৭ অক্টোবর ২০২৩, শনিবার, ১২:৩৯

‘এ নেশা পাবে না...’

ইবনে নূরুল হুদা

আগের দিনে শীতকালে গ্রামাঞ্চলে মেলা বসতো। এমনকি আমার নিজ গ্রামেও। মেলায় রকমারি পসরা ছিল খুবই চিত্তাকর্ষক। প্রাধান্য থাকতো শিশুদের নানা ধরনের খেলনা উপকরণ এবং নানা রঙ-এর মিষ্টান্ন দ্রব্যের। তবে বিনোদনকে বিশেষ গুরুত্ব দিতেন আয়োজকরা। কারণ, এসব ছিল মেলার আয়ের অন্যতম মাধ্যম। এজন্য আয়োজন করা হতো যাত্রাপালা; বৌ-বন্ধক, দেওয়ানা মদীনা, আলাল-দুলাল ও নছিমনের মত নানা ধরনের পালাগান, সার্কাস, পুতুলনাচসহ নানা অনুষঙ্গের। নাগরদোলা ছিল গরীব শিশুদের সহজ ও সাশ্রয়ী বিনোদন। একই সাথে জুয়া ছিল মেলার অন্যতম আকর্ষণ। দূরদূরান্ত থেকে জুয়ারিরা এসে মেলায় নির্বিঘ্নে জুয়া খেলে সর্বস্বান্ত হতেন। এসব বিষয়ে ধর্মীয় মহলের আপত্তি থাকলেও হালে পানি পেতো না বরং সবকিছু উপেক্ষা করে অবলীলায় চলতো মউজ-মাস্তি। ঠেকায় কার সাধ্য! কে শোনে মোল্লা-মৌলভীদের কথা?

গ্রামের মেলা চলতো প্রায় একমাস। সকালের দিকে মেলায় কোন হইহুল্লোর না থাকলেও বিকেলে সরগরম হয়ে উঠতো মেলার অঙ্গন। সন্ধ্যার পর যাত্রা ও সার্কাসের প্যান্ডেল থেকে উচ্চশব্দে মাইকে বিভিন্ন ধরনের চিত্তাকর্ষক গান বাজানো হতো। নট-নটীদের নৃত্য ও নূপুরের ঝঙ্কারে ঝঙ্কৃত হতো পুরো এলাকা। সে গানের তালে তালে উঠতি বয়সের ছেলেমেয়েরা মেলায় আসতো বিক্ষিপ্ত পঙ্গপালের মত। আমি খানিকটা বেরসিক হলেও গানের কিছু কিছু অংশ আজও স্মৃতির মানসপটে ভেসে ওঠে। প্রায় ক্ষেত্রেই আমি গানগুলোর মাথামু-ু কিছুই বুঝতাম না। শিশুমনে এসব কোন কিছুই আন্দোলিত হয়নি। প্রতিদিনই মেলার মাইক থেকে অবলীলায় ভেসে আসতো, ‘ভ্রমর কইয়ো গিয়া..’ ‘আজ পাশা খেলবো রে শ্যাম’ ‘করিমু না কাম ছাড়ে না ’ ‘প্রাণ সখিরে..’ এবং ‘এ নেশা পাবে না নেশার বোতলে’ এ ধরনের কতশত গান। যার কোন ইয়ত্তা ছিল না। যা রীতিমত মোহাবিষ্ট করে তুলতো উঠতি বয়সের নতুন প্রজন্মকে। বাদ যেতো না আইবুড়ো ও আদু ভাইয়েরাও। কারণ, এসব গানের আবেদন ও মদিরা সকল শ্রেণির মানুষকেই মোহাবিষ্ট করতে পারে। ক্ষেত্রবিশেষে হতোও এমনটাই।

