৫ ফেব্রুয়ারি ২০১১, শনিবার

কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার জরুরি অধিবেশন আমীরে জামায়াত মকবুল আহমাদ

সরকারের জুলুম নির্যাতনের বিরুদ্ধে বৃহত্তর গণআন্দোলন গড়ে তুলতে হবে

সরকারের রাজনৈতিক প্রতিহিংসার প্রথম শিকার জামায়াতে ইসলামী। আওয়ামী লীগ সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের চিন্তা চেতনার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। সরকার বিদ্যুৎ উৎপাদনকে স্থায়ী বিপর্যয়ের মধ্যে ঠেলে দিচ্ছে। ঐক্যের পরিবর্তে জাতিকে বিভক্তির দিকে ঠেলে দেয়া হচ্ছে। আমরা কোন বিলাসী বিমানবন্দর চাই না। জামায়াতে ইসলামীর আমীর মকবুল আহমদ বলেছেন, দেশে আজ চরম সংকটকাল চলছে। আইনশৃংখলার চরম অবনতি, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, পানি, বিদ্যুৎ, গ্যাসের সংকটে দেশের মানুষ দিশেহারা। দেশে নীরব দুর্ভিক্ষ চলছে। তিনি বলেন, বিরোধীদলের ওপর চলছে জুলুম-নির্যাতন। এ অবস্থা বেশিদিন চলতে পারে না। জুলুম নির্যাতন কখনই কারো জন্য কল্যাণকর হতে পারে না। তিনি জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করার আহবান জানিয়ে বলেন, সবাইকে নিয়ে বৃহত্তর গণআন্দোলন গড়ে তোলার মাধ্যমে জুলুম নির্যাতনের অবসান ঘটিয়ে একটি সুন্দর সোনালী দিন উপহার দিতে হবে।

গতকাল শুক্রবার সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে মগবাজারস্থ আলফালাহ মিলনায়তনে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার জরুরি অধিবেশন উদ্বোধনকালে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর সিনিয়র নায়েবে আমীর মাওলানা একেএম ইউসুফ, নায়েবে আমীর অধ্যাপক একেএম নাজির আহমদ, মাওলানা আবদুস সুবহান, ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলাম, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাক, ডা. শফিকুর রহমান, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য রফিউদ্দিন আহমদ, আ.ন.ম আবদুজ জাহের ও মীর কাশেম আলী, কেন্দ্রীয় প্রচার বিভাগের সেক্রেটারি অধ্যাপক তাসনীম আলম, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যক্ষ ইজ্জতুল্লাহ, এডভোকেট জসিম উদ্দিন সরকার, মাওলানা এটিএম মাসুম, আহমদুল্লাহ, আবদুর রব, চট্টগ্রাম মহানগরীর আমীর শামসুল ইসলাম এমপি, ঢাকা মহানগরীর ভারপ্রাপ্ত আমীর হামিদুর রহমান আযাদ এমপি প্রমুখ।

সভায় কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ, কর্মপরিষদ ও মজলিসে শূরার সদস্যরা অংশগ্রহণ করেন। মকবুল আহমদ তার বক্তব্যে বলেন, নির্বাচিত হলেই সরকার গণতান্ত্রিক হয় না, বর্তমান সরকারই তার প্রমাণ। নির্বাচনের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০০৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর বাংলাদেশ চীন মৈত্রী আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে বলেছিলেন যে, ‘‘বিরোধী দলকে সঠিকভাবে মূল্যায়ন করা হবে। সংখ্যা দিয়ে তার মূল্যায়ন করা হবে না। বিরোধী দলকে ডেপুটি স্পীকার পদটি দেয়া হবে, তারা মন্ত্রিসভায় যেতে চাইলে তাও বিবেচনা করা হবে। আমরা রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করব না।’’ কিন্তু গত দুই বছরে সেই ওয়াদার একটিও বাস্তবায়ন করা হয়নি। তিনি বলেন, তাদের রাজনৈতিক প্রতিহিংসার প্রথম শিকার জামায়াতে ইসলামী।

অন্যায়ভাবে ঠুনকো মামলায় জামায়াতে ইসলামীর আমীর মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী, নায়েবে আমীর মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী, সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এছাড়াও গ্রেফতার করা হয়েছে সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ কামারুজ্জামান, আবদুল কাদের মোল্লা, ঢাকা মহানগরীর আমীর রফিকুল ইসলাম খান, খুলনা মহানগরীর আমীর গোলাম পরওয়ার, রাজশাহী মহানগরীর আমীর আতাউর রহমান। তিনি সকলের মুক্তি দাবি করেন। ভারপ্রাপ্ত আমীর বলেন, ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেয়ার অভিযোগ তারাই করেছে যারা ধর্মকে বিলীন করতে চায়। সেই মামলায়ই জামায়াতের শীর্ষ নেতৃবৃন্দকে গ্রেফতার করা হয়। সেই মামলায় তাদের জামিন হলেও একের পর এক মামলা দিয়ে তাদের আটকে রাখা হয়েছে।

