আইন দেশের সংবিধানের সাথেও সাংঘর্ষিক। এই আইন পাশ করার মাধ্যমে সরকার গণমাধ্যম ও সংবাদপত্রের এবং মানুষের মত প্রকাশের স্বাধীনতা হরণ করেছে। এই আইন পাশ করা মূলতঃ দেশের মানুষের মত প্রকাশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার শামিল। এই কালো আইনের বিরুদ্ধে তীব্র গণ প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য আমি জাতি-ধর্ম-পেশা নির্বিশেষে দেশবাসীর প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।

দেশের জনগণ এই কালো আইন মানবে না। তাই অবিলম্বে এই কালো আইন বাতিল করার জন্য আমি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।”