বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার এক বৈঠক সংগঠনের আমীর ডা. শফিকুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে দেশের শিক্ষাব্যবস্থা ও শিক্ষাঙ্গণে অরাজকতা, যুব সমাজের নৈতিক চরিত্র বিধ্বংসী পরিবেশের সয়লাবে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে নিম্নোক্ত প্রস্তাব গৃহীত হয়ঃ
“বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা গভীর উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছে যে, দেশের শিক্ষাব্যবস্থা আজ সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে শিক্ষাব্যবস্থা থেকে ধর্মীয় শিক্ষা বাদ দেয়ার অপচেষ্টা চালানো হয়েছে। দেশের শিক্ষাব্যবস্থা থেকে ধীরে ধীরে ইসলামী চেতনা মুছে ফেলে ও নাস্তিক্যবাদের নীলনক্সা বাস্তবায়নের জন্য অত্যন্ত সুকৌশলে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা বাদ দেয়া হয়েছে। সরকারের হিংস্র থাবা থেকে ঐতিহ্যবাদী মাদ্রাসা শিক্ষাও রেহাই পায়নি। সকল শ্রেণীর পাঠ্য বইয়ের বিভিন্ন জায়গা থেকে ইসলাম, নবী-রাসূল ও সাহাবীদের জীবনী এবং ধর্মীয় কবিতা ও গল্প বাদ দেয়া হয়েছে। এক কথায় সমগ্র শিক্ষাব্যবস্থাকে তছনছ করে দেয়া হয়েছে। সরকার শিক্ষা উপকরণের মূল্যবৃদ্ধি বিশেষ করে কাগজপত্র, বই-পুস্তকের দাম বাড়িয়ে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তানদের লেখাপড়া কঠিন করে তুলেছে।
জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা উদ্বেগের সাথে আরো লক্ষ্য করছে যে, অপসংস্কৃতির সয়লাব, মাদকদ্রব্যের ভয়াবহ ছোবল আমাদের যুবসমাজকে ক্রমেই ধ্বংস করে দিচ্ছে। বিভিন্ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের গবেষণায় উঠে এসেছে বাংলাদেশের যুবসমাজ দৈনিক ২০ কোটি টাকার মদ সেবন করছে। সেই হিসেবে বছরে মদ সেবনের পরিমাণ ৭ হাজার ৩ শত কোটি টাকা। বাংলাদেশে বর্তমানে ২৫ ধরনের মাদকদ্রব্য রয়েছে যা যুবসমাজকে মারাত্মকভাবে গ্রাস করছে। মাদকের ছোবল থেকে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে রক্ষা করার কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেই।
জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা আরো লক্ষ্য করছে যে, অপসংস্কৃতির সয়লাব, উলঙ্গপনা, বেহায়াপনা, অশ্লীলতা, নগ্নতা আমাদের যুবসমাজের নৈতিক চরিত্রকে তিলে তিলে ধ্বংস করে দিচ্ছে। বিভিন্ন পর্ণোগ্রাফি, অশ্লীল নাটক, সিনেমা, ইউটিউবের অশ্লীল ভিডিও চিত্র যুবসমাজের চিন্তা ও চেতনাকে অন্যায় এবং অশ্লীলতার দিকে নিয়ে যাচ্ছে। অনেক পরিবারেই নেমে এসেছে অশান্তি। চরিত্র বিধ্বংসী এসব কর্মকাণ্ড সামাজিক অস্থিরতা, নৈরাজ্যজনক পরিবেশ তৈরী করছে।
জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা অবিলম্বে শিক্ষার সকল স্তরে ধর্মীয় শিক্ষা বাধ্যতামূলক রাখা, শিক্ষা উপকরণের মূল্য নিয়ন্ত্রণ, অশ্লীলতা, বেহায়াপনা, নগ্নতার পরিবেশ থেকে এবং মাদকের ছোবল থেকে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে উদ্ধারের লক্ষ্যে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহŸান জানাচ্ছে এবং দেশবাসীকে বিদ্যমান অনৈতিক ও অসামাজিক পরিবেশের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার আহবান জানাচ্ছে।”