তিনি বলেন, সব মামলায় জামিন হলেও কথিত যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে আটকে রাখা হয়েছে। অথচ মরহুম শেখ মুজিবুর রহমান বিষয়টি মীমাংসা করে গিয়েছেন। তিনি তদন্তের মাধ্যমে ১৯৫ জনকে যুদ্ধাপরাধী হিসেবে চিহ্নিত করেছিলেন, তিনিই তাদের ছেড়ে দিয়েছিলেন, দালাল আইন হয়েছে, সাধারণ ক্ষমার মাধ্যমে তিনি ইস্যুটি মীমাংসিত করে গেছেন। সেই ইস্যুটি আবার পুনরজ্জীবিত করা হয়েছে। মকবুল আহমদ বলেন, সরকার যা ইচ্ছা, তা ই করতে চায়। এ পথে সবচেয়ে বড় বাধা মনে করে জামায়াতে ইসলামীকে। এ কারণেই ক্ষিপ্ত হয়ে জামায়াতে ইসলামীর ওপর প্রতিশোধ নেয়ার চেষ্টা করছে। তিনি বলেন, আমেরিকার একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান থেকে বিশ্বের ৫০০ মানুষের মধ্যে মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীকে ৪৬তম স্থান দেয়া হয়েছে। অথচ তার বিরুদ্ধে গাড়ি পোড়ানোর মামলা দেয়া হয়েছে। মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান জেলে থাকা অবস্থায় অভিযোগ করা হয়েছে, তিনি নাকি উপস্থিত থেকে গাড়ি ভাংচুর করেছেন।

তিনি আরো বলেন, তারা যে কাউকে মামলা দিয়ে জেলে নিয়ে যাচ্ছে। মামলা দেয়ার জন্য অপরাধী হওয়ার দরকার হয় না, তাদের ইচ্ছাই যথেষ্ট। ভারপ্রাপ্ত আমীর বলেন, নির্বাচনের আগে তারা বলেছিল, ক্ষমতায় গেলে তারা দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি প্রতিরোধ, দুর্নীতির বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সমস্যার সমাধান, দারিদ্র্যবিমোচন ও সুশাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। কিন্তু গত দুই বছরে তার একটিও তারা করেনি। তিনি বলেন, ১০ টাকা কেজি চাল খাওয়ানোর কথা তারা বলেছিল। এখন সেই চাল ৪০ টাকা। তারা এখন বলছে ১০ টাকা কেজি চাল খাওয়ানোর কথা নাকি তারা বলেনি। তিনি উল্লেখ করেন, তাদের বলতেও দেরি হয় না, আবার অস্বীকার করতে ও দেরি হয় না। তিনি বলেন, ৫৪ টাকার সয়াবিন এখন ১১০ টাকা, ১৮ টাকার পেঁয়াজ ৪০ টাকা। তারপরও বলছে দ্রব্যমূল্য তাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

তিনি আরো বলেন, দেশে এখন নিরব দুর্ভিক্ষ চলছে। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী রংপুরে এক জনসভায় বলেছেন, রংপুরে আর কোন মংগা নেই। জনগণের বক্তব্য হলো-রংপুরের মংগা তো দূর হয়নি, বরং রংপুরের মংগা সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। ঢাকা মহানগরীতে খোলাবাজারে চালের ট্রাকের সামনে লম্বা লাইনই তা প্রমাণ করে। তিনি বলেন, বিনা টেন্ডারে বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করা হচ্ছে। সরকার বিদ্যুৎ উৎপাদনকে স্থায়ী বিপর্যয়ের মধ্যে ঠেলে দিচ্ছে এবং সরবরাহ ব্যবস্থাকে বিপুল লোকসানের মুখোমুখি করে তার দায় জনগণের উপর চাপাচ্ছে বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধির মাধ্যমে।

