১১ ডিসেম্বর ২০২২, রবিবার

ইসলামী আন্দোলনে শহীদ আব্দুল কাদের মোল্লার অবদানের কথা গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল, বিশিষ্ট সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী জনাব আবদুল কাদের মোল্লার অবদানের কথা গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান ১১ ডিসেম্বর ২০২২ নিম্নোক্ত বিবৃতি প্রদান করেছেন।

বিবৃতিতে তিনি বলেন, “বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সাবেক সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল, বিশিষ্ট সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী জনাব আবদুল কাদের মোল্লা মৃত্যুর আগ মুহূর্ত পর্যন্ত বাংলাদেশে ইসলামী সমাজ প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছেন। তিনি একাধারে একজন রাজনীতিবিদ, লেখক, শিক্ষাবিদ এবং গবেষক হিসেবে দেশ ও জাতির উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে গিয়েছেন। নব্বইয়ের দশকে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে তিনি লিয়াজোঁ কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। দেশে গণতন্ত্র, আইনের শাসন, ন্যায় বিচার ও জনগণের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে তিনি বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করেন। কলম সৈনিক হিসেবে তিনি লেখনীর মাধ্যমে মানুষের বিবেকবোধ জাগ্রত করার চেষ্টা করেছেন।

২০১০ সালের ১৩ জুলাই সরকার তাঁকে রাজনৈতিক মিথ্যা মামলায় গ্রেফতার করে এবং পরবর্তীতে তাঁর বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে ষড়যন্ত্রমূলক মামলা দায়ের করে। ট্রাইবুনালের রায়ে তাঁকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়। এরপর সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় শাহবাগে স্থাপিত গণজাগরণ মঞ্চের দাবি অনুযায়ী সরকার আইন সংশোধন করে আপিল দায়ের করে। সংশোধিত আইনের ভিত্তিতে তাঁকে ফাঁসির আদেশ প্রদান করা হয়। জনাব আবদুল কাদের মোল্লা ফাঁসির আদেশের বিরুদ্ধে আপীলের সুযোগ পাননি। এমনকি রিভিউ আবেদন খারিজের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পূর্বেই তড়িঘড়ি করে ২০১৩ সালের ১২ ডিসেম্বর রাত ১০টা ১ মিনিটে তাঁর ফাঁসি কার্যকর করা হয়। তাঁকে ফাঁসি দেয়ার প্রায় দেড় বছর পর তাঁর রিভিউ আবেদন খারিজের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়। এসব ঘটনা থেকে সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয়েছে যে, তিনি বিচারের নামে কত বড় প্রহসনের শিকার হয়েছেন!

শহীদ আবদুল কাদের মোল্লা তাঁর ফাঁসি কার্যকরের পূর্বে বলে গিয়েছেন, ‘সরকার আমাকে অন্যায়ভাবে ফাঁসি দিচ্ছে। আমার শরীরের প্রতি ফোটা রক্ত এ দেশের ইসলামী আন্দোলনের নেতা-কর্মীদের ইসলামী আন্দোলনে অনুপ্রাণিত করবে।’ দ্বীন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে তাঁর রক্তের বদলা নেওয়ার জন্য তিনি ইসলামী আন্দোলনের নেতা-কর্মীদের প্রতি আহবান জানিয়ে গিয়েছেন।

ইসলামী আন্দোলনে তাঁর অবদানের কথা আমি শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি এবং তাঁর শাহাদাত কবুল করার জন্য মহান আল্লাহর কাছে দোয়া করছি। তিনি যে ইসলামী সমাজ গড়ার স্বপ্ন দেখতেন তা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে দৃঢ়তার সাথে সামনে এগিয়ে যাওয়ার জন্য আমি জামায়াতের সকল জনশক্তি, সুধী, শুভাকাক্সক্ষী ও দেশবাসীর প্রতি আহবান জানাচ্ছি।”