৩০ আগস্ট ২০১৭, বুধবার, ২:১৭

রোহিঙ্গা মুসলমানদের হেফাযতের জন্য ১ সেপ্টেম্বর সারা দেশে মহান আল্লাহর নিকট দোয়ার আহ্বান

রোহিঙ্গা মুসলমানদের বাংলাদেশে আশ্রয় দিয়ে বিপন্ন মানবতার প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান

বাংলাদেশের প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের রোহিঙ্গা মুসলমানদের উপর মিয়ানমার সরকারের গণহত্যার তীব্র নিন্দা জানিয়ে ও উদ্বেগ প্রকাশ করে এবং তাদের জন্য আগামী শুক্রবার ১ সেপ্টেম্বর সারা দেশে মহান আল্লাহ তায়ালার নিকট দোয়া করার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর জনাব মকবুল আহমাদ আজ ৩০ আগস্ট প্রদত্ত এক বিবৃতিতে বলেন, “বাংলাদেশের প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা মুসলমানদের উপর মিয়ানমার সরকার গণহত্যা চালিয়ে তাদের দেশ ত্যাগে বাধ্য করার ঘটনায় আমরা বিস্মিত, উদ্বিগ্ন ও মর্মাহত। এ নৃশংস মর্মান্তিক ও বর্বরোচিত ঘটনার আমরা তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করছি এবং মজলুম রোহিঙ্গা মুসলমানদের প্রতি গভীর সমবেদনা ও সহানুভূতি প্রকাশ করছি।

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের রোহিঙ্গা মুসলমানদের উপর মিয়ানমার সরকার ইতিহাসের বর্বরতম গণহত্যা চালাচ্ছে। মিয়ানমার সেনাবাহিনী মুসলমানদের গ্রামের পর গ্রাম বোমা মেরে ও আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দিচ্ছে। নারী, পুরুষ, শিশুদের নির্বিচারে হত্যা করছে। শিশুদের মায়ের কোল থেকে কেড়ে নিয়ে পিতা-মাতা-আত্মীয়-স্বজনদের সামনে প্রকাশ্যে হত্যা করে নারী-ভুড়ি বের করে সবাইকে দেখাচ্ছে। সেনাবাহিনী যুবক-যুবতীদের ধরে নিয়ে তাদের উপর অকথ্য নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করছে ও নারীদের ধর্ষণ করছে। যুবকদের দেখলেই গুলি করে হত্যা করছে। গত কয়েক দিনে প্রায় ৮ শত মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। বাংলাদেশ মিয়ানমার সীমান্তের ঘুমধূম, জলপাইতলীসহ বিভিন্ন এলাকার জিরো পয়েন্টে, বন-জঙ্গলে, খালে-বিলে, পাহাড়ের গিরিপথে হাজার হাজার রোহিঙ্গা মুসলমান বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের জন্য অপেক্ষা করছে। অনেকেই অনাহারে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। অন্তত: ৩০ হাজার রোহিঙ্গা মুসলমান এভাবে অপেক্ষা করছে। অনেকেই আহত অবস্থায় বিনা চিকিৎসায় ও রোগ যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে। নদীতে শিশুদের লাশ ভাসতে দেখা যচ্ছে। এ অবস্থা সত্ত্বেও বিশ্ববিবেককে নাড়া দিচ্ছে না। মুসলমান হওয়াই কি তাদের অপরাধ?

এ অবস্থায় নির্যাতিত-নিপীড়িত রোহিঙ্গা মুসলমানদের জন্য বাংলাদেশের বর্ডার খুলে দিয়ে মানবিক কারণে তাদের বাংলাদেশে আশ্রয় দিয়ে বিপন্ন মানবতার প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করার জন্য আমি বাংলাদেশ সরকারে প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। সেই সাথে রোহিঙ্গা মুসলমানদের উপর পরিচালিত গণহত্যা বন্ধ করে দেশে ফিরিয়ে নিয়ে তাদের নাগরিকত্ব বহাল ও সার্বিক নিরাপত্তা বিধান করে পুনর্বাসনের পদক্ষেপ গ্রহণ করতে মিয়ানমার সরকারকে বাধ্য করার জন্য আমি জাতিসংঘ, ওআইসিসহ সকল আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা এবং বিশেষভাবে মুসলিম রাষ্ট্র ও শান্তিকামী বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।

মিয়ানমারের বিপন্ন রোহিঙ্গা মুসলমানদের হেফাযতের জন্য আগামী শুক্রবার ১ সেপ্টেম্বর সারা দেশে মহান আল্লাহ তায়ালার নিকট কাতরকণ্ঠে বিগলিত চিত্তে বিশেষভাবে দোয়া করার জন্য আমি প্রিয় দেশবাসীর প্রতি আন্তরিকভাবে আহ্বান জানাচ্ছি।”