বিদেশী ভাষা শিখতে গিয়ে মাতৃভাষার প্রতি অবহেলা দুঃখজনক

ভাষা সৈনিক অধ্যাপক গোলাম আযম

  • ছাত্র জীবনে নেতার ভূমিকায়
    * পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর নিকট মেমোরান্ডাম পেশ
    * পেশাগত জীবনে আন্দোলনের নেতৃত্ব
    * তিনবার গ্রেফতার ও চাকুরীচ্যুত
  • মানুষরে মনরে ভাব আদান প্রদানরে জন্য ভাষা মহান আল্লাহর এক অর্পূব নয়িামত। তনিি মানুষকে যে কথা বলার ক্ষমতা দয়িছেনে (৫৫:১-৪) তা এই ভাষার মাধ্যমইে মানুষ প্রকাশ করে থাক। বাঙালি মুসলমানদের মাতৃভাষা হলো বাংলা, এ ভাষা আমাদের জাতীয় ভাষা। ভাষা কেবল শিক্ষা বা সাহিত্যের বাহনই নয়, তা সংস্কৃতি ও জীবনাদর্শেরও বাহন। আর তাই, সেই ভাষার উপর আঘাত সত্যিকার অর্থে সাহিত্য, সংস্কৃতি ও জীবনাদর্শের উপরই আঘাত।
  • ১৯৪৭ সালে ভারতর্বষ ভাগ হয়ে পাকিস্তান ও ভারত নামে যে দুটি দেশ জন্মলাভ করেছে সেই পাকিস্তানের র্পূবাঞ্চলের জনগোস্ঠীর মাতৃভাষা বাংলা। দেশ বিভাগের পর পরই বাঙ্গালী মুসলমানেরা তাদের মাতৃভাষার উপর আক্রমণের আশংকায় ভাষা আন্দোলন শুরু কর। মুখের ভাষার অধিকার আদায়ের এই আন্দোলনের সাথে গভীরভাবে জড়িয়ে আছে এই অঞ্চলের মানুষের আবেগ ও উচ্ছাস, অধিকার আদায়ের সংগ্রামে আত্মত্যাগের অনুপ্রেরণা। তাই, ভাষা আন্দোলন আমাদের জাতীয় ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ ও অসাধারণ চেতনাউজ্জ্বল এক অধ্যায়।
  • এ আন্দোলন কেবল ১৯৫২ সালেই সীমাবদ্ধ ছিলো না; এর রয়েছে সুদীর্ঘ ধারাবাহিকতা। প্রকৃতপক্ষে, ১৯৪৭ সালের ১৪ই আগস্ট পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর পরই ভাষা আন্দোলনের সূচনা হয়েছিল, যা ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্র“য়ারীতে চরম পরিণতি লাভ করে। কিন্তু, দুঃখজনক হলওে সত্য যে এ মহান আন্দোলনের বস্তুনিষ্ঠ ধারাবাহিক ইতিহাস আমাদের সামনে নেই। এই আন্দোলনের প্রকৃত ইতিহাস চাপা দিয়ে তা বিকৃত করার প্রবণতা ও অপতৎপরতা চলে আসছে প্রথম থেকেই। সেই ষড়যন্ত্রের ধারাবাহিকতায় দেশে ইতিহাস বিকৃতির মহা উৎসব চলছে। ভাষা আন্দোলনের সাথে যাদের দূরতম সর্ম্পকও ছিলনা তাদরকে ভাষা বীর সাজিয়ে সত্যিকারের ভাষা সৈনিকদের নাম ইতিহাস থেকে মুছে ফেলার অপপ্রয়াস চলে আসছে ক্রমাগতভাব।
