১৩ অক্টোবর ২০১৭, শুক্রবার, ৮:০৪

আমীরে জামায়াতসহ গ্রেফতারকৃত সকল নেতৃবৃন্দের মুক্তির জন্য মহান আল্লাহর দরবারে দেশব্যাপী দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহা. রেজাউল করিম বলেছেন, সরকার দেশ থেকে ইসলাম ও ইসলামী মূল্যবোধ ধ্বংস করতেই জামায়াতে ইসলামীকে বিশেষভাবে টার্গেট করেছে। সেই গভীর ষড়যন্ত্রের ধারাবাহিকতায় আমীর জামায়াত ও বয়োবৃদ্ধ জাতীয় নেতা মকবুল আহমাদ, নায়েবে আমীর ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার ও সেক্রেটারি জেনারেল ডা. শফিকুর রহমান সহ নেতৃবৃন্দ গ্রেফতার করে রিমান্ডের নামে হয়রানী করা হচেছ। কিন্তু ইতিহাস সাক্ষী জুলুম-নির্যাতন চালিয়ে অতীতে কখনো ইসলামের অগ্রযাত্রা রোধ করা যায়নি। তিনি আমীরে জামায়তসহ আটক নেতৃবৃন্দের মুক্তি, সুস্বাস্থ্য, দীর্ঘায়ু ও মহান আল্লাহ তায়ালার রহমত কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত পরিচালনা করেন।

তিনি আজ রাজধানীর একটি মিলনায়তনে কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচী ‘দোয়া দিবস’ উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তর আয়োজিত দোয়া মাহফিলে সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। দোয়া মাহফিলে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগরী উত্তরের কর্মপরিষদ সদস্য নাজিম উদ্দীন মোল্লা ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের মজলিশে শুরা সদস্য ডা. ফখরুদ্দীন মানিক প্রমূখ।

ড. এম আর করিম বলেন, সরকার দেশকে বিরোধী দলমুক্ত ও একদলীয় বাকশালী শাসন কায়েম করতেই ফরমায়েসী বাদী, সাজানো সাক্ষী, দলীয় প্রসিকিউশন ও কাল্পনিক অভিযোগে সাবেক আমীরে জামায়াত ও বিশ^বরেণ্য আলেমে দ্বীন মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী, সাবেক সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, সাবেক সহকারি সেক্রেটারি জেনারেল মোহাম্মদ কামারুজ্জামান ও আব্দুল কাদের মোল্লা এবং সাবেক কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মীর কাসেম আলীকে নির্মম ও নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করেছে। সরকারের বিরাজনীতিকরণের অংশ হিসেবেই জনপ্রিয় বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের নামে হাজার হাজার মিথ্যা, বানোয়াট ও যোগসাজসী মামলা দিয়ে তাদেরকে বছরের পর বছর ধরে কারারুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। রিমান্ডের নামে এসব নেতাকর্মীদের ওপর চালানো হয়েছে লোমহর্ষক ও অবর্ণনীয় নির্যাতন। কিন্তু সরকার বিরোধী দল নির্মূলের জন্য যতই জুলুম-নির্যাতনের মাত্রা বাড়িয়ে দিয়েছে, জনতার প্রতিরোধও ততই শানিত হচ্ছে। তাই জামায়াতের বিরুদ্ধে কোন ষড়যন্ত্র সফল হবে না বরং তা সরকারের জন্যই বুমেরাং হবে-ইনশা আল্লাহ।

