২৫ মার্চ ২০২৪, সোমবার, ১২:৩১

ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু

নিমেষেই শেষ উত্তরাঞ্চলের টিকিট

আগের মতো এবারের ঈদযাত্রাতেও উত্তরবঙ্গগামী ট্রেনের আগাম টিকিট গতকাল রোববার সকাল ৮টায় বিক্রি শুরুর কয়েক মিনিটেই শেষ হয়ে গেছে। খুলনা-যশোরগামী ট্রেনের টিকিটও ফুরিয়ে যায় প্রথম আড়াই ঘণ্টায়। তবে দুপুর ২টায় শুরু হলেও চট্টগ্রাম এবং সিলেটের ট্রেনের অধিকাংশ টিকিট রাত ৮টা পর্যন্ত অবিক্রীত ছিল। অন্যান্য সময় কক্সবাজারের ট্রেনের টিকিটের জন্য হাহাকার চললেও গতকাল রাত পর্যন্ত ওই গন্তব্যের ট্রেনের বড় সংখ্যক টিকিট বিক্রি হয়নি।

রেলওয়ে জানিয়েছে, বিক্রি কার্যক্রম শুরুর প্রথম আধাঘণ্টায় টিকিট পেতে ১৫ লাখ নিবন্ধনকারী ওয়েবসাইটে প্রবেশ করেন। গতবারের মতো এবারও ঈদযাত্রার ট্রেনের শতভাগ টিকিট বিক্রি হচ্ছে অনলাইনে। তাই গতকাল কমলাপুরে টিকিটের জন্য চিরচেনা ভিড় ছিল না।
কালোবাজারি রোধে এবার অনলাইনে টিকিট কেনার সময় যাত্রীর ফোন নম্বরে ওয়ানটাইম পাসওয়ার্ড (ওটিপি) আসছে। ওটিপি ইনপুট দেওয়ার পর টিকিট মিলছে। এবার টিকিটের ওয়েবসাইটে প্রবেশে ভোগান্তি না হলেও ওটিপি পেতে সময় লাগছে। রিয়াদ হোসেন নামের এক যাত্রী স্ক্রিনশট দিয়ে ফেসবুকে লিখেছেন, সকাল ৮টায় তিনি টিকিট সিলেক্ট করেন। ওটিপি এসেছে সকাল ১০টা ৪০ মিনিটে। নিয়ম অনুযায়ী ৯০ সেকেন্ডের মধ্যে চার সংখ্যার ওটিপি আসার কথা। কিন্তু ২ ঘণ্টা ৪০ মিনিট দেরিতে আসায় টিকিট পাননি রিয়াদ।

বহু যাত্রী ফেসবুকে জানিয়েছেন, কয়েক সেকেন্ডে ওটিপি আসায় ভোগান্তি ছাড়াই টিকিট পেয়েছেন। একই ভাষ্য টিকিট বিক্রির দায়িত্বে থাকা প্রতিষ্ঠান সহজ ডটকম লিমিটেডের। রেলের ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক সরদার সাহাদাত আলী সমকালকে বলেছেন, এবার ওয়েবসাইটে প্রবেশে ভোগান্তির একটিও অভিযোগ নেই। ওটিপি পেতেও বিলম্বের কথা কেউ বলেনি। ওটিপি থাকায় অন্যের জাতীয় পরিচয়পত্র, মোবাইল নম্বর দিয়ে কালোবাজারিরা টিকিট কাটতে পারবে না। যার মোবাইল নম্বর, তিনিই টিকিট পাচ্ছেন।

গতকাল বিক্রি হয় আগামী ৩ এপ্রিলের ট্রেনের টিকিট। আজ সোমবার দেওয়া হবে আগামী ৪ এপ্রিলের টিকিট। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে বাংলাদেশে ১১ এপ্রিল ঈদুল ফিতর উদযাপিত হতে পারে। ৮ এপ্রিল ঈদের আগে শেষ কর্মদিবস। ৭ এপ্রিল শবে কদরের ছুটি। ৫ ও ৬ এপ্রিল সাপ্তাহিক ছুটি। এ হিসাবে ৮ এপ্রিল কেউ ছুটি নিলে, ৪ এপ্রিল অফিস শেষে কার্যত ঈদের ছুটি শুরু হয়ে যাবে। তাই ৪ এপ্রিলের দুপুরের পরের ট্রেনের টিকিটের চাহিদা বেশি থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ঢাকা থেকে রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চল তথা রাজশাহী, খুলনা এবং রংপুর বিভাগের বিভিন্ন জেলাগামী ট্রেনে আসন রয়েছে ১৫ হাজার ১৫৫। ঢাকার কমলাপুর স্টেশনের ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ মাসুদ সারওয়ার জানান, সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত প্রায় ১১ হাজার টিকিট বিক্রি হয়েছে। দুপুর ২টা থেকে শুরু হয় পূর্বাঞ্চলের টিকিট বিক্রি। ঈদের ট্রেনে ঢাকা থেকে পূর্বাঞ্চলের আসন ১৬ হাজার ২২টি। গতকাল রাত ৮টার দিকে দেখা যায়, ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটের ‘সোনার বাংলা এক্সপ্রেসের’ ৪১৮টি টিকিট অবিক্রীত। ঢাকা-কক্সবাজার রুটের পর্যটক এক্সপ্রেসের ৩১৪ এবং কক্সবাজার এক্সপ্রেসের ২৪৫টি টিকিট অবিক্রীত রয়েছে। এই দুই ট্রেনের ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটেরও অধিকাংশ টিকিট অবিক্রীত। সিলেটের অবস্থাও একই।

বিপরীত চিত্র চিলাহাটি, কুড়িগ্রাম, রংপুর, লালমনিরহাট, দিনাজপুর ও পঞ্চগড়গামী ট্রেনে। বেলা ১১টার পর কোনো ট্রেনের টিকিট অবিক্রীত ছিল না। খুলনা, যশোর, ফরিদপুরগামী ট্রেনের কিছু টিকিট তখনও অবিক্রীত ছিল। দুপুর ২টায় বিক্রি শুরুর পর ময়মনসিংহ ও জামালপুরের দিনের ট্রেনের টিকিট ঘণ্টাখানেকের মধ্যে শেষ হয়। অবশিষ্ট ছিল রাতের ট্রেনের কিছু টিকিট।

টিকিট কালোবাজারির অভিযোগে গতকাল মো. আরিফ নামে এক ব্যক্তিকে জামালপুরের মেলান্দহ স্টেশন থেকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা জেলা রেলওয়ে পুলিশ। তাঁর কাছ থেকে বিভিন্ন গন্তব্যের ৮১টি আসনের ৩৭টি টিকিট জব্দের দাবি পুলিশের। এর আগে গত বৃহস্পতিবার কালোবাজারির অভিযোগে ৯ জনকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব।

https://samakal.com/bangladesh/article/229434