  • অধ্যাপক গোলাম আযম এমন একজন ভাষা সৈনিক যিনি সেই ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছেন। শাসকগোষ্ঠী এবং তাদের তাবেদাররা জঘন্য চক্রান্ত করে পরিকল্পিতভাবে মিথ্যাচারের মাধ্যমে ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস থেকে এই নাম মুছে ফেলার চেষ্টা করেছে, এই মহান নেতাকে মানুষের সামনে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করেছে। কিন্তু, ভাষা আন্দোলনে প্রত্যক্ষভাবে অংশগ্রহণকারী প্রকৃত ‘ভাষা সৈনিক’দের কাছ থেকেই এ মহান আন্দোলনের প্রকৃত ইতিহাস উদ্ধার করে ইতিহাসের অনেক বিভ্রান্তি ও কাল্পনিক তথ্য দূর করা হয়ছে, যা আমাদের জাতীয় ইতিহাসের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দলিল হিসেবে বিবেচিত।
  • অধ্যাপক গোলাম আযম অত্যন্ত সফলভাবে ১৯৪৬-৪৭ সেশনে ফজলুল হক হলের ছাত্র সংসদের জেনারেল সেক্রেটারি (G.S) দায়িত্ব পালনের ফলে ছাত্রদের আগ্রহ ও উৎসাহের কারণেই ১৯৪৭-৪৮ সেশনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) এর জিএস পদে নির্বাচনে করেন এবং রেকর্ড সংখ্যক ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। পরর্বতী সেশনেও (৪৮-৪৯) তিনি সেই দায়িত্ব পালন করেন। ভাষা আন্দোলনের সূচনা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে হওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই ডাকসু’র জিএস হিসেবে গোলাম আযম ছিলেন এই আন্দোলনের পুরোভাগ। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, তুখোড় ছাত্রনেতা গোলাম আযম এর অবদান মুছে ফেলার চক্রান্তের অংশ হিসেবে ডাকসু’র ‘অনার র্বোড’ এ দুই বছরের জিএস এর নাম ঢেকে ফেলা হয়েছিলো। পরবর্তীতে ১৯৪৭-৪৮ সেশনে তাঁর নামটি লিখা হলেও ১৯৪৮-৪৯ এ তাঁর নামটি এখনো ঢেকেই রাখা হয়েছে।
  • পাকিস্তান সৃষ্টির পর ১৯৪৮ সালে কায়েদে আযম মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ্ ঢাকায় আসেন। তাঁর আগমনের পূর্বে বাংলাকে রাষ্ট্র ভাষা করার দাবির যথার্থতা তুলে ধরার জন্য এবং সেই দাবীকে গণদাবীতে পরিণত করার লক্ষ্যে বছরের গোড়া থেকেই আন্দোলন শুরু হয়। সেই আন্দোলনের অংশ হিসেবে ১৯৪৮ সালের ১১ই মার্চ হরতাল পালিত হয়। হরতাল সফল করতে ডাকসু’র জিএস হিসেবে গোলাম আযম ছাত্রদের সংগঠিত করে বিভিন্ন গ্র“পে বিভক্ত করে পিকেটিং এর জন্য রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে প্রেরণ করেন। তিনি নিজেও একটি গ্র“প নিয়ে গুলিস্তান টিএন্ডটি অফিস (বর্তমান টেলিফোন এক্সচেঞ্জ) এর কাছে যান। সেদিন হরতালে পিকেটিংয়ের সময় তাঁকে সহ ১০-১২ জনকে গ্রেফতার করে তেজগাঁও থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। জীবনে এই তাঁর প্রথম গ্রেফতার।
