৮ অক্টোবর ২০২৩, রবিবার, ১০:১৫

রাজশাহীর উত্তরের উপজেলাগুলোতে ভারী বর্ষণে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি

রাজশাহী জেলার উত্তরাংশে অবস্থিত উপজেলাগুলোতে ভারী বর্ষণে ধান ও শীতকালীন সবজিসহ বিভিন্ন ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। পাশাপাশি পুকুরের পাড় প্লাবিত হয়ে মাছ চাষিদের ব্যপক ক্ষতি হয়েছে। এছাড়াও জলবদ্ধতায় শত শত পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। জলাবদ্ধতার কারণে জমির ফসলও ডুবে থাকছে।

জানা গেছে, রাজশাহীতে সপ্তাহ ধরে বৃষ্টি দেখা দিলেও গত দুই দিনের ভারী বৃষ্টিতে রাজশাহীর তানোর, মোহনপুর, দুর্গাপুর, বাগমারাসহ উপজেলা ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়ে। বিশেষ করে এ ভারী বর্ষণে সবজি চাষিদের মাথায় হাত পড়েছে। দুর্গাপুর উপজেলার চুনিয়াপাড়া গ্রামের কৃষক মাহাবুর রহমান বৃষ্টিতে ফসল নষ্ট হওয়ার কারণে স্ট্রোক করে মারা যাওয়ার কথাও জানা গেছে। রাজশাহীতে গত বুধবার থেকে বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত ৩০০ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়। জমে যাওয়া পানি বের হতে না পেরে আমন ধান ও সবজিতে পচন ধরেছে। দুর্গাপুর উপজেলার সিংগা গ্রামের আশরাফ আলী বলেন, ‘অনেক কষ্ট করে দেড় বিঘা জমিতে ধান রোপণ করেছিলাম। গত দুই দিনের বৃষ্টিতে এর পুরোটা তলিয়ে গেছে। আমার মত শত শত কৃষকের ধান তলিয়ে গেছে। পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় পানি স্থির হয়ে রয়েছে। ফলে ধানের চারাগুলোতে পচন ধরেছে।’ আরেক কৃষক আব্দুল লতিফ বলেন, ১৫ কাঠা জমিতে কলা লাগিয়েছিলাম কলার গাছ হয়েছিল বেশ সুন্দর। ভারী বর্ষণে কলার বাগানে হাঁটু পানি জমে গেছে। গাছগুলো লাল হতে শুরু করেছে। যদি দু’একদিনের মধ্যে পানি না নামে তাহলে সব গাছ মরে যাবে। উপজেলার চুনিয়াপাড়া গ্রামের মাসুম, মনতাজ, নবীসহ অন্তত ২০ জন চাষির ভারী বর্ষণে ফুলকপি পানিতে তলিয়ে গেছে। উপজেলা মৎস্য বিভাগ হতে জানা গেছে, পুরো উপজেলায় পুকুরেরসংখ্যা প্রায় ১১ হাজার ৯১০টি। গত দুই দিন থেকে ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে ঢলের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রায় ১ হাজার পুকুর তলিয়ে যায়। এসব পুকুরে বিভিন্ন জাতের বড় মাছ ও পোনা ছিল। এতে টাকার অঙ্কে ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ১০ কোটি টাকা। তানোর ও মোহনপুরেও একই পরিস্থিতি বিরাজ করছে বলে জানা গেছে। তানোরে বিপুল পরিমাণ আমনের জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। টানা বৃষ্টির কারণে উজান থেকে আসা পানির ঢলে গ্রামীণ রাস্তাঘাট ও গ্রামে পানি ঢুকে পড়ে। এতে করে উপজেলার চান্দুড়িয়া, কামারগা, পাঁচন্দর ও কলমা ইউনিয়ন এবং তানোর পৌরসভায় রোপা আমন ধান ডুবে গেছে। উপজেলার জনসাধারণের একমাত্র উপার্জনের উপায় রোপা আমন ধান ডুবে যাওয়ায় হতাশায় কপালে ভাঁজ পড়েছে কৃষকদের। যে সব জমি ডুবেছে এবং পানি ঢুকেছে সে সব জমি থেকে তিন চার দিনের মধ্যে পানি বের হলে ধানের তেমন ক্ষতি হবে না। কিন্তু এর চেয়ে বেশি সময় পার হলে ধান হবে না বলে কৃষকরা জানান।

https://www.dailysangram.info/post/537457