8 September 2010, Wed

চরিত্রবান ও খোদাভীরু মানুষ ছাড়া পুলিশ দিয়ে সুন্দর সমাজ গড়া যাবে না- মকবুল আহমাদ

 জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত আমীর মকবুল আহমদ বলেছেন, সমাজে ইনসাফ কায়েম হলে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, লুটতরাজ চলবে না। এজন্যই ইনসাফ প্রতিষ্ঠা হউক, অনেকে তা অপছন্দ করে। জামায়াতে ইসলামী ইনসাফ প্রতিষ্ঠার আন্দোলন করে বলেই এই জেল, জুলুম ও নির্যাতন। তিনি ইসলামী সমাজ প্রতিষ্ঠার উপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, নীতি নৈতিকতা আর যোগ্যতা দক্ষতা না থাকলে শুধু বক্তৃতা দিয়ে সমাজ পরিবর্তন করা যায় না। চরিত্রবান ও খোদাভীরু মানুষ না হলে পুলিশ দিয়ে সুন্দর সমাজ গড়া যাবে না। ঈদের আগেই গ্রেফতারকৃত জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীদের মুক্তি দেয়ার জন্য তিনি সরকারের প্রতি আহবান জানান।

গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে মগবাজারস্থ আলফালাহ মিলনায়তনে শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন ঢাকা মহানগরীর উদ্যোগে শ্রমিকদের মধ্যে ঈদ সামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। ফেডারেশনের ঢাকা মহানগরীর সভাপতি কবির আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরীর ভারপ্রাপ্ত আমীর হামিদুর রহমান আযাদ এমপি। বক্তব্য রাখেন ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি আমিনুল ইসলাম। অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরীর সহকারী সেক্রেটারি নূরুল ইসলাম বুলবুল, মহানগরীর কর্মপরিষদ সদস্য প্রকৌশলী গোলাম মোস্তফা প্রমুখ।

মকবুল আহমদ তার বক্তব্যে বলেন, মানুষের মৌলিক অধিকার সংরক্ষণের দায়িত্ব রাষ্ট্রের। কিন্তু ইসলামী রাষ্ট্র ছাড়া মানুষের এ অধিকার আদায় সম্ভব নয়। তিনি বলেন, চরিত্রবান ও খোদাভীরু মানুষ না হলে পুলিশ দিয়ে সুন্দর সমাজ গড়া যাবে না। এখন বলা হয়, আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে। কিন্তু দেখা যায়, সরকারি দলের লোকজন আগে অন্য দলের লোকদের মারতো, এখন নিজেদের দলের লোকদেরই মেরে ফেলে। তারপরও তারা ধরাছোয়ার বাইরে থেকে যায়। তিনি উল্লেখ করেন, নীতি নৈতিকতা ছাড়া শুধু বক্তৃতা দিয়ে সমাজ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়।

জামায়াতে ইসলামীর উপর জুলুম চলছে উল্লেখ করে ভারপ্রাপ্ত আমীর বলেন, সমাজে ইনসাফ কায়েম হলে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, লুটতরাজ চলবে না। এজন্যই ইনসাফ প্রতিষ্ঠা হউক, অনেকে তা অপছন্দ করে। জামায়াতে ইসলামী ইনসাফ প্রতিষ্ঠার আন্দোলন করে বলেই এই জেল, জুলুম ও নির্যাতন। তিনি বলেন, ৫ বছর জামায়াতে ইসলামীর দুইজন মন্ত্রী ৩টি মন্ত্রণালয় চালিয়েছেন। এসময় ১৭ জন সংসদ সদস্য ছিল। কিন্তু কারো বিরুদ্ধেই দুর্নীতির কোন অভিযোগ প্রমাণ করতে পারেনি। নীতি নৈতিকতা আর যোগ্যতা দক্ষতা না থাকলে শুধু বক্তৃতা দিয়ে সমাজ পরিবর্তন করা যায় না। তিনি ইসলামী সমাজ প্রতিষ্ঠার উপর গুরুত্বারোপ করেন। ঈদের আগেই গ্রেফতারকৃত জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীদের মুক্তি দেয়ার জন্য তিনি সরকারের প্রতি আহবান জানান।

শ্রমিকদের মাঝে ঈদ সামগ্রী বিতরণে ফেডারেশনের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে তিনি বলেন, সমাজের অন্যরাও যেন এভাবে এগিয়ে আসে, শ্রমজীবী মানুষের পাশে দাঁড়ায়। হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, সামাজিক মূল্যবোধ ও দায়িত্ববোধ থেকেই শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন এই মহতী উদ্যোগ নিয়েছে। কিন্তু এর মূল দায়িত্ব ছিল সরকারের।

সাংবিধানিকভাবে সরকারেরই মূল দায়িত্ব মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণ করার। তিনি বলেন, সরকার জনগণের স্বার্থে কাজ না করে ক্ষমতা স্থায়ী করার জন্য, ভিনদেশী প্রভুদের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করার জন্যই চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। দমন নিপীড়নের মাধ্যমে নিজেদের ক্ষমতা চিরস্থায়ী করতে যাচ্ছে। তিনি দেশ রক্ষায় জাতীয়তাবাদী ও ইসলামীর মূল্যবোধে বিশ্বাসী শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহবান জানান। আমিনুল ইসলাম বলেন, ইসলামী সমাজ হলে এভাবে হয়তো ঈদ সামগ্রী নেয়ার জন্য আসতে হতো না। সবার বাড়ী বাড়ীই তা পৌছে যেতো। তিনি বলেন, আমাদের যতটুকু সাধ্য আছে, তা দিয়েই আমরা ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে চাই। সভাপতির বক্তব্যে কবির আহমদ বলেন, মুসলমানদের ঈদ উৎসব সবার জন্যই সমান। কেউ খাবে আর কেউ না খেয়ে থাকবে তা হতে পারে না। তিনি বলেন, আমাদের স্বাধ আছে অনেক, কিন্তু সাধ্যের মধ্য থেকেই শ্রমিকদের পাশে থাকার চেষ্টা করছি। অনুষ্ঠানে ২৪টি ট্রেডের দুই শতাধিক শ্রমিকের মাঝে ঈদ সামগ্রী বিতরণ করা হয়। ঈদ সামগ্রীর মধ্যে ছিল পোলাও'র চাল, সেমাই, চিনি, দুধ, আলু ও সয়াবিন তেল।

কার্টেসীঃ দৈনিক সংগ্রাম