শৈশবে এসব গানের মর্ম আকৃষ্ট না করলেও জীবনের পড়ন্ত বিকেলে এসে গানের একটা অংশ আমাকে বেশ আন্দোলিত করতো ভীষণভাবে। তা হলো, ‘নেশা পাবে না নেশার বোতলে’। এই বয়সে এসে আমার অনুসন্ধিৎসু মনে প্রশ্ন জাগে, এ আবার কোন ধরনের নেশা যা নেশার বোতলে পাওয়া যায় না। অবশ্য সব নেশায় বোতলজাত বা বোতলবদ্ধ নয়। কিন্তু গানের পরের অংশ শুনে তো আমি একেবারে আক্কেল গুড়–ম। এর পরের অংশটা হচ্ছে, ‘এ অগুন নেভে না নদীর জলে’। তাইতো ভাবিত মনে ভাবনা জাগে এ আবার কোন ধরনের আগুন যা নদীর জলে নেভানো যায় না। আর নেশা ও আগুনের কথা যুগপৎভাবেই বা আসলো কেন? কারণ, একটার সাথে অন্যটার কোনই সাদৃশ্য নেই। তাহলে এই আগুনের লেলিহান শিখার দহন থেকে বাঁচার উপায়ই বা কী? আর এ নেশার বৈশিষ্ট্যই বা কী হতে পারে? এটি তো অনুসন্ধিৎসা মানুষের জিজ্ঞাসা হতেই পারে। আমিও তা থেকে অন্যথা নই।

খানিকটা অনুসন্ধিৎসু মন নিয়েই এই বয়সে এসে নেশা নিয়ে অল্পবিস্তর জানার চেষ্টা করেছি। এতে আমার মনে হয়েছে, নেশার ইতিবাচক ও নেতিবাচক উভয় দিকই রয়েছে। যদি কোন মানুষ বই পড়া, নতুন কিছু শেখার, ভালো কিছু চিন্তা করার নেশা তৈরি করতে পারে, তাহলে অবশ্যই সেটা সমাজ, রাষ্ট্্ের ও পারিবারিক পরিসরে ইতিবাচক প্রভাব বিস্তার করতে পারে। কিন্তু মানুষ যখন গাঁজা, হেরোইন, সিগারেট, মদ বা লাগামহীন যৌনতার দিকে আকৃষ্ট হয় তখন তার দ্বারা সমাজ কলুষিত হয়। বিঘিœত হয় সামাজিক শৃঙ্খলাও। যা পুরো সমাজদেহকেই রীতিমত ক্ষতবিক্ষত করে ফেলে। তা এক একজনের কাছে এক এক রকমের হতে পারে। কেউ খুশিতে নেশা করে। আবার কেউ হতাশায় নেশা করে। খুশিতে নেশা করলে সেটা দীর্ঘস্থায়ী হয় না। কিন্তু হতাশায় নেশা করলে সেটা অবশ্যই দীর্ঘস্থায়ী হয়। এর পরিণতিও হয়ে ওঠে ভয়াবহ। মৃত্যুই তার অনিবার্য পরিণতি।

বস্তুত, আসক্তি বা মাদকাসক্তির সাধারণ সংজ্ঞামতে, সেইসব বস্তুর ব্যবহার বোঝায় যা গ্রহণের কারণে রক্ত ও মস্তিষ্কের প্রতিবন্ধক অতিক্রম করে সাময়িকভাবে মস্তিষ্কের রাসায়নিক দ্রব্যের পারিপার্শ্বিক অবস্থা পরিবর্তন করে। অনেকে এই তালিকায় মানসিক প্রবৃত্তি সৃষ্টিকারী আরো অনেক অনুষঙ্গকেই অন্তর্ভুক্ত করে থাকেন। যেমন-জুয়া, খাদ্য, যৌনতা, কম্পিউটার, ভিডিও গেইম, ইন্টারনেট, কর্ম, ধর্ম, শারীরিক চর্চা, দূরদর্শন ও কেনাকাটা। এই সকলেরই মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহারে আসক্তির এবং সাথে সাথে লজ্জা, অপরাধবোধ, ভয়, নিরাশা, ব্যর্থতা, দুশ্চিন্তা, প্রত্যাখ্যান, উদ্বেগ, ব্যাকুলতা ও হীনম্মন্যতার সৃষ্টি করে। তবে সবচেয়ে গুরুতর ও মারাত্মক নেশা হলো রাজনৈতিক ক্ষমতার নেশা। এ নেশা যাকে পেয়ে বসে সে একেবারে হিতাহিত জ্ঞানশূন্য হয়ে পড়ে; বিলোপ পায় মনুষত্ব।