তিনি বলেন, সরকার দেশ পরিচালনায় সার্বিকভাবে ব্যর্থ হয়েছে। দেশের মানুষের স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি নেই। সরকারের জুলম-নির্যাতন, হত্যা, সন্ত্রাস, নৈরাজ্য, বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ড, গুম, অপহরণ ও গুপ্তহত্যায় জনমনে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। ফলে অবৈধ সরকার জনবিচ্ছিন্ন হয়ে ক্ষমতা হারানোর প্রহর গুণছে। তারা জনগণের শক্তির ওপর আস্থা হারিয়ে দেশকে পুলিশী রাষ্ট্রে পরিণত করেছে। সরকার জনগণের জানমালের নিরাপত্তা দেয়ার পরিবর্তে নিজেরাই জননিরাপত্তায় বিঘ্ন সৃষ্টি করছে। তারা রাজনৈতিক উচ্চাভিলাষ চরিতার্থ করতেই রাষ্ট্রের সকল অঙ্গকে দলীয়করণ করে ফেলেছে। ধবংস করা হয়েছে গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ। দেশের বিচারবিভাগকে সরকারের আজ্ঞাবাহী প্রতিষ্ঠানে পরিণত করার ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। মাননীয় প্রধান বিচারপতির সাথে সরকারের ঘৃণ্য আচরণ সে কথায় স্মরণ করিয়ে দেয়। কিন্তু এসব করে জুলুমবাজ ও স্বৈরাচারী সরকারের শেষ রক্ষা হবে না বরং ইতিহাসের ধারাবাহিকতায় সরকারকে লজ্জাজনকভাবে ক্ষমতা থেকে বিদায় নিতে হবে। 

চট্টগ্রাম মহানগরী জামায়াতের দোয়া মাহফিলে নেতৃবৃন্দ

আমীরে জামায়াত মকবুল আহমদসহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ ও চট্টগ্রাম মহানগরী আমীর শাহজাহান ও সেক্রেটারী নজরুল ইসলামের মুক্তি দাবী

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় আমীরে জামায়াত মকবুল আহমদ,নায়েবে আমীর ও সাবেক এমপি মিয়া গোলাম পরওয়ার,সেক্রেটারী জেনারেল ডাক্তার মুহাম্মদ শফিকুর রহমান, চট্টগ্রাম মহানগরী আমীর মুহাম্মদ শাহজাহান ও সেক্রেটারী মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা জামায়াতের আমীর মুহাম্মদ জাফর সাদেকসহ গ্রেফতারকৃত কেন্দ্রীয় এবং সারাদেশের নেতা-কর্মীদের নি:শর্ত মুক্তির দাবীতে জামায়াত কেন্দ্র ঘোষিত তিনিদিন ব্যাপী কর্মসূচীর তৃতীয় দিনে দোয়া দিবস উপলক্ষে চট্টগ্রাম মহানগরী জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে বিভিন্ন থানায় থানায় দোয়া মাহফিল ও আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।

দোয়া মাহফিলে জামায়াত নেতৃবৃন্দ বলেন, সরকার জামায়াতকে নেতৃত্ব শূন্য করে নির্বাচন থেকে বিরত রাখার ষড়যন্ত্র করে নেতৃবৃন্দকে গ্রেফতার করে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে কারাগারে পাঠিয়েছে। জেল,জুলুম ও মিথ্যা মামলা দিয়ে হত্যা করে ইসলামী আন্দোলনকে নিশ্চিহ্ন করা যাবে না। সরকার সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে জামায়াত আমীর মকবুল আহমদসহ চট্টগ্রাম মহানগরী জামায়াতের আমীর মাওলানা মুহাম্মদ শাহজাহান,সেক্রেটারী মুহাম্মদ নজরুল ইসলামকে গ্রেফতার করেছে।

নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে আমীরে জামায়াত মকবুল আহমদসহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ,চট্টগ্রাম মহানগরীর আমীর মুহাম্মদ শাহজাহান ও সেক্রেটারী মুহাম্মদ নজরুল ইসলামসহ সারাদেশে গ্রেফতারকৃত নেতা-কর্মীদের নি:শর্ত মুক্তির দাবী জানান।

