১৫ অক্টোবর ২০২৩, রবিবার

রাজধানীর শাপলা চত্ত্বর থেকে ঢাকা মহানগরী জামায়াতের বিশাল বিক্ষোভ মিছিল

জনগণকে সাথে নিয়ে তফসিল ঘোষণার যেকোনো ষড়যন্ত্র বানচাল করে দেওয়া হবে- নূরুল ইসলাম বুলবুল

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেছেন, জামায়াতের নেতা-কর্মীরা আজ ভোট ও ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য ঢাকার রাজপথে নেমে এসেছে। আমরা বর্তমান এই স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগ নিশ্চিতের মাধ্যমে জনগণের অধিকার আদায় করেই ঘরে ফিরব।

রোববার সকাল পৌনে ১০টায় মতিঝিলের শাপলা চত্বর থেকে ইত্তেফাকের মোড় পর্যন্ত এই কর্মসূচি পালন করে জামায়াত।

কেয়ারটেকার সরকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা, দলের আমীর ডা. শফিকুর রহমানসহ আটক নেতা-কর্মীর এবং আলেম- ওলামাদের মুক্তির দাবিতে রাজধানীতে বিশাল বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের আয়োজন করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর নূরুল ইসলাম বুলবুলের নেতৃত্বে মিছিলটি শাপলা চত্বর থেকে শুরু হয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে ইত্তেফাক মোড়ে এসে সমাবেশ করে।

কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিনের সেক্রেটারী ড.শফিকুল ইসলামে মাসুদের সঞ্চালনায় সমাবেশে নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, যদি জামায়াত ও ছাত্রশিবিরের উপর নিয়মতান্ত্রিক কর্মসূচি নিয়ন্ত্রণের নামে জুলুম নির্যাতন চালানো হয় তাহলে এখন থেকে প্রতিরোধ করা হবে। আমরা দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার দাবি নিয়ে মাঠে নেমেছি। অবিলম্বে কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে।অবিলম্বে শেখ হাসিনাকে পদত্যাগ করতে হবে। সংসদ ভেঙে দিতে হবে।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পায়তারা চলছে। জনগণকে সাথে নিয়ে তফসিল ঘোষণার যেকোনো ষড়যন্ত্র বানচাল করে দেওয়া হবে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী একটি গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক সংগঠন। জামায়াত সবসময় শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালনে বিশ্বাসী। মিথ্যা মামলায় ও রাজনৈতিক হয়রানি করার উদ্দেশ্যে জামায়াতের ইসলামীর আমীর ডাঃ শফিকুর রহমান, সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান, ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমির সেলিম উদ্দিন, সাজানো মামলায় কারাদণ্ড দেওয়া সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলামসহ সারাদেশে আটক শত শত নেতাকর্মী ও আলেম -ওলামাদের মুক্তিও দাবি করেন তিনি।

বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরার সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমির ড. অ্যাডভোকেট হেলাল উদ্দিন, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড.মোহাম্মদ রেজাউল করিম, কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরা সদস্য ও মহানগরী উত্তরের সহকারী সেক্রেটারি মাহফুজুর রহমান, নাজিমুদ্দিন মোল্লা,ডা. ফখরুদ্দিন মানিক,দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি দেলাওয়ার হোসেন ও ড. আব্দুল মান্নান। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন মহানগরী উত্তরের কর্মপরিষদ সদস্য জামাল উদ্দিন, মুহিব্বুল্লাহ, আতাউর রহমান সরকার ও নাসির উদ্দিন এবং দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য মোকাররম হোসেন, শামসুর রহমান,শ্রমিক নেতা আব্দুস সালাম, সাবেক শিবির সভাপতি মোবারক হোসেন ও হাফেজ রাশেদুল ইসলাম ও শ্রমিক নেতা হাফিজুর রহমান,ছাত্রনেতা সালাহ উদ্দীন, আসাদুজ্জামান, তাকরিম হাসান ও তৌহিদুল ইসলাম প্রমুখ।

আগামী দিনে রাজপথে লাগাতার কর্মসূচি পালনেরও ঘোষণা দিয়ে নূরুল ইসলাম বুলবুল দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের দাবি আদায়সহ সকল কর্মসূচি পালনে জীবনবাজি রেখে নেতাকর্মীদের অংশগ্রহণের জন্য আহ্বান জানান তিনি।

প্রশাসনের উদ্দেশ্যে বুলবুল বলেন, দেশ যেমন আপনাদের, দেশ আমাদেরও। আপনারা এমন পরিবেশ তৈরি করবেন না, যাতে দেশের বর্তমান স্বাভাবিক পরিস্থিতি ধ্বংস করে আরও খারাপ হয়। জনগণের বিরুদ্ধে আপনারা দাঁড়াবেন না। পুলিশ প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আমাদের বন্ধু, আমরা কাউকে শত্রু মনে করি না। কিন্তু আমরা চাই- একটা বৈধ রাজনৈতিক দল হিসেবে শান্তিপূর্ণভাবে গণতান্ত্রিক কর্মসূচি ময়দানে পালন করতে। আমাদেরকে সেই সুযোগ দিতে হবে। আগামী দিনে আমাদের কর্মসূচিতে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করতে নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

বিক্ষোভ মিছিলে আসা ও সমাবেশের শেষে ফেরার পথে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোড়ে মোড়ে সাধারন পথচারীদের হয়রানি ও গ্রেফতারের চেষ্টা চালায়।