আবারো আসি আসল কথায়। গানে এমন নেশার কথা বলা হয়েছে যা কোন নেশার বোতলে পাওয়া যায় না। একথায় কোন বিশেষত্ব বা অভিনবত্ব নেই। কারণ, সব নেশাজাতীয় দ্রব্য বোতলজাত নয় বরং ভিন্ন অবয়বেও নেশার বিস্তৃতি রয়েছে। জুয়া, যৌনতা, কম্পিউটার আসক্তি, ভিডিও গেইম, ইন্টারনেট, কর্ম, ধর্ম, শারীরিক চর্চা, দূরদর্শন ও কেনাকাটা এসব কোনভাবেই বোতলজাত করা সম্ভব নয়। তবে গানে কোন ধরনের নেশার কথা উল্লেখ করা হয়েছে তা মোটেই স্পষ্ট নয় বরং অস্পষ্ট ও মোহাবিষ্ট আবেদনের হাতছানি।

নেশাবিষয়ক আলোচনা-পর্যালোচনায় একথা স্পষ্টতই প্রতীয়মান হয় যে, নেশা এমন এক দ্রব্য যা মানুষের মধ্যে মাদকতা সৃষ্টি করে স্বাভাবিক জ্ঞানবুদ্ধির লোপ এবং সেবনকারীকে এমন এক স্বপ্নের রাজ্যে নিয়ে যায় যা তার কল্পনারও অতীত। আর সে কল্পলোকের ডালিম কুমারেরা শুধু রূপকথার কঙ্কাবতীর সান্নিধ্যে রোমাঞ্চ বা অভিসারেই মদমত্ত থাকেন। তাই তার পক্ষে কোনভাবেই বাস্তবতা উপলব্ধি করা সম্ভব হয় না। ফলে সবসময় তাকে মাদকতায় মদমত্ত থাকতে হয়। এ বৃত্ত থেকে বেড়িয়ে আসা তার পক্ষে কোনভাবেই সম্ভব হয় না। আর এজন্য তাকে এক সময় চড়া মূল্যও দিতে হয়।

বিষয়টি গভীরভাবে চিন্তা-ভাবনা করেছি সবসময়। মাদকাসক্ত ব্যক্তি ও মাদক বিশেষজ্ঞদের বিষয়টি নিয়ে মতবিনিময়ও করেছি অনেক। কিন্তু এর কোন সদুত্তর মেলেনি কারো কাছে। আর নিজে নেশাগ্রস্ত না হলেও নেশার ধরন, ক্রিয়া ও প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে আমার সম্যক ধারণা রয়েছে। বিষয়টি রবীন্দ্রনাথের ‘ক্ষুধিত পাষাণ’ গল্পের অশরীরি নারী কন্ঠের মূর্চ্ছনাই মনে হয়েছে। এক ছলনাময়ীর ছলনা। যার কোন বাস্তবতা নেই। শ্রুত কথা ও কল্পলোকের কল্পকথাই যার ভিত্তি। যা পাগল মেহের আলীর কথায় রীতিমত স্পষ্ট হয়ে উঠেছে, ‘সব ঝুট হ্যাঁয়, সব ঝুট হ্যাঁয়; তফাৎ যাও-তফাৎ যাও’।