সিলেট মহানগর জামায়াতের দোয়া মাহফিল 

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য ও সিলেট মহানগরীর আমীর এডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের বলেছেন- বাংলাদেশে ইসলাম, ইসলামী আন্দোলন ও ইসলামী নেতৃত্ব চরম ক্রান্তিকাল অতিবাহিত করছে। ইসলামী আন্দোলনকে বাধাগ্রস্থ করতেই আমীরে জামায়াত মকবুল আহমদ, সেক্রেটারী জেনারেল ডা: শফিকুর রহমান সহ জাতীয় নেতৃবৃন্দকে অন্যায়ভাবে গ্রেফতার ও রিমান্ডের নামে নির্যাতন চালানো হচ্ছে। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ক্ষমতাসীন ইসলাম বিদ্বেষী অবৈধ সরকারের সীমাহীন জুলুমের শিকার। আল্লাহ পাক রাব্বুল আলামিন মজলুমদের দোয়া ফিরিয়ে দেন না। তাই মজলুমদের বেশী বেশী করে আল্লাহর কাছে দোয়া চাইতে হবে। যে মাটিতে নিরপরাধ শীর্ষ জামায়াত নেতৃবৃন্দের রক্ত ঝরেছে সে মাটিতে ইসলামী আন্দোলন সফল হবেই, ইনশাআল্লাহ। ওলী আউলিয়ার এদেশ ইসলামের জন্য উর্বর ভুমি।

আমীরে জামায়াত-সেক্রেটারী জেনারেল সহ জাতীয় নেতৃবৃন্দকে গ্রেফতার নির্যাতন চালিয়ে এদেশে ইসলামী আন্দোলন দমিয়ে রাখা যাবে না। সময়ের ব্যাবধানে সকল জুলুম, অন্যায় ও অবিচারের বিচার বাংলার মাটিতে হবেই। শত শত মজলুম মানুষের মোনাজাত ও চোখের পানিতে জালিম সরকারের মসনদ ভেসে যাবে ইনশাআল্লাহ। 

তিনি আজ শুক্রবার জামায়াত কেন্দ্র ঘোষিত দেশব্যাপী দোয়া দিবস কর্মসুচীর অংশ হিসেবে আমীরে জামায়াত মকবুল আহমদ ও সেক্রেটারী জেনারেল ডা: শফিকুর রহমান সহ জাতীয় নেতৃবৃন্দের মুক্তি ও সুস্থতা কামনায় সিলেট মহানগর জামায়াত আয়োজিত দোয়া মাহফিল পুর্ব সংক্ষিপ্ত সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে উপরোক্ত কথা বলেন। সিলেট মহানগর জাময়াতের সেক্রেটারী মাওলানা সোহেল আহমদের পরিচালনায় বাদ আসর নগরীর একটি মসজিদে অনুষ্ঠিত দোয়া মাহফিল অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- মহানগর জামায়াত নেতা মো: আব্দুর রব, মুফতী আলী হায়দার, ক্বারী আলা উদ্দিন, মু. আজিজুল ইসলাম, মাহমুদুর রহমান দিলোয়ার ও ইসলামী ছাত্র শিবির সিলেট মহানগর সেক্রেটারী নজরুল ইসলাম প্রমুখ।

মাহফিলে-আমীরে জামায়াত মকবুল আহমদ, নায়েবে আমীর মিয়া গোলাম পারওয়ার, সেক্রেটারী জেনারেল ডা: শফিকুর রহমান সহ কারান্তরীন জাতীয় নেতৃবৃন্দসহ সকল রাজবন্দীদের মুক্তি, এদেশের ইসলামী আন্দোলনের সফলতা ও দেশ-জাতির কল্যান-শান্তি কামনায় বিশেষ মোনাজাত পরিচালনা করেন এডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের ।

এছাড়াও রাজশাহী, বরিশাল, খুলনা, কুমিল্লা, রংপুর, নারায়াণগঞ্জ, গাজীপুর, ময়মনসিংহ, নরসিংদী, বগুড়া, দিনাজপুর, নীলফামারী, সিরাজগঞ্জ, চাপাইনবাবগঞ্জ, পাবনা, নোয়াখালী, ফেনী, লক্ষ্মীপুর, মানিকগঞ্জ, ফরিদপুর, যশোরসহ দেশের আরো বিভিন্ন জায়গায় দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।