মকবুল আহমদ বলেন, দেশের আইন-শৃংখলা পরিস্থিতি ভালো বলে সব সময় বলা হয়। কিন্তু সরকারি দলের এমপি'র ঘরে যখন ডাকাতি হয়, তখন বলা হয় একটু খারাপ হয়েছে। সরকার কি শুধু তাদের এমপি-মন্ত্রীদের জন্য। তিনি বলেন, সরকারের পররাষ্ট্রনীতি প্রতিবেশী দেশের আজ্ঞাবহ। ভারত টিপাইমুখ বাঁধ দিচ্ছে। এই বাঁধের বিরুদ্ধে সেই দেশেও প্রতিবাদ হয়েছে। কিন্তু আমরা কোন বাধনের কারণে এর প্রতিবাদ করার সাহস দেখাতে পারিনি? তিনি আরো বলেন, প্রচার করা হয়েছে ট্রানজিট, করিডোর, বন্দর ব্যবহার করতে দিয়ে আমাদের কোটি কোটি টাকা রাজস্ব আয় হবে। কিন্তু তারা এখন সেই ট্যাক্সও দিতে রাজি নয়। তিনি বলেন, নেপালের সাথে আমাদের ট্রানজিট দেয়া হয়েছিল। সকলেই জানে তা চালু হওয়ার ৯ ঘণ্টা পর বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল। তখন বলা হয়েছিল, একটি দেশের ভিতর দিয়ে আরেকটি দেশে কিভাবে যেতে পারে? তখনতো ছিল অল্প কিছু রাস্তা, এখন তো তারা ৩/৪শ কিলোমিটার পথ যাবে। এখানে নিরাপত্তার সমস্যা হবে না?

তিনি সীমান্তের বিএসএফ এর হত্যার নিন্দা জানিয়ে বলেন, সীমান্তে বিএসএফ নির্বিচারে বাংলাদেশীর হত্যা করছে। বিএসএফ ২০১০ সালে ৭৪ জন নিরীহ বাংলাদেশীকে হত্যা করেছে। অপহরণ করেছে ৪৩ জনকে। কাঁটাতারের বেড়ায় আটকে যাওয়া মুক্তির জন্যে চিৎকাররত কিশোরী ফেলানীকে অমানবিক ও নির্মমভাবে হত্যা করেছে বিএসএফ। তা দেখে আর্ন্তজাতিক মহলে ছি ছি পড়ে গিয়েছিল। সরকার এর প্রতিবাদ করতে পারেনি। ভারপ্রাপ্ত আমীর বলেন, আওয়ামী লীগ দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের চিন্তা-চেতনার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। অসাম্প্রদায়িক শিক্ষা দেয়ার কথা বলা হচ্ছে। অসাপ্রদায়িক শিক্ষার মানে কী অন্যের ধর্ম কবুল করা? আমার ধর্ম ছেড়ে দিয়ে কি ধর্মনিরপেক্ষ হতে হবে? তিনি বলেন, শিক্ষানীতিতে প্রথম শ্রেণী থেকে ৮ম শ্রেণী পর্যন্ত ধর্মশিক্ষা উঠিয়ে দেয়া হয়েছে। এ ধরনের শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে হাজার হাজার সংশোধনী প্রস্তাব দিয়েছিল। সরকার তার একটিও গ্রহণ করেনি।

তিনি উল্লেখ করেন, তারা আসলে অসাম্প্রদায়িক শিক্ষানীতির নামে ধর্মহীন শিক্ষানীতি চালু করতে চায়। তিনি বলেন, দেশের সংস্কৃতি নষ্ট করতে বিদেশী নর্তকীদের এনে নাচানো হচ্ছে। এর মাধ্যমে যুব সমাজের চরিত্র ধ্বংস হবে, ইভটিজিং আরো বাড়বে। এটা ফেন্সিডিলের চেয়েও খারাপ। মকবুল আহমদ বলেন, যুদ্ধাপরাধের বিচারের নামে সরকার রাজনৈতিক প্রতিহিংসা বাস্তবায়ন করছে। এ কারণেই ৪০ বছরের আগে মীমাংসিত ইস্যুকে সামনে আনা হয়েছে জামায়াতে ইসলামীকে ঘায়েল করার জন্য।

তিনি বলেন, তারা ৪০ বছর আগের ঘটনার বিচার করতে চায়, অথচ এই ৪০ মাসে তাজা খুনের ঘটনার বিচার করছে না। জাতি এ ধরনের প্রহসন মেনে নিবে না। তিনি অবিলম্বে গ্রেফতারকৃত জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষ নেতৃবৃন্দের মুক্তি দাবি করেন। তিনি বলেন, ধর্ম কোন দলের একচেটিয়া নয়। কিন্তু সরকার সংসদকে পাশ কাটিয়ে কোর্টের ওপর বন্দুক রেখে সংবিধান সংশোধন করতে চয়। এভাবে অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করে মানুষকে ধর্মহীন করার মাধ্যমে ভালো নাগরিক গড়ে তোলা সম্ভব নয়। ভারপ্রাপ্ত আমীর বলেন, ঘরে ঘরে চাকরি দেয়ার কথা বলে বর্তমান সরকার ক্ষমতায় এসেছে। কিন্তু যারা আওয়ামী লীগ করে তাদেরই চাকরি দেয়া হচ্ছে, মামলা প্রত্যাহারও তাদের হচ্ছে।