অবশ্য এতেও আমি মোটেই তৃপ্ত হতে পারিনি। কারণ, এটা তো রবীন্দ্রনাথের ‘ক্ষুধিত পাষাণ’ গল্পের ভূতুরে ও পরিত্যাক্ত কোন বাড়ি নয়। বিষয়টিকে পাগল মেহের আলীর প্রলাপ ভাবারও কোন সুযোগ নেই বরং নারী কণ্ঠের মোহাবিষ্ট আহ্বানই মনে হয়েছে আমার কাছে। আর এই আহ্বানের স্থান-কাল-পাত্র বা বয়সভেদ নেই। তাই আমার মনে হয়েছিল এই আহ্বানটা আক্ষরিক অর্থে কোন মাদকদ্রব্যের প্রতি নয়; নয় কোন বস্তুকেন্দ্রিক আবেদন বরং আমার কাছে মনে হয়েছে কোন এক স্বৈরীনির বা বারবানিতা, বারাঙ্গনা বা দেহপসারীনির আহ্বান। যা সম্পূর্ণ অপবিত্র। আর এমনই কদর্য যা নেশার বোতলে পাওয়া যায় না। মেলে না কোন মাদকদ্রব্যের মোড়কে। আর তা এমনই এক প্রজ¦লিত আগুনের লেলিহান শিখা যা নেভানো যায় না পাপ-পঙ্কিলতার কদর্যতা ছাড়া।

জীবনের দীর্ঘ পথপরিক্রমায় আমার কাছে এমনটি মনে হলেও আমার মধ্যে নতুন করে ভাবান্তরের সৃষ্টি হয়েছে। গানের মোহাবিষ্ট আহ্বান অবৈধ নারী সঙ্গ, কামকেন্দ্রিক ও উগ্র যৌনতা মনে হলেও সাম্প্রতিক সময়ে আমার সে ধারণা রীতিমত পাল্টাতে শুরু করেছে। একশ্রেণির রাজনীতিকের অবৈধ ক্ষমতালিপ্সা এবং তৎকেন্দ্রিক আচরণ দেখে মনে হচ্ছে এটা কোন স্বৈরীনি বা বারবনিতার আহ্বান নয় বরং ক্ষমতা পাগলদের ক্ষমতার মোহাবিষ্ট আহ্বান যা তাদেরকে হিতাহিত জ্ঞানশূন্য করে তোলে। কবির ভাষায়, ‘শোন হে মানুষ ভাই, সবার ওপরে মানুষ সত্য; তাহার ওপরে নাই’। কথাটি কবির বাস্তবভিত্তিক আত্মপোলব্ধি হলেও দেশের চলমান অপরাজনীতির কারণে সে সত্যের আমূল পরিবর্তন হয়েছে। এখন রাজনৈতিক কবিরা বলছেন, ‘সবার ওপরে ক্ষমতা সত্য; তাহার ওপরে নাই’। আর এটাই এখনকার বাস্তবতা।

