আরও

১১ আগস্ট ২০১৪, সোমবার

ফিলিস্তিনের গাজায় পুনরায় ইসরাইলের হামলা এবং গণহত্যার প্রতিবাদে সারাদেশে জামায়াতের শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ কর্মসূচি পালিত

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য কবির আহমদ বলেছেন, ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরাইলী বাহিনী ইতিহাসের নির্মম নিধনযজ্ঞ ও গণহত্যা চালাচ্ছে। বর্বর ইসরাইলী বাহিনী বেসামরিক স্থাপনাগুলোকে হামলার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করেছে। এতে বিপুল সংখ্যক বেসামরিক লোকের হতাহতের ঘটনা ঘটছে। ঘাতক বাহিনীর হাত থেকে রেহাই পায়নি নিরাপরাধ নারী ও শিশুরা। মূলত ইসরাইলী বাহিনী চলমান গণহত্যার মাধ্যমে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধে লিপ্ত। তিনি অবিলম্বে অবরুদ্ধ গাজায় হামলা ও গণহত্যা বন্ধ এবং হামলা বন্ধে জাতিসংঘ, ও আই সি ও আরবগলীগসহ বিশ্বসংস্থাগুলোকে সোচ্চার ভূমিকা পালনের আহবান জানান। অন্যথায় ইসরাইলী হায়েনারা মানব সভ্যতাকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যাবে।

তিনি আজ রাজধানীর বনশ্রীতে কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচীর অংশ হিসাবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী আয়োজিত ফিলিস্তিনের গাজায় পুনরায় ইসরাইলের হামলা এবং গণহত্যার প্রতিবাদে এক বিক্ষোভ পরবর্তী সমাবেশে একথা বলেন। সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগরীর কর্মপরিষদ সদস্য এ্যাডভোকেট হেলাল উদ্দীন ও অধ্যাপক মোকররাম হোসাইন খান, ঢাকা মহানগরী মজলিশে শুরা সদস্য আবু নাবিল, শামসুর রহমান, কামাল হোসাইন, শিবিরের ঢাকা মহানগরী পূর্বের সেক্রেটারী মনিরুজ্জামান শামীম, খিলগাঁও সেক্রেটারী সগীর বিন সাঈদ, মুগদা সেক্রেটারী বনি আমীন ও সবুজবাগ সেক্রেটারী আব্দুল বারী প্রমূখ।

কবির আহমদ বলেন, গাজায় ইসরাইলী হামলায় এ পর্যন্ত হাজার হাজার ফিলিস্তিনি নারী, পুরুষ, শিশুকে হত্যা করা হয়েছে এবং আহত হয়েছে আরও হাজার হাজার মানুষ। গাজা উপত্যকায় ইসরাইলীদের জিঘাংসা থেকে মসজিদ, স্কুল, বিশ্ববিদ্যালয়, হাসপাতাল ও গৃহহীন লোকদের আশ্রয় শিবির পর্যন্ত রেহাই পায়নি। মূলত গাজা উপত্যকাকে ইসরাইলী ঘাতক বাহিনী ধ্বংস স্তুপে পরিণত করেছে। ফলে সেখানে মারাত্মক মানবিক বিপর্যয় দেয়া দিয়েছে। স্বজনহারাদের আর্তনাদে গাজার আকাশ-বাতাশ ভারী হয়ে এসেছে। প্রতিনিয়ত বোমা ও গোলার শব্দে গাজা উপত্যকা প্রকম্পিত হয়ে উঠছে। মানুষ প্রাণ রক্ষায় উদভ্রান্তের মত ছুটছে। কিন্তু থেকে নেই বর্বর ইসরাইলী বাহিনীর নৃশংস হামলা। এই বর্বোচিত হামলার বিরুদ্ধে বিশ্বের শান্তিকামী মানুষ ধিক্কার, নিন্দা ও প্রতিবাদ জানালেও ঘাতক বাহিনী এখনো বেপরোয়া। তিনি ইসরাইলী বাহিনীর নিধনযজ্ঞ ও গণহত্যা বন্ধে বিশ্ববিবেককে সোচ্চার হওয়ার আহবান জানান।

