পবিত্র মাহে রমাদানের ডাক_২০২০

রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের সওগাত নিয়ে পবিত্র মাহে রমাদানের আগমন

পবিত্র রমাদান মাসে তাক্বওয়ার ভিত্তিতে ব্যক্তি, সমাজ ও রাষ্ট্র পরিচালনার আহবান

মাহে রমাদানের পবিত্রতা রক্ষা এবং তাক্বওয়ার ভিত্তিতে ব্যক্তি, সমাজ ও রাষ্ট্র পরিচালনার আহ্বান জানিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান নিম্নোক্ত বিবৃতি প্রদান করেছেনঃ-

“বিশ্বব্যাপী করোনা ভাইরাসের ব্যাপক সংক্রমণের প্রেক্ষাপটে রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের সওগাত নিয়ে আমাদের সামনে এসেছে পবিত্র মাহে রমাদান। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, ‘এ মাসের প্রথম অংশ রহমতের, মধ্যবর্তী অংশ মাগফিরাতের ও শেষ অংশ জাহান্নাম থেকে নাজাতের।’ এ মাসের শেষ দশ দিনের মধ্যে রয়েছে পবিত্র লাইলাতুল ক্বদর নামে একটি বরকতময় রাত যা হাজার মাসের চেয়েও উত্তম। এ মাসে একটি ফরজ কাজ আঞ্জাম দিলে অন্য মাসের ৭০টি ফরজ কাজের সমান সওয়াব পাওয়া যায়; আর ১টি নফল কাজের আঞ্জাম দিলে ১টি ফরজ কাজের সমপরিমাণ সওয়াব পাওয়া যায়। এ মাস তাক্বওয়া ও পরস্পরের প্রতি সহানুভূতিশীলতার মাস।

দেশে করোনা ভাইরাসের এই বিপর্যয়কর পরিস্থিতিতে মানুষ একেবারে অসহায় হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে নিম্ন আয়ের মানুষের উপার্জন বন্ধ হয়ে পথে বসার উপক্রম হয়েছে। এ সকল অসহায় মানুষের পাশে সাহায্য-সহযোগিতা নিয়ে দাঁড়ানোর জন্য আমি সকলের প্রতি আহবান জানাচ্ছি।

পবিত্র এ রমাদান মাস কুরআন নাজিলের মাস। কুরআন মানবজাতির প্রতি আল্লাহ তায়ালার সর্বশ্রেষ্ঠ নিয়ামত। পবিত্র কুরআন অধ্যয়নের মাধ্যমে কুরআনকে সঠিকভাবে জানা এবং সেই অনুযায়ী নিজের ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও রাষ্ট্রীয় জীবন গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার মাধ্যমেই সত্যিকার অর্থে পবিত্র রমাদান মাসের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করা সম্ভব। কুরআন থেকে হিদায়াত লাভের জন্য যে মন-মানসিকতা ও চরিত্রের প্রয়োজন, সেই মন ও চরিত্র গঠনের উদ্দেশ্যেই আল্লাহ তায়ালা মাহে রমাদানের সিয়াম পালনকে আমাদের প্রতি ফরজ করেছেন। পূর্ণ মর্যাদার সাথে ও পরিপূর্ণ হক আদায় করে মাসব্যাপী সিয়াম পালনের মাধ্যমে সে লক্ষ্য অর্জনে সচেষ্ট হওয়ার জন্য আমি সকলের প্রতি আহবান জানাচ্ছি।

আল্লাহর বিধান না মানার কারণেই আজ বিশ্বব্যাপী করোনা ভাইরাসের এই মহাদুর্যোগ আপতিত হয়েছে। মহান আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে ঘোষণা করেছেন, 'তোমাদের উপর যে বিপদ-আপদ এসেছে তা তোমাদের হাতের কামাই। অনেক অপরাধ তো আল্লাহ ক্ষমাই করে দেন।’ আজ সমাজে বেহায়াপনা, অশ্লীলতা, ঘুষ, দুর্নীতি, শোষণ, জুলুম, নারী ও শিশু নির্যাতন, ধর্ষণ, হত্যা এবং মানবতাবিরোধী কর্মকাণ্ডসহ নৈতিক অবক্ষয় ব্যাপকভাবে বেড়েই চলেছে; যে কারণে মানুষের উপর আল্লাহর পক্ষ থেকে বিপদ-আপদ আসছে। সকল পর্যায়ে আল্লাহর বিধান মেনে চললেই সমাজ থেকে সকল প্রকারের পাপাচার-অপরাধ দূর হবে এবং বিপদ-আপদ ও আজাব থেকে মানুষ রেহাই পাবে।

রমাদানের পবিত্রতা রক্ষা, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ, অশ্লীলতা, বেহায়াপনা ও নগ্নতা বন্ধ করার দায়িত্ব প্রধানত সরকারের। আমরা সরকারকে এ সব গর্হিত কাজ বন্ধের জন্য যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করার আহ্বান জানাচ্ছি। উপরন্তু দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধ করে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য জনগণের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে নিয়ে আসা এবং দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি সাধন করে মানুষের জান-মাল-ইজ্জতের নিরাপত্তা বিধানের লক্ষ্যে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য আমি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহবান জানাচ্ছি।”