আমীরে জামায়াত

2020-03-22

করোনাভাইরাসের ব্যাপক বিস্তৃতির খবরে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন

করোনাভাইরাসের বিস্তৃতির প্রেক্ষাপটে সরকারকে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করার আহ্বান

করোনাভাইরাসের বিস্তৃতির প্রেক্ষাপটে সরকারকে কার্যকর পদক্ষেপ গহণ করার আহ্বান জানিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান ২২ মার্চ প্রদত্ত এক বিবৃতিতে বলেন,
“বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের ব্যাপক বিস্তৃতির খবরে আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। করোনাভাইরাস পরীক্ষার জন্য কীটের যথেষ্ট সংকট রয়েছে। করোনাভাইরাস পরীক্ষার কীটসহ আনুষঙ্গিক সামগ্রী সহজলভ্য ও সুলভে বিতরণের ব্যবস্থা করা দরকার। পর্যাপ্ত পরিমাণে কীটের সরবরাহ নিশ্চিত করা সরকারেরই দায়িত্ব। করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের সেবায় নিয়োজিত ডাক্তার-নার্সসহ সর্বস্তরের স্বাস্থ্য সেবাকর্মী এবং স্বাস্থ্য সুরক্ষায় নিয়োজিত আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য ও কোয়ারেন্টিনের দায়িত্বে বিশেষভাবে নিয়োজিত সেনাবাহিনীর সদস্যদের সুরক্ষা সরকারকেই নিশ্চিত করতে হবে। তা না হলে তাদের স্বাস্থ্য যেমন ঝুঁকিতে পড়বে, তেমনি তাদের থেকে এ রোগ ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কাও দেখা দিবে।

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত দেশসমূহ থেকে যে সকল যাত্রী বাংলাদেশে এসেছেন তাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষাসহ আনুষঙ্গিক আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করতে সরকার ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। বিদেশ ফেরত যাত্রীদের বাংলাদেশে প্রবেশের সময় বিশ্ব স্বাস্থ্যসংস্থা প্রদত্ত নির্দেশনা মানা হয়নি। প্রত্যেক যাত্রীকে কমপক্ষে ১৪ দিন কোয়ারেন্টিনে থাকার কথা বলা হলেও তা পালন করা হয়নি। বিদেশ ফেরত যাত্রীরা যে যার মত বাড়িতে চলে গেছেন এবং তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়ানোর অভিযোগ রয়েছে। এতে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা বহু গুণে বৃদ্ধি পেয়েছে। সরকার যদি আগে থেকেই বিদেশ ফেরত যাত্রীদের বাধ্যতামূলক ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিনে থাকার কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করত তাহলে করোনাভাইরাস রোধ অনেকটাই সহজ হতো। এর দায়-দায়িত্ব সরকার কোনভাবেই এড়াতে পারে না। পার্শ্ববর্তী দেশসহ অনেক দেশ যখন সম্পূর্ণ লকডাউন করছে, তখন আমাদের সীমান্ত লকডাউনসহ সার্বিক বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া দরকার।

সরকার, প্রশাসন, রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনসমূহ এবং জনগণের ইস্পাত কঠিন ঐক্য প্রয়োজন। পরিস্থিতি মুকাবিলায় এর কোনো বিকল্প নেই।

আইইডিসিআর-এর তথ্যানুযায়ী গত ৫৫ দিনে বিদেশ থেকে ৬ লাখ ২৪ হাজার লোক দেশে প্রত্যাবর্তন করলেও কোয়ারেন্টিনে বর্তমানে আছেন মাত্র ১৫,১৭২ জন। বাকিদের অধিকাংশই কোনো স্বাস্থ্য পরীক্ষা ছাড়াই পরিবারের লোকদের সাথে বসবাস করছেন। করোনাভাইরাস অত্যন্ত ছোঁয়াচে। ফলে তারা যত্রতত্র ঘোরাফেরা করে নিজেদেরকে যেমন ঝুঁকির মধ্যে রেখেছেন, তদ্রূপ পরিবার, সমাজ এবং দেশকেও ঝুঁকির মধ্যে ফেলছেন।

বিদেশ ফেরত যাত্রীদের ১৪ দিন কোয়ারেন্টিন পালন নিশ্চিতকরণ, করোনাভাইরাস শনাক্তকরণ কীটের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা এবং স্বাস্থ্য সেবায় নিয়োজিত ডাক্তার ও নার্সদের সুরক্ষার ব্যাপারে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য আমি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।”