তিনি উল্লেখ করেন, ৫২ শতাংশ ভোট পেয়ে সরকার ক্ষমতায় এসেছে। যেই ৪৮ শতাংশ মানুষ এ সরকারকে ভোট দেয়নি, তাদের কী হবে? তিনি বলেন, যখন জাতির মধ্যে ঐক্যের প্রয়োজন, তখনই জাতিকে বিভ্রান্তি, বিভক্তির দিকে ঠেলে দেয়া হচ্ছে। এ ধরনের কাজ কখনই জাতির জন্য কল্যাণকর হতে পারে না। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ মনে করে, আওয়ামী লীগ মানে সরকার, সরকার মানেই রাষ্ট্র, রাষ্ট্র মানেই তাদের তাল্লুক, তারা যেভাকে ইচ্ছা তা লুটেপুটে খাবে। সব জায়গায় দলীয়করণ করবে। নির্বাচন কমিশন, দুদকসহ সব প্রতিষ্ঠানকেই তাদের দলীয় প্রতিষ্ঠানে পরিণত করবে। এভাবে দেশ চলতে পারে না। তিনি পৌর নির্বাচনে সরকার ও নির্বাচন কমিশনের ভূমিকার সমালোচনা করে বলেন, প্রথমদিন নির্বাচন ভালো হলেও পরের দিনগুলোতে দেখা গেছে তাদের আসল চেহারা। কিভাবে ব্যালট বক্স ছিনিয়ে নিয়ে ভোট দেয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, তারা জামায়াতে ইসলামীকে মুছে ফেলতে চেয়েছিল। কিন্তু এতো কিছুর মধ্যেও জামায়াত ৬টি মেয়র ও ১০৮ জন কমিশনার পেয়েছে। তিনি বলেন, মানুষ খেতে পায় না, বিদ্যুৎ পায় না, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, সেখানে পিতার নামে বিলাসী বিমানবন্দর করার চেষ্টা করা হচ্ছে। যদিও জনগণের দাবির মুখে এখন বলা হচ্ছে, অন্যত্র করা হবে। অথচ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এখন নতুন করে আর কোন বিমানবন্দর করার প্রয়োজন নেই।

তিনি বলেন, তারা দেশকে সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া বানাতে চায়। বিমানবন্দরে বিদেশী বিমান নামলেই দেশ উন্নত হয়ে যাবে না। বিমানবন্দরের গেটে হাড্ডিসার মানুষ দাঁড়িয়ে থাকলে আর বিদেশী বিমান সেই বিমানবন্দরে নামলে, দেশ উন্নত হয়ে যাবে না। তিনি উল্লেখ করেন, দেশকে উন্নত করতে হলে দেশের অর্থনীতির ভীত মজবুত করতে হবে, নেতৃত্বে যোগ্য লোক বসাতে হবে। আমরা কোন বিলাসী বিমানবন্দর চাই না। তিনি সরকারকে দেয়ালের লিখন পড়ার আহবান জানিয়ে বলেন, সরকারের মেয়াদ ৫ বছর। এর মধ্যে দুই বছর চলে গেছে। বাকি আছে ৩ বছর। মানুষের হায়াত বলা না গেলেও এই সরকারের মেয়াদ ৩ বছর বাকি আছে তা বলা যায়। তবে মিশর ও তিউনেশিয়ার মতো অবস্থা হলে তার আগেই মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে।

তিনি উল্লেখ করেন, ক্ষমতায় কেউ চিরদিন থাকে না। তিনি বলেন, শেয়ারমার্কেটের কেলেংকারী যেন আওয়ামী লীগকে ছাড়ে না। এর আগে ৯৬ সালে ক্ষমতায় এসেছিল, তখন প্রতিবেশী দেশের লোকেরা এখান থেকে টাকা নিয়ে গেছে। তিনি বলেন, এ বছর ৩২/৩৩ লাখ লোক ভোগান্তির শিকার হয়েছে। সেই হিসেবে অন্তত সোয়া লাখ পরিবার পথে বসেছে। তিনি আরো বলেন, সিন্ডিকেটের মাধ্যমে সরকার দলীয় কিছু লোক উপকৃত হয়েছে, কিন্তু যেই সোয়া লাখ পরিবার পথে বসেছে, তাদের অভিশাপ থেকে কি বাঁচা যাবে? তিনি জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করার জন্য জামায়াতের মজলিসে শূরার সদস্যদের প্রতি আহবান জানিয়ে বলেন, সবাইকে নিয়ে বৃহত্তর গণআন্দোলন গড়ে তোলার মাধ্যমে জুলুম নির্যাতনের অবসান ঘটিয়ে একটি সুন্দর সোনালী দিন উপহার দিতে হবে।

কার্টেসীঃ দৈনিক সংগ্রাম