  • আন্দোলন ক্রমশঃ দানা বাঁধতে থাকলে সে বছরেরই শেষ দিকে পাকিস্তানের প্রথম প্রধানমন্ত্রী লিয়াকত আলী খান ঢাকায় আসেন। ২৭ শে নভেম্বর তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জিমনেসিয়াম মাঠে ছাত্রদের উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন। সেদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সমাজের পক্ষ থেকে রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবি সম্বলিত একটি ঐতিহাসিক স্মারকলিপি প্রধানমন্ত্রীকে প্রদান করা হয়। তৎকালীন ডাকসু’র জিএস গোলাম আযম ছাত্রদরে পক্ষ হতে ঐ স্মারকলিপিটি পেশ করেন। তুমুল করতালির মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবি সম্বলিত স্মারকলিপিটি পাঠ করেন তুখোড় এই ছাত্রনেতা। ছাত্র সভায় মেমোরেন্ডাম পাঠ সম্পর্কে (অধ্যাপক) গোলাম আযম বলেন, ‘‘--- ডাকসুর জিএস হিসেবে আমি ঐ মেমোরেন্ডাম পাঠ করি। রাষ্ট্রভাষার কথাটি ছিল মাঝামাঝি। মনে পড়ে, রাষ্ট্রভাষার দাবীর প্যারাটি দু’বার পড়েছিলাম। একবার পড়ার পর ছাত্র সমাবেশে তুমুল করতালি পড়ে। আমি 'Let me repeat this’ বলে আবার ভাষার দাবীর প্যারাটি পড়লাম। আবারও এ দাবীর সমর্থনে সমাবেশে তুমুল করতালি পড়ে”। উল্লখ্যে, ইতিহাসের পাতায় বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবীতে এটাই প্রথম আনুস্ঠানকি ও প্রাতিষ্ঠানিক দাবী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়ে আছে। এই দাবীর পর থেকেই রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনের দাবি গতি পেতে থাকে, যার মূলে ছিল প্রধানত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা, যার প্রাণকেন্দ্রে ছিলেন ডাকসু’র তৎকালীন জিএস অধ্যাপক গোলাম আযম।

১৯৫০’ এ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এম.এ পাশ করে গোলাম আযম রংপুর কারমাইকেল কলেজে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক হিসেবে কর্মজীবনে প্রবেশ করেন।নিজ যোগ্যতা, মেধা ও দক্ষতার ফলে শীঘ্রই তিনি বিভাগীয় প্রধান এর দায়িত্ব লাভ করেন। অতি অল্প সময়েই তাঁর প্রতিভার পরিচয় পেয়ে কলেজ কতৃপক্ষ তাঁকে গভর্ণিং বডিতে শিক্ষক প্রতিনিধি নির্বাচন করেন। ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনের উত্তাল সময়ে তিনি সেখানে এই উভয় দায়িত্বেই নিয়োজিত ছিলেন। আন্দোলনের ঐ র্পযায়ে তিনি কলেজেরই আরো দুইজন অধ্যাপক সহ স্থানীয় কয়েকজন রাজনৈতিক কর্মী ও ছাত্রদের নিয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিলের আয়োজন করেন। সেই আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়ার অপরাধে তখন অধ্যাপক গোলাম আযম আবারো গ্রেফতার হয়ে রংপুর জেলে অন্তরীণ হন। ৬ই মার্চ গ্রেফতার হয়ে ৭ই মার্চ থেকে ২৫ দিন তিনি বন্দী থাকার পর মুক্তি লাভ করেন। উল্লেখ্য, নবীন কলেজ শিক্ষক মাত্র দু’মাস পূর্বে বিবাহ সম্পন্ন করে ফেব্রুয়ারীর শেষে কলেজ ক্যাম্পাসে নব-বিবাহিত স্ত্রীকে নিয়ে নতুন সংসার শুরু করেছিলেন মাত্র। স্ত্রীর হাতের মেহেদির রঙ শুকানোর আগেই তাঁকে এই বিপদে পরতে হয়।