আমার এই কথাটাকে কেউ অতিশয়োক্তি মনে করতেই পারেন। কিন্তু দেশের চলমান রাজনৈতিক গতিধারা পর্যালোচনায় একথার সত্যতা দিবালোকের মত স্পষ্ট হয়েছে। কারণ, একশ্রেণির রাজনীতিক যে মই বেয়ে রাষ্ট্রক্ষমতার উচ্চাসনে আরোহণ করেন, নিজেরা মঞ্জিলে মকসুদে পৌঁছার পর সেই মই আস্ত রাখেন না। শুধু অন্যরা সে মই ধরে ওপরে ওঠতে ব্যর্থ হোন তা নয় বরং নিজেদের স্বাভাবিক অবতরণের কোন পথও অবশিষ্ট থাকে না। যা আমাদের গণমুখী রাজনীতির চরিত্রকে গণবিরোধী করে তুলেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
আমাদের দেশ সাংবিধানিকভাবে গণপ্রজাতান্ত্রিক রাষ্ট্র। সরকারের মেয়াদান্তে গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ অনুসরণ করে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনে নতুন করে সরকার গঠিত হওয়ার কথা। কিন্তু ক্ষমতার নেশার মদমত্ততায় একশ্রেণির রাজনীতিকরা নির্বাচন আসার আগেই দেশকে রীতিমত রণক্ষেত্রে পরিণত করেছে। রাজপথের যৌক্তিক ও রাজনৈতিক আন্দোলনগুলোকে কথিত নাশকতা ও রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্র আখ্যা দিয়ে কঠোরভাবে দমন করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে। জনগণের জানমালের নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ভিন্নমতের ওপর লেলিয়ে দেয়া হয়েছে। ফলে গণরায়ের পরিবর্তে পেশিশক্তির ও রাষ্ট্রযন্ত্রের অপব্যবহার করে ক্ষমতা কুক্ষিগত করার চেষ্টা করছে বলে জনমনে ব্যাপক অভিযোগ উঠেছে। নির্বাচনী ময়দান সবার জন্য অবারিত ও সমান্তরাল হচ্ছে না। মানা হচ্ছে না গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ। সরকারের বিরুদ্ধে অবাধ, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের সকল পথ রুদ্ধ করার অভিযোগ করা হচ্ছে বিরোধী মহল থেকে। অভিযোগ উঠেছে জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত কেয়ারটেকার সরকার পদ্ধতি ষড়যন্ত্রমূলকভাবে বাতিল করার। অথচ যারা বাতিল করেছেন তারাই ছিলেন এক সময় এই পদ্ধতির অন্যতম প্রতিভূ। যে ফল আগে মিষ্ট থাকলেও ক্ষমতা প্রেমের মদমত্ততায় তিক্ত হয়ে উঠেছে। ফলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আমাদের দেশের জন্য স্বতন্ত্র ভিসানীতি প্রণয়ন করেছে। মার্কিন সরকার ইতোমধ্যেই তা কার্যকরের ঘোষণা দেয়ার পর আশা করা হয়েছিল যে, এতে সংশ্লিষ্টদের বোধদয় ঘটবে। কিন্তু হয়েছে তার উল্টোটা। কারণ, ভিসানীতি কার্যকরের ঘোষণা আসার পর ক্ষমতার নেশায় উন্মত্তরা বন্ধুপ্রতীম রাষ্ট্রগুলোকেও রীতিমত হুমকি দেয়া শুরু করেছে। মূলত, ক্ষমতা যখন রাজনীতিকদের কাছে মুখ্য হয়ে ওঠে, তখন দেশ ও জাতীয় স্বার্থ হয় রীতিমত গৌণ। মূলত, তাদেরকে এখন ক্ষমতার নেশায় পেয়েছে। এ নেশা ক্ষমতা ছাড়া কোনভাবেই মেটানো সম্ভব নয়। আর ক্ষমতার আগুন তাদেরকে যেভাবে দগ্ধ করছে তা নদীর জলেও নেভানো যায় না। এখানে নীতি-নৈতিকতা, আদর্শ, মূল্যবোধ, গণতন্ত্র, জাতীয় স্বার্থ সবই নস্যি। ক্ষমতার নেশায় উন্মত্ত-উন্মাতাল। এখানেই যাত্রাপালার গানের স্বার্থকতা।

দেশে এখন চলছে ক্ষমতায় আরোহণ, অবতরণ ও যেকোন মূল্যে ক্ষমতা রক্ষার রাজনীতি। সরকার, বিরোধী দল ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে এক যুদ্ধংদেহি ভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে। পুরোদমে চলছে রণপ্রস্তুতি। বিষয়টি আবারো গম্ভীরা গান ‘আরেক সাজিল মর্দ নামে আইন্দা-সাইন্দা, আশি মণ তামাক লয় লেইংটির মধ্যে বাইন্ধা/আরেক সাজিল মর্দ নামে মদন ঢুলী, আশি মণ তামা তার ঢোলের চারটা খুলী/তুগুলী-মুগুলী সাজে তারা দুই ভাই, ঐরাবতে সাইজা আইলো আজদাহা সিপাই’ কথাই স্মরণ করিয়ে দেয়। এখন সময়ই বলে দেবে এ যুদ্ধের ফলাফল কী হয়! তবে দিন শেষে জনতার বিজয় হোক এ প্রত্যাশা আপনার-আমার সকলের!

https://www.dailysangram.info/post/537316