১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৭, বৃহস্পতিবার, ৬:২১

আনান কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নের জন্য কমিটি গঠনের ঘোষণায় তীব্র নিন্দা

মিয়ানমার সরকার কতৃক আনান কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নের জন্য কমিটি গঠনের ঘোষণা বিপন্ন মানবতার প্রতি ঠাট্টা ও উপহাস ছাড়া আর কিছুই নয়

মিয়ানমার সরকার অবশেষে জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব কফি আনান কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নের জন্য একটি কমিটি গঠনের যে ঘোষণা দিয়েছে তার নিন্দা জানিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারী জেনারেল ডাঃ শফিকুর রহমান আজ ১৪ সেপ্টেম্বর প্রদত্ত এক বিবৃতিতে বলেন, “মিয়ানমার সরকার অবশেষে জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব কফি আনান কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নের জন্য একটি কমিটি গঠনের যে ঘোষণা দিয়েছে আমি তার নিন্দা জ্ঞাপন করছি। রোহিঙ্গা মুসলমানদের উপর পরিচালিত গণহত্যার বিরুদ্ধে সারা বিশ্বে যে তীব্র প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে তা থেকে বিশ্ববাসীর দৃষ্টি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার হীনউদ্দেশ্যেই মিয়ানমার সরকার জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব কফি আনান কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নের জন্য একটি কমিটি গঠনের প্রতারণাপূর্ণ ঘোষণা দিয়েছে।

মিয়ানমার সরকার সে দেশের রোহিঙ্গা মুসলমানদের উপর নির্মমভাবে গণহত্যা চালিয়ে নারীদের গণহারে ধর্ষণ করে তাদের বাড়ী-ঘরে আগুন দিয়ে প্রায় ৪ লক্ষ মুসলমানকে দেশ থেকে বিতাড়িত করে বাংলাদেশে পালিয়ে আসতে বাধ্য করে অবশেষে কফি আনান কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নের জন্য কমিটি গঠনের যে প্রতারণাপূর্ণ ঘোষণা দিয়েছে তা বিপন্ন মানবতার প্রতি ঠাট্টা ও উপহাস ছাড়া আর কিছুই নয়। মিয়ানমার সরকারের রোহিঙ্গা মুসলমানদের উপর পরিচালিত গণহত্যার বিরুদ্ধে সারা বিশ্বে প্রতিবাদ ও নিন্দার ঝড় উঠেছে। যে মুহূর্তে মিয়ানমারে গণহত্যা বন্ধের দাবীতে জাতিসংঘসহ সকল আন্তর্জাতিক সংস্থা ও রাষ্ট্র সোচ্চার হয়েছে সে মুহূর্তে মিয়ানমার সরকারের কফি আনান কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নের ঘোষণা প্রকৃত সমস্যা পাশ কাটিয়ে তাদের মুখ রক্ষার জন্য একটি রাজনৈতিক কূটকৌশল ছাড়া আর কিছুই নয়।

রোহিঙ্গা মুসলমানদের উপর মিয়ানমার সরকারের পরিচালিত গণহত্যা, ধর্ষণ, বাড়ী-ঘরে অগ্নিসংযোগ ও তাদের দেশ ত্যাগে বাধ্য করার ঘটনার নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু তদন্তের জন্য জাতিসংঘের পক্ষ থেকে একটি আন্তর্জাতিক তদন্ত কমিশন গঠন করা হোক। রোহিঙ্গা মুসলমানদের উপর পরিচালিত গণহত্যা বন্ধ করে তাদের দেশে ফিরিয়ে নিয়ে নাগরিকত্ব ফিরিয়ে দিয়ে তাদের পূর্নবাসন করে তাদের উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ প্রদান করার ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য আমি জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।

সেই সাথে মিয়ানমারের সরকার গণহত্যা চালিয়ে যে মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছে তার সাথে জড়িত সকল সামরিক ও বেসামরিক দুর্বৃত্তদের আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী বিচার করার উদ্যোগ গ্রহণ করার জন্য আমি জাতিসংঘের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।”