পরবর্তীতে, ১৯৫৫ সালে ভাষার দাবীতে সম্ভাব্য আন্দোলনের আশংকায় তৃতীয়বারের মত তিনি গ্রেফতার হন। গ্রেফতারের কয়েকদিন র্পূবে রংপুরের তৎকালীন ডিএম (ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেট; র্বতমানে ডিসি বা জেলা প্রশাসক) উনাকে তাঁর সরকারি বাসভবনে ডেকে নিয়ে জানিয়েছিলেন রংপুর জেলার সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে ‘রাজনীতির সাথে জড়িত শিক্ষকদের বহিস্কারের ব্যবস্থা করতে সরকার তাঁকে নির্দেশ দিয়েছে। আরো নির্দেশ এসেছে যে ‘রাজনীতির সাথে জড়িত থাকবেনা বলে মুচলেকা দিলে তাঁদেরকে পরীক্ষামূলক এক বছরের সময় দেয়া হবে আর, মুচলেকা দিতে রাজি না হলে তাঁদের নিকট থেকে ইস্তফানামা নিতে হবে। সেই অনুযায়ী রংপুর জেলার ‘উচ্চ পর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তাদের দ্বারা গঠিত কমিটি ঐ জেলার স্কুল ও কলেজের “অবাঞ্চিত” শিক্ষকদের একটি তালিকাও তৈরী করেছেন জানিয়ে ডিএম বললেন, “ইউ টপ দ্যা লিস্ট”। সরকারের এই অন্যায় চাপের কাছে অকুতোভয় সিপাহসালার অধ্যাপক গোলাম আযম নতি স্বীকার করবেনা জানিয়ে ফিরে এলেন। এর ক’দনি পরই, ৬ই ফেব্রুয়ারি সকাল ৭টায় তিনি কলেজ ক্যাম্পাসের নিজ বাসভবন থেকে গ্রেফতার হন। ছাত্রদের কাছে তিনি খুব জনপ্রিয় ছিলেন বিধায় এই গ্রেফতারের কারণে তাদের মাঝে চরম প্রতিক্রিয়া হয়। তারা এই গ্রেফতারের জন্য প্রিন্সিপালকে দায়ী করে ক্লাস বর্জন শুরু করে। প্রিন্সিপাল কিছুই জানেন না বলে জানিয়ে ছাত্রদের এই বলে আশ্বস্ত করলনে যে ‘সম্ভবত ফেব্রুয়ারীর সম্ভাব্য আন্দোলনের আশংকায় সরকার এই ব্যবস্থা নিয়েছে এবং ফেব্রুয়ারির শেষেই আশা করা যায় তিনি মুক্ত হয়ে আসবেন’। তিনি গ্রেফতার থাকা অবস্থায় সরকারের চাপে সেই রাতেই গভর্ণিং বডি জরুরী বৈঠক করে অধ্যাপক গোলাম আযমকে চাকরী থেকে অব্যাহতি দেয়। ছাত্ররা আরো ক্ষুব্ধ হয়ে ক্লাস বর্জন অব্যাহত রাখে এবং মারমুখী হয়ে হরতাল করে তাদের প্রিয় শিক্ষককে চাকরীতে পুর্নবহাল দাবীতে আন্দোলন করতে থাকলে পুলিশের সাথে ছাত্রদের সংঘর্ষ হয়। এই অবস্থা ক্রমাগত চলতে থাকায় তিন দিন পর রাতের অন্ধকারে গভর্ণিং বডির জরুরী সভায় কলেজ তিন মাসের জন্য ছুটি ঘোষণা করে সকল গেইটে পুলিশ মোতাইয়েন করে এবং ছাত্রদের ক্যাম্পাস ত্যাগে বাধ্য করে এক মাস ২৬ দিন কারান্তরীণ থাকার পর ২রা এপ্রিল তাঁর মুক্তির আদেশ আসে। তাঁর কারামুক্তিতে ছাত্ররা তাদের প্রিয় শিক্ষককে নিয়ে যেন মিছিল করতে না পারে সেজন্য সেদিন রংপুর শহরে ১৪৪ ধারা জারি করে পুলিশ সুপার স্বয়ং নিজের গাড়ীতে উনাকে রেল স্টেশনে পৌঁছিয়ে দেন। পরবর্তীতে ছাত্র আন্দোলনের ফলে গভর্ণিং বডি তাঁকে চাকরীতে পুনর্বহালের সিদ্ধান্ত নিলে নতুন প্রিন্সিপাল তাঁকে যোগদানের অনুরোধ জানিয়ে চিঠি পাঠালেও তিনি তা বিনয়ের সাথে প্রত্যাখ্যান করেন।

