২০ অক্টোবর ২০২৩, শুক্রবার, ৩:৫৫

নিত্যপণ্যের লাগামছাড়া দামে নাকাল ভোক্তা

 

খেয়েপরে বেঁচে থাকতে প্রতিনিয়ত লড়াই করছেন সাধারণ মানুষ। চাল, ডাল, তেল, ব্রয়লার মুরগি, চিনি, লবণ, আটা-ময়দা-সব পণ্যই বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে। সঙ্গে মাছ-মাংস, সব ধরনের সবজি, আলু, পেঁয়াজ ও ডিমের লাগামছাড়া দাম ক্রেতাকে নাজেহাল করছে। এতে সংসারের বাড়তি খরচ সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছেন সব শ্রেণির মানুষ। বৃহস্পতিবার রাজধানীর কাওরান বাজার, মালিবাগ কাঁচাবাজার, শান্তিনগর বাজার ও নয়াবাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

খুচরা বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার প্রতি কেজি আলু বিক্রি হয় ৫০ টাকায়। যা এক দিন আগেও ৪৫ টাকা ছিল। বিক্রেতারা জানান, কয়েকদিন পরপর পণ্যটির দাম কেজিতে ৫ টাকা ওঠানামা করছে। পাশাপাশি প্রতি পিস ডিম বিক্রি হয় ১৪ টাকায়। যা দুই দিন আগে ১৫ টাকা ছিল। প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয় ১০০ টাকায়। এছাড়া বাজারে মসুর ডাল (মাঝারি দানা) বিক্রি হচ্ছে ১২৫ টাকা করে। যা সাতদিন আগে ১২০ টাকা ছিল। নতুন দেশি রসুন বিক্রি হচ্ছে ২৩০ টাকায়। যা সাত দিন আগে ২২০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। আমদানি করা আদা মানভেদে বিক্রি হচ্ছে ২২০-৩৩০ টাকা। যা আগে ২০০-৩২০ টাকা ছিল।

রাজধানীর কাঁচাজাজারে প্রতিকেজি গোল বেগুন ১২০-১৪০ ও লম্বা বেগুন ৮০-১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। করলা, কচুমুখি, বরবটি, টমেটো বিক্রি হচ্ছে ১০০-১২০ টাকা করে। ঢ্যাঁড়শ, পটল, ঝিঙা, চিচিঙ্গা ৮০-১০০ টাকা বিক্রি হতে দেখা গেছে। তুলনামূলক কম দামের মধ্যে প্রতি কেজি মূলা ৫০-৬০ টাকা ও পেঁপে বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকায়।

জানতে চাইলে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান যুগান্তরকে বলেন, বাজারে সব ধরনের পণ্যের দাম বেড়েছে। ফলে আয় না বাড়লেও সব শ্রেণির মানুষের ব্যয় হু হু করে বাড়ছে। তাই পণ্যের দাম যৌক্তিকভাবে বেড়েছে কিনা তা সংশ্লিষ্টদের দেখতে হবে। কোনো অনিয়ম পেলে আইনের আওতায় এনে ভোক্তাকে স্বস্তি দিতে হবে।

খুচরা বাজারে বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ১০ টাকা কমে ব্রয়লার মুরগি ১৮০-১৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাশাপাশি প্রতি কেজি সোনালি জাতের মুরগির ৩২০ থেকে ৩৩০ টাকা দরে ক্রেতাকে কিনতে হচ্ছে। দেশি মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫৫০ টাকা। আর প্রতি কেজি গরুর মাংস ৮০০ ও খাসির মাংস ১১০০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে। এছাড়া সীমিত আয়ের মানুষ সবচেয়ে বেশি কেনে পাঙ্গাশ, চাষের কই ও তেলাপিয়া জাতীয় মাছ। বাজারে এসব মাছের কেজি ২২০-৮০ টাকা। প্রতি কেজি রুই, কাতলা, কালিবাউশ ও মৃগেল বিক্রি হচ্ছে আকারভেদে ৩৮০-৪৫০ টাকায়।

রাজধানীর নয়াবাজারে পণ্য কিনতে আসা মো. শাকিল বলেন, বাজারে এসে কি কিনব তা ভেবে ঘাম ঝরছে। প্রত্যেকটি পণ্যের দাম অনেক বেশি। সবজি কিনবো, সেটাতেও হাত দেওয়া যাচ্ছে না। ৮০ টাকার নিচে কোনো সবজি নেই। পাশাপাশি মাছ মাংসের দামেও আগুন। আলু, পেঁয়াজ ও ডিমের দাম এখনও কমেনি। বাজার তদারকি সংস্থা কি করছে তা নিয়েও প্রশ্ন আছে। সব মিলে বাজারে পণ্য কিনতে এসে নাকাল হতে হচ্ছে।

https://www.jugantor.com/todays-paper/first-page/730747