২ আগস্ট ২০১৯, শুক্রবার

ডেঙ্গু ও বন্যাসহ দেশের বর্তমান সংকট উত্তরণে মহান আল্লাহর সাহায্য কামনায় জামায়াত ঢাকা মহানগর উত্তরের দোয়া মাহফিল

ডেঙ্গুজ্বর ও বন্যা দুর্গত মানুষের দুর্দশা লাঘবে প্রয়োজনীয় ত্রাণ ও উপকরণাদি নিয়ে আক্রান্ত মানুষের ঘরে ঘরে যেতে দলীয় নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জামায়াতে ইসলামী নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন।

তিনি আজ রাজধানীর একটি মিলনায়তনে কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তর আয়োজিত ডেঙ্গু আক্রান্ত ও বন্যদুর্গতদের পাশে দাঁড়াতে সমাবেশ ও দোয়া মাহফিলে সভাপতির বক্তব্যে উপস্থিত নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে এসব কথা বলেন। সমাবেশ ও দোয়া মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের নায়েবে আমীর আব্দুর রহমান মুসা, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহা. রেজাউল করিম এবং কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারি সেক্রেটারি লস্কর মো. তসলিম ও মাহফুজুর এবং কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য নাজিম উদ্দীন মোল্লা প্রমূখ।

সপ্তাহব্যাপী কর্মসূচি উদ্বোধনকালে সেলিম উদ্দিন বলেন, অতীতের ন্যায় এবারেও বন্যা ও ডেঙ্গু কবলিতত মানুষদের পাশে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। চলমান বন্যা ও ডেঙ্গজ্বরে ব্যাপক প্রাণহানি হয়েছে। এছাড়া ক্ষয়ক্ষতি বেশি হওয়ায় মানুষের দুর্ভোগের শেষ নেই। সহযোগিতা ও সহমর্মিতার হাত বাড়িয়ে না দিলে তাদের এই কষ্ট এবং প্রাণহানি আরো বাড়তে পারে। বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর বানভাসী মানুষেরা রোগ ব্যাধীতে আক্রান্ত হয়। এছাড়া খাদ্য ও নিরাপদ পানির ঘাটতি দেখা দেয়। ফলে এখন পুনর্বাসন প্রক্রিয়া গুরুত্বপূর্ণ। জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীদের দুর্যোগ কবলিত এলাকায় ত্রাণ ও পুনর্বাসন তৎপরতায় সাধ্যমতো অংশ নিতে হবে। এই কাজে অন্যদেরও সম্পৃক্ত করতে হবে।

তিনি ডেঙ্গু পরিস্থিতির ভয়াবহতা তুলে ধরে বলেন, ঢাকার ডেঙ্গুজ্বর এখন সারাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে। বিশেষ করে সামনে কোরবানীর ঈদে ঢাকা থেকে বাড়িতে ঈদ করতে যাওয়া মানুষের কারণে দেশের সর্বত্র এই রোগের ভয়াবহতা বাড়তে পারে। বস্তুত এডিস মশার কারণে এই রোগের বিস্তার লাভ করায় এখনো কয়েকমাস ডেঙ্গুজ্বর আক্রান্তের আশঙ্কা আছে। কারণ, বর্ষা মৌসুম এখনো চলমান। ফলে ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্তদের চিকিৎসা প্রদান ছাড়াও পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা অভিযান চালাতে হবে। এই কাজে জামায়াত নেতাকর্মীকে সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে।

মহানগরী আমীর বলেন, দেশে ডেঙ্গু পরিস্থিতি এখন মারাত্মক রূপ নিলেও স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয়, জনস্বাস্থ্য ও প্রকৌশল বিভাগ, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, সিটি কর্পোরেশন সহ স্থানীয় সরকারগুলো ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে কোন কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। প্রাপ্ত তথ্যমতে সারাদেশে প্রতিদিনই প্রভূত সংখ্যক মানুষ ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতাপালে ভর্তি হলেও তারা সুচিকিৎসা পাচ্ছেন না। মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগের নির্দেশ থাকা স্বত্ত্বেও এখন পর্যন্ত ডেঙ্গু জ্বরের প্রয়োজনীয় প্রতিষেধক আমদানীর বিষয়টি উপেক্ষিত হয়েছে। তিনি ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সরকারকে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সকল স্তরের জনশক্তি সহ সকল শ্রেণি ও পেশার মানুষকে দুর্গত মানুষের কল্যাণে এগিয়ে আশার আসার আহবান জানান এবং দুর্গতদের আরোগ্য, সুস্বাস্থ্য ও দেশ-জাতির কল্যাণ কামনায় মহান আল্লাহ তায়ালার দরবারে দোয়া ও মোনাজাত পরিচালনা করেন।

মহানগরী আমীর বলেন, প্রধানমন্ত্রী এডিস মশা ধ্বংস করার জন্য কার্যকর ঔষধ ছিটানোর জন্য ঢাকার ২টি সিটি কর্পোরেশনকে নির্দেশ দিয়েছেন। এ থেকেই বোঝা যায় যে, এডিস মশা ধ্বংস করার জন্য তারা আগে অকার্যকর ও নকল ঔষধ ব্যবহার করেছিল। তাই এই অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য সরকারকে আন্তরিকতা, নিষ্ঠা ও সততার সাথে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্তদের চিকিৎসার সুব্যবস্থ্য গ্রহণ করার সাথে সাথে এডিস মশা ধ্বংস করার জন্য ক্রাশ কর্মসূচি গ্রহণ করতে হবে। সরকারের পাশাপাশি চিকিৎসক সমাজ, সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী, সুশীল সমাজসহ সকল সর্বস্তরের জনগণের মধ্যে ডেঙ্গু জ্বর ও এডিস মশা সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধি এবং এডিস মশা ধ্বংস করার ব্যাপারে সার্বিক সহযোগিতা করাও জরুরি। তিনি জাতির এই ক্রান্তিকালে ভেদাভেদ ভুলে সকলকে দুর্গত মানুষের কল্যাণে কাজ করার আহবান জানান।