২০ অক্টোবর ২০২৩, শুক্রবার, ৪:০১

এইচআরডব্লিউর নিবন্ধ

ক্ষমতাসীনদের বক্তব্য সহিংসতা উসকে দেবে

 

বাংলাদেশের রাজনীতিতে সহিংসতার হুমকি খুবই স্বাভাবিক এবং রাজনৈতিক নেতারা প্রায়ই এ ধরনের উসকানি দিয়ে থাকেন। বাংলাদেশের রাজনীতিতে সহিংসতা এবং এর পেছনে রাজনৈতিক নেতাদের ভূমিকা নিয়ে সম্প্রতি একটি নিবন্ধ লিখেছেন যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচের (এইচআরডব্লিউ) এশিয়া ডিভিশন এবং গ্লোবাল হেলথ ইনিশিয়েটিভের জ্যেষ্ঠ গবেষক জুলিয়া ব্লেকনার।

নিবন্ধে তিনি বাংলাদেশের রাজনীতির সংস্কৃতির পাশাপাশি এও উল্লেখ করেছেন, যে দেশে নির্বাচনী সহিংসতার বেশিরভাগই রাজনৈতিক দলগুলোর সমর্থকদের দ্বারা ঘটে থাকে; সেখানে নেতাদের এ ধরনের হুমকি পরিস্থিতিকে আরও বেশি করে সহিংসতার দিকে নিয়ে যেতে পারে।

জুলিয়া ব্লেকনারের নিবন্ধটি নিচে সংক্ষেপে তুলে ধরা হলো-

গত ৯ অক্টোবর ঢাকায় শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশের আয়োজন করে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। সেখানে দলের একজন মন্ত্রী সম্প্রতি বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য রাশিয়া থেকে ইউরেনিয়াম আমদানি নিয়ে সমালোচনার জবাব দেন। এ সময় তিনি প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দলের নেতাদের মাথায় ইউরেনিয়াম ঢেলে দেওয়ার হুমকি দেন। তিনি বলেন, ‘ডান্ডা মেরে ঠান্ডা করব না। তাদের মাথায় ইউরেনিয়াম ঢেলে ঠান্ডা করে দেব।’

ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের এক নেতা আরও বলেন, ‘কেউ হুমকি দিলে কী করতে হবে আওয়ামী লীগ সেটা জানে।’ যদিও (সরকারি) কর্তৃপক্ষ সমালোচক এবং বিরোধী সদস্যদের বিচার করার বিষয়ে তৎপর, কিন্তু সহিংসতা উসকে দেওয়ার জন্য ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের বিচার করা হয় না।

এমনকি সরকারপ্রধানের বিরুদ্ধে সহিংসতার হুমকির অভিযোগ রয়েছে। গত বছর বিরোধীদলের নেতাদের ‘পদ্মা সেতুতে তুলে নদীতে ফেলে দেওয়ার’ কথা বলেন ক্ষমতাসীন দলের প্রধান। প্রধান বিরোধী দলের নেত্রী খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দেওয়ার আহ্বানের প্রতিক্রিয়ায় সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্য, ‘তার বয়স তো ৮০’র ওপরে। সময় হয়ে গেছে।’

নির্বাচনের কাছাকাছি সময়ে এসে এমন বক্তব্য বাকস্বাধীনতাকে আরও স্তিমিত করে দিয়েছে। সরকার যদি শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের জন্য প্রতিশ্রুতির প্রতি আন্তরিক হয়, তাহলে দলীয় নেতারা হুমকি দেওয়া বাদ দিয়ে শান্তিপূর্ণ অংশগ্রহণের আহ্বান জানিয়ে সেই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের সূচনা করতে পারেন।

https://www.kalbela.com/world/middle-east/32213