১৮ জুন ২০১৭, রবিবার, ২:২২

দ্রব্য মূল্য নিয়ন্ত্রণের কোন কার্যকর পদক্ষেপই সরকার গ্রহণ করছে না

সকল প্রকার নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় দেশের মধ্যবিত্ত, নিম্ন মধ্যবিত্ত ও হতদরিদ্র জনগণের নাভিশ্বাস উঠেছে

চাল, ডাল, তেল, আটা, চিনি, মসলা, মাছ, গোশ্তসহ সকল নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের লাগামহীনভাবে মূল্য বৃদ্ধিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারী জেনারেল ডাঃ শফিকুর রহমান আজ ১৮ জুন প্রদত্ত এক বিবৃতিতে বলেন, “চাল, ডাল, তেল, আটা, চিনি, মসলা, মাছ, গোশতসহ সকল প্রকার নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য অব্যাহতভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় দেশের মধ্যবিত্ত, নিম্ন মধ্যবিত্ত ও হতদরিদ্র জনগণের নাভিশ্বাস উঠেছে। কিন্তু দ্রব্য মূল্য নিয়ন্ত্রণের কোন কার্যকর পদক্ষেপই সরকার গ্রহণ করছে না।

বাজেট ঘোষণার পূর্ব থেকেই চালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বাড়তে থাকলেও বাজেট ঘোষণার পর তা লাগামহীনভাবে বাড়তে শুরু করেছে। বিশেষভাবে বাড়তি মূল্যে চাল কেনার কারণে সীমিত আয়ের লোকদের অবস্থা শোচনীয় হয়ে পড়েছে। চালের দাম বর্তমানে প্রকার ভেদে প্রতি কেজি ৫০ টাকা থেকে ৭০ টাকায় বিক্রয় হচ্ছে। মোটা চালই বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায় যার ভোক্তা নিম্ন আয়ের জনগোষ্ঠী। এতে সাধারণ দরিদ্র জনগোষ্ঠীর নাভিশ্বাস উঠেছে। গত ১ মাসে চালের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে শতকরা ৮ শতাংশ এবং বাৎসরিক হিসেবে বৃদ্ধি পেয়েছে শতকরা ৪৬.৮৮ শতাংশ।

চালের মওজুদ বর্তমানে তলানীতে পৌঁছেছে। হাওরে আগাম বন্যায় ১২ লক্ষ মেট্রিক টন চালের উৎপাদন কম হয়েছে। বেসরকারী হিসেবে সারা দেশে চাল উৎপাদন ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৪০ লক্ষ মেট্রিকটন। এ ঘাটতি পুরণের জন্য চাল আমদানী করা প্রয়োজন। কিন্তু সরকারের কোন কার্যকর উদ্যোগ লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। সম্পূরক শুল্ক প্রত্যাহার ছাড়া বেসরকারী আমদানীকারকগণ চাল আমদানী করতে উৎসাহী হচ্ছে না। চালের অভ্যন্তরীণ সংগ্রহও কাক্সিক্ষত লক্ষ্যে পৌঁছতে পারেনি। ফলে চালের বাজার সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। চালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের উর্ধগতিতে জনগণের দুর্দশা চরম আকার ধারণ করেছে। কিন্তু জনগণের এ দুঃখ-দুর্দশা দেখার সরকারের কোন সময় নেই।

সরকার নিজেদের আখের গোছানোর জন্য অব্যাহতভাবে বেপরোয়া লুটপাট, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, বিদেশে অর্থপাচার এবং বিভিন্ন ধরনের ট্যাক্স-ভ্যাট ইত্যাদির মাধ্যমে জনগণের জীবন ধারণ অসম্ভব করে তুলেছে। বিদ্যমান এ সমস্যা সমাধানের চাইতে বিরোধী দলকে দমন করা এবং নিজেদের আখের গোছানোর কাজেই সরকার সর্বশক্তি নিয়োগ করেছে।

জনগণের দুঃখ-দুর্দশার কথা বিবেচনা করে চাল, ডাল, তেল, আটা, চিনি, মসলা, মাছ, গোশতসহ নিত্য-প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণ করে জনগণের ক্রয়সীমার মধ্যে নিয়ে আসার জন্য কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে আমি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। অন্যথায় দেশের জনগণের ধৈর্যের বাধ ভেগে গেলে কারোরই কিছু করার থাকবে না।”