ভাষা আন্দোলনের এই সেনানায়ক ছাত্র অবস্থায়ই এই আন্দোলনের নেতৃত্ব দেয়া শুরু করে পেশাগত জীবনের পুরোটা সময়ই নেতৃত্ব দিয়ে গেছেন। আত্মপ্রচারের পরোয়া না করে নীরবেই তিনি নিজের দায়িত্ব সম্পন্ন করে গেছেন। এই আলদোলনের ফলে তাঁকে মোট তিনবার গ্রেফতার হতে হয়েছে এবং প্রায় তিন মাস কারাবন্দী থাকতে হয়েছে। শেষ পর্যন্ত এই আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়ার ‘অপরাধেই তাঁকে চাকরী থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। ভাষা আন্দোলনের ইতিহাসে আর কারো এত নিঃস্বার্থ ভূমিকা ও সীমাহীন ত্যাগ রয়েছে বলে প্রমাণ নেই। অথচ, ঘৃণ্য ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে তাঁর এই অবদানকে ঢেকে রাখার অপচেষ্টা হয়ছে।

ভাষা আন্দোলনের এই বীর কোনদিন কারো স্বীকৃতি চাননি বা স্বীকৃতির পরোয়া করেননি। তিনি কোন কিছু স্বীকৃতি লাভের জন্য করেন না বলে র্দ্ব্যথকন্ঠে জানিয়েছেন। তিনি আল্লাহর সন্তুষ্টির লক্ষ্যে যা করণীয় মনে করেছেন, তা-ই সারা জীবন করে গেছেন। ষড়যন্ত্রকারীদের চক্রান্তের কারণে ভাষা আন্দোলনের এই মহান সেনাপতি তাঁর অবদান ও ত্যাগের জন্য কোন রাষ্ট্রীয় সন্মান কখনো না পেলেও দেশপ্রেমিক সাধারণ মানুষ তাঁকে ঠিকই সন্মান এবং স্বীকৃতি দিয়েছে। ২০০০ সালের ফেব্রুয়ারী মাসে ভাষা দিবস উদযাপন জাতীয় কমিটি বর্ণাঢ্য এক অনুষ্ঠানে ভাষা সৈনিক অধ্যাপক গোলাম আযমকে সংবর্ধনা দেয় এবং একুশে পদক প্রদান করে।

এছাড়াও, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান/সংস্থা দেশপ্রেমিক এই নেতার অবদানের স্বীকৃতিসরূপ বিভিন্ন সময়ে তাঁকে সন্মাননা প্রদান করেছে। ২০১১ সালে বিরোধী এক পত্রিকার জরীপে অংশগ্রহণকারীগণের মধ্যে শতকরা ৮১.৩৪ জন অধ্যাপক গোলাম আযমকে “ভাষা সৈনিক” হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করে গোটা বিশ্বকে জানিয়ে দিয়েছে যে, কুচক্রীদের মিথ্যাচার এদেশের জনগণ কখনো বিশ্বাস করেনা। ভাষার জন্য এই মহান বীরের আত্মত্যাগ সকলের জন্য চিরদিন অনুকরণীয় হয়ে থাকবে।

আজকে ২০১৮ সালের এই ভাষার মাসে আমরা এই মহান নেতাকে গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি এবং মহান আল্লাহর কাছে তাঁর জন্য সর্বোচ্চ মর্যাদা কামনা করছি।