৭ অক্টোবর ২০২৪, সোমবার

দিনাজপুরের বিরামপুরে শহীদ পরিবারের মাঝে আর্থিক সহায়তা প্রদান

গণহত্যার সাথে জড়িত কাউকেই ছাড় দেয়া যাবে না: মাওলানা আবদুল হালিম

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আবদুল হালিম বলেন, “ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরসহ বিরোধীমতের নেতাকর্মী, আলেম-উলামা এমনকি ধর্ম-বর্ণ-নির্বিশেষে সকলের ওপর সীমাহীন জুলুম-নির্যাতন করেছে। তারা বিগত ১৫ বছর যাবৎ অবৈধভাবে ক্ষমতা প্রয়োগ করে জাতির ওপর অপশাসন ও দুঃশাসনের স্টিম রোলার চালিয়েছে। বিরোধীমতের নাগরিকদের কোনো অধিকারই ছিল না। তাদের দলন-পীড়নে বাংলাদেশের আকাশ-বাতাস প্রকম্পিত হয়ে গিয়েছিল। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে দেড় হাজারের অধিক মানুষ খুন এবং ৩০ হাজারের বেশি মানুষ আহত হওয়া আওয়ামী ফ্যাসিবাদের জ্বলন্ত উদাহরণ। এমন কোনো মানবতাবিরোধী অপরাধ নেই যে তারা করেনি। তাদেরকে অবশ্যই আইনের মুখোমুখি হতে হবে ও শাস্তি পেতে হবে। গণহত্যার সাথে জড়িত কাউকেই ছাড় দেয়া যাবে না।

তিনি আরও বলেন, আসন্ন দুর্গাপূজা উদযাপন অবশ্যই নির্বিঘ্নে হতে হবে। এক্ষেত্রে জামায়াতে ইসলামী প্রশাসনকে সর্বতোভাবে সহযোগিতা করে যাবে। ধর্মীয় উৎসব পালন করা সকল নাগরিকের ধর্মীয় ও সাংবিধানিক অধিকার। দল ও ধর্ম বিবেচনায় নয়, মেধা, যোগ্যতা, সততা ও নৈতিকতার ভিত্তিতে সকলের অধিকার নিশ্চিত করা হবে। চাকরিসহ কোনো ক্ষেত্রেই বৈষম্য থাকা উচিত নয়। ন্যায্যতাই হবে মাপকাঠি। ন্যায় ও ইনসাফ ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠায় তিনি উপস্থিত সুধীজনের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান।”

কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও দিনাজপুর দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলা আমীর আনোয়ারুল ইসলামের সভাপতিত্বে ৭ অক্টোবর, সোমবার, সকাল ৯টায় বিরামপুর সরকারি কলেজ অডিটরিয়ামে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নবাবগঞ্জ ও হাকিমপুর উপজেলার ৩টি শহীদ পরিবারের সদস্যদের সাথে মতবিনিময় ও সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

জেলা সেক্রেটারি সাইদুল ইসলাম সৈকতের সঞ্চালনায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও দিনাজপুর উত্তর সাংগঠনিক জেলা আমীর অধ্যক্ষ আনিসুর রহমান, জয়পুরহাট জেলা আমীর ডাঃ ফজলুর রহমান সাঈদ, দিনাজপুর দক্ষিণ জেলা নায়েবে আমীর মুহাদ্দিস ডক্টর এনামুল হক, জয়পুরহাট জেলা সেক্রেটারি মাওলানা গোলাম কিবরিয়া, দিনাজপুর দক্ষিণ জেলা সহকারী সেক্রেটারি হাফিজুল ইসলাম, জেলা পেশাজীবী সেক্রেটারি ও ঘোড়াঘাট উপজেলার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন, জেলা কর্মপরিষদ সদস্য উপাধ্যক্ষ মাওলানা তাজুল ইসলাম, মাওলানা আবুল কাসেম, সুলতানুল আলম, সাবেক নবাবগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান নূরে আলম সিদ্দিকী, ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদ সদস্য ও দিনাজপুর শহর সভাপতি রেজওয়ানুল হক, দিনাজপুর জেলা দক্ষিণ সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম, বিরামপুর পূজা উদযাপন কমিটির উপজেলা সভাপতি ও বিরামপুর মহিলা কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ শিশির কুমার সরকার, বিরামপুর উপজেলা আমীর অধ্যাপক মকছেদ আলী, নবাবগঞ্জ উপজেলা আমীর অধ্যাপক নজরুল ইসলাম, হাকিমপুর উপজেলা আমীর মাওলানা আমিনুল ইসলাম, বিরামপুর উপজেলা আমীর অধ্যাপক মকছেদ আলী, বিরামপুর পৌরসভা আমীর সাখাওয়াত হোসেন, আলহাজ্জ মাওলানা আশরাফুল ইসলাম, শহীদ পরিবারের সদস্য আব্দুল মালেক, আসাদুজ্জামান সুজন, ফরিদুল ইসলাম ও ময়না খাতুন প্রমুখ। এ মতবিনিময় সভায় চিকিৎসক, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান, ব্যবসায়ী, ইঞ্জিনিয়ার, সুধীমণ্ডলী ও ৪ উপজেলার ইলেক্ট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার গণমাধ্যম কর্মীগণ উপস্থিত ছিলেন। মতবিনিময় ও সুধী সমাবেশ শেষে বিরামপুর সরকারী কলেজের টিচার্স কমনরুমে ৪ উপজেলার ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিকদের সাথে সংক্ষিপ্ত মতবিনিময় করেন প্রধান অতিথি মাওলানা আবদুল হালিম।

এ মতবিনিময় সভায় ৩টি শহীদ পরিবারকে ১ লক্ষ টাকা করে প্রদান করা হয় এবং আগে প্রত্যেক পরিবারকে আরও ১ লক্ষ করে টাকা প্রদান করা হয়েছিল।