রমনা জোন ঃ বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরীর রমনা জোনের উদ্যোগে ফিলিস্তিনের গাজায় নতুন করে হামলা ও গণহত্যার প্রতিবাদে এবং অবিলম্বে হামলা বন্ধের দাবীতে নগরীতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। মিছিলটি মহাখালী বাসষ্ট্যান্ড থেকে শুরু হয়ে নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে সাতরাস্তায় এসে সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। বিক্ষোভ মিছিল পরবর্তী সমাবেশে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য ড. রেজাউল করিম। উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগরীর মজলিশে শুরা সদস্য অধ্যাপক আ জ ম কামাল উদ্দীন, সালাহউদ্দীন ও হাফেজ মিজানুর রহমান, বনানী থানা সেক্রেটারী সাইফুল ইসলাম, তেজগাঁও সেক্রেটারী নিয়ামুলক করিম, শিল্পঞ্চল সেক্রেটারী আহসানউল্লাহ ও শিবির ঢাকা মহানগরী উত্তরের সভাপতি মাসুদ পারভেজ প্রমূখ। সমাবেশ থেকে ফেরার পথে ফেরার পথে পুলিশ ২ জামায়াত কর্মী ও ৩ পথচারীসহ ৫ জনকে গ্রেফতার করে।

সমাবেশে ড. রেজাউল করিম বলেন, ইসরাইলী ঘাতক বাহিনী অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকাকে ধ্বংসস্তুপ ও মৃত্যুপুরীতে পরিণত করেছে। তারা সম্পূর্ণ কাপুরুষোচিতভাবে বেসামরিক এলাকায় হামলা চালিয়ে হাজার হাজার সাধারণ মানুষকে হত্যা করে মানবসভ্যতার ইতিহাসকে কলংকিত ও রক্তাক্ত করেছে। ঘাতক বাহিনীর প্রতিহিংসা ও জিঘাংসা থেকে রেহাই পায়নি নারী, শিশু ও বৃদ্ধরা। তারা স্কুল-কলেজ, হাসপাতাল ও আশ্রয় কেন্দ্রে হামলা করতেও কুন্ঠাবোধ করেনি। ইসরাইলের এই বর্বরোচিত হামলা অবিলম্বে বন্ধ করা না গেলে বিশ্বশান্তি হুমকীর মুখে পরবে। তিনি নির্মম গণহত্যা ও হামলা বন্ধে বিশ্বের শান্তিপ্রিয় মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান।

যাত্রাবাড়ী-লালবাগ জোনঃ যাত্রাবাড়ী-লালবাগ জোনের উদ্যোগে রাজধানীর নবাবপুরে ফিলিস্তিনে গণহত্যার প্রতিবাদে ও হামলা বন্ধের দাবীতে এক বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ঢাকা মহানগরী মজলিশে শুরা সদস্য হাফিজুর রহমান। উপস্থিত ছিলেন মহানগরী মজলিশে শুরা সদস্য অধ্যক্ষ মাওলানা আহসানউল্লাহ, সূত্রাপুর সেক্রেটারী শোয়াইব হোসাইন, কোতয়ালী সেক্রেটারী খন্দকার আল আমীন, বংশাল সেক্রেটারী জয়নাল আবেদীন, যাত্রাবাড়ী সেক্রেটারী আবু ফতেহ, শিবিরের ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সভাপতি মাইনুদ্দীন মৃধা, সেক্রেটারী সাদিকবিল্লাহ, সাংগঠনিক সেক্রেটারী জিয়াউদ্দীন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সভাপতি খালিদ মাহমুদ সুজন, প্রচার সেক্রেটারী আতিকুর রহমান, জামায়াত নেতা মতিউর রহমান, এ কে গিয়াস উদ্দীন, আহাদুজ্জামান, নজরুল ইসলাম ও মাওলানা জয়নাল আবেদীন প্রমূখ।

এছাড়াও রাজশাহী, চট্টগ্রাম, সিলেট, খুলনা, বরিশাল, রংপুর, কুমিল্লা, দিনাজপুর, কুড়িগ্রাম, পাবনা, সাতক্ষীরা, সিরাজগঞ্জ, চাঁদপুর ও নোয়াখালীসহ দেশের আরো বিভিন্ন জায়গায় শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে জামায়াত।